গাজায় ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় নিহত ১৮, আরও হতাহতের আশঙ্কা

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকাটাইমস
  প্রকাশিত : ২৮ জুন ২০২৫, ১১:৫৬| আপডেট : ২৮ জুন ২০২৫, ১২:৪০
অ- অ+

গাজা উপত্যকার মধ্যাঞ্চলীয় দেইর আল-বালাহ শহরের একটি জনবহুল বাজারে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় অন্তত ১৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। হামাসপন্থি পুলিশের উপস্থিতির সময় এই হামলা চালানো হয় বলে জানিয়েছেন প্রত্যক্ষদর্শী ও চিকিৎসকরা।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাধারণ পোশাকে ও মুখোশ পরে থাকা হামাসের পুলিশ সদস্যরা বাজারে অতিরিক্ত দামে পণ্য বিক্রি এবং ত্রাণ লুটপাট ঠেকাতে কাজ করছিলেন। এমন সময় হঠাৎ করেই বাজার এলাকায় ড্রোন থেকে হামলা চালানো হয়।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে একে “পাবলিক অর্ডার রক্ষাকারী পুলিশের ওপর বর্বরোচিত অপরাধ” বলে অভিহিত করেছে।

ঘটনার পর ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, বাজারের ভেতরে রক্তাক্ত মরদেহ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে আছে, আতঙ্কিত ক্রেতারা চিৎকার করছেন এবং অ্যাম্বুলেন্স এসে আহতদের সরিয়ে নিচ্ছে।

দেইর আল-বালাহর আল-আকসা হাসপাতালের এক চিকিৎসক জানিয়েছেন, হাসপাতালে ১৮টি মরদেহ আনা হয়েছে। তাদের মধ্যে কতজন পুলিশ সদস্য তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

এই হামলার সময় গাজায় খাদ্যের জন্য মানুষের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা ও সংঘাত চলছে। বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ত্রাণ সরবরাহ কেন্দ্রগুলোতে গুলির ঘটনা এখন প্রায় নিয়মিত।

এদিকে মার্কিন-সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন’-এর বিতরণ কেন্দ্রে সহিংসতা ও বিতর্ক বাড়ছে। বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্র এই ফাউন্ডেশনকে আরও ৩০ মিলিয়ন ডলার অনুদান দেয়। তবে একাধিক আন্তর্জাতিক সংস্থা এই প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে মানবিক নীতিমালা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে।

ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু দাবি করেছেন, “হামাস মানবিক সহায়তা নিজেদের দখলে নিচ্ছে।” সেনাবাহিনীকে তিনি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে একটি ‘কর্মপরিকল্পনা’ তৈরির নির্দেশ দিয়েছেন।

হামাস এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছে, “ত্রাণ সরবরাহ পরিচালনা করছে একটি উপজাতীয় কমিটি, যার সঙ্গে হামাসের কোনো সম্পর্ক নেই।”

বাজারে ড্রোন হামলার আগে মধ্যরাত থেকে ইসরায়েলি হামলায় গাজাজুড়ে আরও অন্তত ১৪ জন নিহত হয়েছেন।

তিনজন ওয়াদি গাজা ব্রিজের পাশে ত্রাণের জন্য অপেক্ষায় থাকাকালে ড্রোন গুলিতে নিহত হন।

গাজার পশ্চিমাঞ্চলের একটি স্কুলে আশ্রয় নেওয়া পাঁচজন এবং খান ইউনিসের আল-মাওয়াসি এলাকায় একটি তাঁবুতে থাকা একই পরিবারের আরও পাঁচজন নিহত হন।

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে, তারা ঘটনাগুলো তদন্ত করে দেখছে এবং নির্দিষ্ট স্থান ও সময় সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করছে।

উল্লেখ্য, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের চমকপ্রদ হামলার পর থেকে গাজায় ইসরায়েলি সামরিক অভিযান চলছে।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত গাজায় নিহতের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৫৬ হাজার ২৫৯ জনে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক নারী ও শিশু রয়েছে।

এ অবস্থায় জাতিসংঘ ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ বিভিন্ন মানবিক সংস্থা অবিলম্বে যুদ্ধবিরতি এবং খাদ্য-চিকিৎসা সহায়তা নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/২৮ জুন/আরজেড)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
যে কারণে কামাল ইবনে ইউসুফকন্যা নায়াবকে ফরিদপুর-৩ আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করলেন তারেক রহমান
‎পিরোজপুরে ইউপি সদস্য ও ভাবিকে কুপিয়ে হত্যা
এনবিআরের অচলাবস্থা নিরসনে সরকারের হস্তক্ষেপ দাবি ব্যবসায়ীদের
দেশে গুঁড়া দুধ আমদানি করা লজ্জার বিষয়: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা