বাড়ি ফিরেছেন পরীমনি, ‘মম’ কি গিয়েছিলেন দেখতে?

মাদক মামলায় এখন জামিনে মুক্ত ঢাকাই ছবির আলোচিত নায়িকা পরীমনি। ছাড়া পাওয়ার পর কারাগারের দুয়ার থেকে সোজা এসে ওঠেন বনানীতে। নিজ বাসায়। কারা ফটকে পরীমনির স্বজনরা উপস্থিত থাকলেও দেখা যায়নি অভিনয় জগতে তার কোনো শুভাকাঙ্ক্ষিকে। চেনামুখের কেউ ছিলেন না পরীর মুক্তির সময়।
এমনকি পরীমনির ‘মম’ বলে খ্যাত নাট্যকার ও চলচ্চিত্র পরিচালক চয়নিকা চৌধুরীকেও দেখা যায়নি। বনানীর বাসাতেও তিনি পরীর সঙ্গে দেখা করতে গেছেন বলেও জানা যায়নি। কথা কী হয়েছে ফোনে? জানা যায়নি তাও।
জানতে চেয়ে একাধিকবার কল করা হয়েছিল চয়নিকা চৌধুরীকে। কলটি ধরেননি তিনি। কথা বলার চেষ্টা হয়েছে পরীমনির সঙ্গেও। পাওয়া যায়নি তাকেও।
পরীমনি গ্রেপ্তারের পর তার বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গত ৬ আগস্ট সন্ধ্যায় চয়নিকাকে তুলে নিয়ে যায় গোয়েন্দা পুলিশ। সেদিন দুপুর থেকেই তার ফোন এবং ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিঅ্যাকটিভ পাওয়া যায়। যদিও আটকের কয়েক ঘণ্টা বাদে ছেড়ে দেওয়া হয় জনপ্রিয় এই নির্মাতাকে।
মাদক মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার প্রায় এক মাস পর জামিনে মুক্তি পেয়েছেন ঢালিউডের আলোচিত-সমালোচিত চিত্রনায়িকা পরীমনি। এর মধ্যে ১৯ দিন গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে কাটিয়েছেন তিনি। ছাড়া পেয়েছেন বুধবার সকালে। তার আগে মঙ্গলবার ঢাকার দায়রা জজ আদালত পরীমনিকে জামিন দেন। এ খবর শুনে মঙ্গলবার বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কারাফটকে ভিড় করেন উৎসুক জনতা ও সাংবাদিকরা।
কিন্তু মঙ্গলবার কারাগার থেকে ছাড়া পাননি পরীমনি। কারণ তার জামিনের কাগজপত্র কারাগারে পৌঁছাতে রাত ১০টা বেজে গিয়েছিল। তাই কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় পরীমনিকে কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। এ সময় নায়িকাকে আনতে কারাফটকের সামনে উপস্থিত ছিলেন তার খালু মো. জসিমউদ্দিন এবং আইনজীবী নীলাঞ্জনা রিফাত সুরভী।
তবে সেখানে দেখা মেলেনি চলচ্চিত্রপাড়ায় পরীমনির অতি ঘনিষ্ঠ এবং ‘মম’ হিসেবে পরিচিত নির্মাতা চয়নিকা চৌধুরীর। কারামুক্ত হওয়ার পর দুপুর ১টার দিকে নায়িকা তার বনানীর বাসায় পৌঁছান। সেখানে পরীমনিকে দেখতে গিয়েছিলেন কিনা, জানা যায়নি তাও।
নাট্যনির্মাতা হিসেবে ব্যাপক খ্যাতি পাওয়া চয়নিকা গত বছর তার ক্যারিয়ারের প্রথম চলচ্চিত্র ‘বিশ্বসুন্দরী’ নির্মাণ করেন। সেখানে মূল ভূমিকায় অভিনয় করান পরীমনিকে। গত বছরের ১১ ডিসেম্বর সিনেমা হলে মুক্তি পায় ‘বিশ্বসুন্দরী’। তার আগে একটি টেলিভিশন চ্যানেলের সাক্ষাৎকারে একসঙ্গে হাজির হন চয়নিকা ও পরীমনি। সেখানে তারা একে অন্যকে মা-মেয়ে বলে পরিচয় দেন।
পরীমনি ওই সাক্ষাৎকারে জানান, তার মা নেই। তিনি মা পেয়েছেন। চয়নিকার সন্তানদের সঙ্গেও তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বলে জানান পরী। অন্যদিকে চয়নিকা বলেন, ‘পরীমনি ছোটবেলায় মা হারিয়েছে। ও আমাকে মম বলে ডাকে। আমিও ওকে মেয়ের মতো স্নেহ করি।’
তার নজিরও পাওয়া যায় গত ১৩ জুন রাতে, যখন কিনা ৯ জুনে ঘটে যাওয়া সাভারের বোটক্লাবের ঘটনা পরীমনি তার বনানীর বাসায় সংবাদ সম্মেলন করে জানাচ্ছিলেন এবং কাঁদছিলেন। সেদিন সংবাদ সম্মেলনের পুরোটা সময়জুড়ে পরীমনিকে বাম হাত দিয়ে জাপটে ধরে বসে ছিলেন তার ‘মম’ চয়নিকা এবং বার বার ‘মেয়ের’ গায়ে হাত বুলিয়ে সাহস ও সান্তনা দিচ্ছিলেন। এছাড়া তিনি পরীমনিকে যৌন নির্যাতন ও মারধরের বিচারও দাবি করেন।
এর পরদিন ৯ জুনের ঘটনা সম্পর্কে জানতে পরীমনিকে ডিবি কার্যালয়ে ডেকে পাঠানো হয়। সেখানেও পরীমনির সঙ্গে ছিলেন চয়নিকা।
কিন্তু গত ৪ আগস্ট পরীমনিকে যখন তার বনানীর বাসা থেকে বিপুল মাদকসহ র্যা ব আটক করে, তার কিছু সময় আগে ফেসবুক লাইভে এসে নায়িকা আধ ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে সকলের কাছে সাহায্য চান, দ্রুত তার বাসায় যেতে বলেন। দীপু নামে একজনকে ‘মামা’ ডেকে তার মাধ্যমে কয়েকজনকে ফোনও করান। কিন্তু পরীর সেই বিপদের মুহূর্তে ছুটে যাননি তার কথিত মম।
সে সময় এ বিষয়ে জানতে চয়নিকার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ঢাকাটাইমসকে জানান, ‘পরীর আটক হওয়ার ঘটনাটি আপনারা যেমন টিভিতে, লাইভে দেখেছেন, আমিও দেখেছি।’ পরীমনির বাসায় যাবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে ‘বিশ্বসুন্দরী’র নির্মাতা চয়নিকা বলেছিলেন, ‘না আমি সেখানে যাবো না। এটা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিষয়। তারা যা ভালো বুঝবে তাই করবে।’
(ঢাকাটাইমস/২সেপ্টেম্বর/এএইচ/এইচএফ)

মন্তব্য করুন