ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসে যেসব সতর্কতা মানা জরুরি

ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাস থেকে রক্ষা পেতে বেশ কিছু সতর্কবার্তা জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর। যা ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাস কবলিত এলাকার জন্য জরুরি বলে মনে করেন আবহাওয়াবিদরা।
আবহাওয়াবিদদের মতে, দুর্যোগের সময় কোন এলাকার লোক কোন আশ্রয়ে যাবে, গবাদিপশু কোথায় থাকবে, তা আগে ঠিক করে রাখা এবং জায়গা চিনিয়ে রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাসে অপ্রত্যাশিত ক্ষতি এড়াতে আগে থেকে বাড়ি, গ্রাম, রাস্তায় ও বাঁধের ওপর গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন আবহাওয়াবিদরা।
এছাড়া যথাসম্ভব উঁচু স্থানে শক্ত করে ঘর তৈরি করা। পাকা ভিত্তির ওপর লোহার বা কাঠের পিলার এবং ফ্রেম দিয়ে তার ওপর ছাউনি দেওয়া। ছাউনিতে টিন ব্যবহার না করা ভালো। কারণ ঝড়ের সময় টিন উড়ে মানুষ ও গবাদিপশু আহত করতে পারে। তবে শূন্য দশমিক ৫ মিলিমিটার পুরুত্ববিশিষ্ট টিন ও জেহুক ব্যবহার করা যেতে পারে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর।
ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাস সতর্কতায় আরও জানানো হয়েছে, উঁচু জায়গায় টিউবওয়েল স্থাপন করা, যাতে জলোচ্ছ্বাসের লোনা ও ময়লা পানি টিউবওয়েলে ঢুকতে না পারে। জেলে নৌকা, লঞ্চ ও ট্রলারে রেডিও রাখা। সকাল, দুপুর ও বিকালে আবহাওয়ার পূর্বাভাস শোনার অভ্যাস করা উচিত বলে মনে করেন আবহাওয়াবিদরা।
এছাড়া সম্ভব হলে বাড়িতে কিছু প্রাথমিক চিকিৎসার সরঞ্জাম (ব্যান্ডেজ, ডেটল প্রভৃতি) রাখা। জলোচ্ছ্বাসের পানির প্রকোপ থেকে রক্ষার নানারকম শস্যের বীজ সংরক্ষণের ব্যবস্থা আগে থেকেই গ্রহণ করা উচিত।
বাড়িতে ও রাস্তায় নারকেল, কলাগাছ, বাঁশ, তাল, কড়ই ও অন্যান্য শক্ত গাছপালা লাগানোর পরামর্শ আবহাওয়াবিদদের। কারণ এসব গাছ ঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের বেগ কমিয়ে দেয়। ফলে মানুষ দুর্যোগের কবল থেকে বাঁচতে পারে।
নারী-পুরুষ, ছেলেমেয়ে প্রত্যেকেরই সাঁতার শেখা উচিত। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে বা অন্য আশ্রয়ে যাওয়ার সময় কী কী জরুরি জিনিস সঙ্গে নেওয়া যাবে এবং কী কী জিনিস মাটিতে পুঁতে রাখা হবে, তা ঠিক করে সেই অনুসারে প্রস্তুতি নেওয়া উচিত। আর্থিক সামর্থ্য থাকলে ঘরের মধ্যে একটি পাকা গর্ত করুন। জলোচ্ছ্বাসের আগে এই পাকা গর্তের মধ্যে অতি প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রাখা যেতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় এবং জলোচ্ছ্বাস পরিস্থিতিতে ডায়রিয়া মহামারির প্রতি সচেতন দৃষ্টি রাখতে হবে। শিশুদের ডায়রিয়া হলে কীভাবে খাবার স্যালাইন তৈরি করতে হবে, সে বিষয়ে পরিবারের সবাইকে প্রশিক্ষণ দেয়া উচিত জানিয়েছে আবহাওয়াবিদরা।
ঘূর্ণিঝড়ের মাসগুলোতে বাড়িতে মুড়ি, চিড়া, বিস্কুটজাতীয় শুকনো খাবার রাখা ভালো। নোংরা পানি কীভাবে ফিটকারি বা ফিল্টার দ্বারা খাবার ও ব্যবহারের উপযোগী করা যায়, সে বিষয়ে নারীদের এবং পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেয়া। ঘূর্ণিঝড়ের পরে বৃষ্টি হয়। বৃষ্টির পানি ধরে রাখার ব্যবস্থা করা, কারণ বৃষ্টির পানি বিশুদ্ধ। এই পানি মাটির বড় হাঁড়িতে বা ড্রামে পানি রেখে তার মুখ ভালোভাবে আটকে রাখতে হবে, যাতে পোকা-মাকড়, ময়লা-আবর্জনা ঢুকতে না পারে।
(ঢাকাটাইমস/১৯মে/কারই/জেবি)

মন্তব্য করুন