বন্ধুকে গলাকেটে হত্যা, অভিযুক্ত দম্পতি গ্রেপ্তার

বরিশাল ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ১২ জুলাই ২০২০, ২২:৪৭
অ- অ+

করোনা প্রাদুর্ভাবের কারণে আর্থিক সংকট কাটাতে বন্ধু হত্যার পর অটোরিকশা ছিনতাইয়ের পরে লাশ গুম করে পার পায়নি অভিযুক্তরা। ঘটনার ১১ দিন পর অভিযুক্ত দম্পতি গ্রেপ্তারের পর হত্যার কথা স্বীকার করেছে তারা। এছাড়াও উদ্ধার হয়েছে ছিনিয়ে নেয়া অটো রিকশা। তবে নির্মম হত্যার শিকার অটোরিকশাচালক রুম্মানের লাশ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি।

ওই দম্পত্তি হলেন- নগরীর ধান গবেষণা রোডের ভাড়াটিয়া বাসিন্দা আসলাম ও তার স্ত্রী খাদিজা। তাদের সহযোগিতাকারী আসলামের শাশুড়ি সাহিদা বেগম পলাতক রয়েছে।

রহস্য উদ্ধারকারী কোতয়ালি মডেল থানার এসআই আল আমিন জানিয়েছেন, মা-বাবা না থাকায় অটোচালক রুম্মান (২২) নগরীর সাগরদী এলাকার ধান গবেষণা সড়কের কুদ্দুস মিয়ার বাসার ভাড়াটিয়া খালা সুমি বেগমের সাথে থাকত।

খালা সুমি জানান, গত ২৯ জুন রাত ১০টার দিকে মোবাইলে ফোন করে রুমান জানায়- সে একটি বড় ট্রিপ পেয়েছে। বাকেরগঞ্জ যাবে। তিনি নিষেধ করলেও রুমান জানায়, তার বন্ধু আসলাম তার স্ত্রী ও শাশুড়ি নিয়ে যাবেন। ভাড়াও বেশি দেবে বলে জানিয়েছে। সাগরদী এলাকার ধান গবেষণা সড়কে আসলামের ভাড়া বাসা থেকে রাত ১০টায় বাকেরগঞ্জ উপজেলার ৪নং দুধল ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড চাটরার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। ওই রাত ৩টার দিকে সুমি আক্তারের সাথে একবার মুঠোফোনে কথাও হয় রুমানের। কিন্তু তারপর তার মোবাইল বন্ধ পাওয়া যায়। আর ফিরেও আসেনি রুমান। বোনের ছেলেকে খুঁজে না পাওয়ায় ৩০ জুন কোতয়ালি মডেল থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন সুমি বেগম। এর কিছুদিন পরে রুমানের ভাড়ায় চালানো অটোটির সন্ধান পান। গত ৯ জুলাই বাকেরগঞ্জের দুধল ইউনিয়নের আটরা গ্রামে শ্বশুর অটোটি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ আটক করে আসলাম ও তার স্ত্রী খাদিজাকে। ওই দিনই অটোর মালিক রিফাতের দায়ের করা মামলায় আসলাম ও খাদিজাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডের আবেদন করে পুলিশ।

এসআই আল আমিন জানান, দুই দিনের রিমান্ডে আসলাম স্বীকার করে অভাবের তাড়নায় তিন মাস আগেই পরিকল্পনা করেন প্রয়োজনে মার্ডার করে হলেও দারিদ্রতা ঘুচাতে হবে। পরিকল্পনা অনুযায়ী রুমানকে নিয়ে বাকেরগঞ্জ শ্বশুর বাড়ির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। রাত আনুমানিক ৩টার পরে দুধল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গোলাম মোর্শেদ খান উজ্জ্বলের বাড়ির পাশে অটোটি থামাতে বলেন। অটোতে তার স্ত্রী খাদিজা বেগম, শাশুড়ি সাহিদা বেগম ছিলেন। অটো থামালে ‘পানি খাওয়ার’ জন্য নিকটস্থ রাঙ্গামাটি নদীর পাড়ে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রুমানকে ল্যাং মেরে ফেলে দিয়ে কোমরে গুঁজে রাখা ধারালো চাকু দিয়ে চেপে ধরে একাই জবাই করে আসলাম। তারপর লাশটি নদীতে ফেলে দেয়। কিন্তু লাশটি ভেসে ওঠায় আসলাম নদীতে নেমে পেট কেটে লাশটি ভাসিয়ে দেয়। ফজরের আজানের দিকে অটোর কাছে ফিরে আসে আসলাম। এসে জানায় তিনি রুমানকে খুন করে নদীতে ভাসিয়ে দিয়ে এসেছে। তারপর অটোটি নিয়ে শ্বশুর বাড়িতে চলে যায় সে।

পুলিশ বলছে, একা হত্যাকাণ্ড সংঘটিত করতে পারে না। এতে অন্যান্যরাও সহায়তা করতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। পুরো বিষয়টি জানতে সকল তথ্য-উপাত্ত খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

কোতয়ালি মডেল থানার ওসি নুরুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় নতুন করে হত্যা মামলা করা হবে। মামলার প্রস্তুতি চলছে।

তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আল আমিন জানিয়েছেন, নিহত রুমানের লাশ এখনো উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি। লাশ উদ্ধারে অভিযান চলছে।

(ঢাকাটাইমস/১২জুলাই/এলএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
এনবিআরের অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি ব্যবসায়ীদের
দেশে গুঁড়া দুধ আমদানি করা লজ্জার বিষয়: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা হাসপাতালে আবারও করোনা পরীক্ষা শুরু
আজও অবরুদ্ধ এনবিআর, শাটডাউন কর্মসূচি চলছে
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা