গড়াই নদীতে অবৈধ বালু উত্তোলন, হুমকির মুখে নদীপাড়ের মানুষ

ফরিদপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১৬:২৭

ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার ডুমাইন ইউনিয়নের গড়াই নদীর বিভিন্ন স্থান থেকে অবৈধভাবে ড্রেজার বসিয়ে লুট করা হচ্ছে বালু। গত দুই মাস ধরে ধারাবাহিক ভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এতে একদিনে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে অন্যদিকে নদী পাড়ের মানুষগুলো রয়েছে হুমকির মুখে।

স্থানীয়দের আশংকা বর্ষা মৌসুমে এর প্রভাবে (বালু উত্তোলনের) ভাঙন বাড়বে নদীতে। ক্ষতিগ্রস্থ হবে স্থানীয়রা। এ বিষয়ে স্থানীয় প্রশাসনের কোন তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়নি।

সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়, ডুমাইন ইউনিয়নের ডুমাইন ঘাট ও নিসচিন্তপুর এলাকায় ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলার কাজ করছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান তপনের নেতৃত্বে । সেখানে মাঝ নদীতে বসানো ড্রেজার মেশিন দিয়ে প্রতিদিন সকাল তেকে চালু তোলা হয়। ডুমাইন ঘাটের ড্রেজার মেশিনের চালক জানালেন, দিনে ৮/১০ হাজার ফুট বালু তোলা যায়। তবে মাঝে মধ্যে বন্ধ রাখতে হয় লোক জন আসে এই জন্য।

স্থানীয় বাসিন্দা গৃহীনি সনিয়া পারভিন, রেহেলা বেগম সহ বেশ কয়েকজন অভিযোগ করে বলেন, আমরা গরিব মানুষ ভিটা ছাড়া কোন জমিজমা নেই, যেভাবে বালু তোলা হচ্ছে তাকে বর্ষা মৌসুমে নদী ভাঙন বাড়বে। ক্ষতিগ্রস্থ হবে নদী পাড়ের মানুষ। তারা জানালেন, সরকার বালু উত্তোলন বন্ধের প্রদক্ষেপ নেওয়ার কথা।

এই বিষয়ে ডুমানই ইউপির চেয়ারম্যান শাহ আসাদুজ্জামান তপন জানান, নদী ভাঙনের ফলে আমাদের ইউনিয়নের জমি পাশ্ববর্তী মাগুরা জেলার সীমায় চলে গেছে। ওই এলাকার মানুষগুলো সেখানে ফসল ফলিয়ে নিয়ে যায়, আমরা কিছু করতে পারিনা। তাই চেষ্ঠা করছি কিছু বালু তোলার। এছাড়াও এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ হচ্ছে সেখানে বালুর প্রয়োজন, আমরা বালু সেখানে সরবরাহ করছি। তবে মাঝে মধ্যে স্থানীয় প্রশাসন তৎপর হলে মেশিন বন্ধ রাখা হয়।

এছাড়াও মধুমতি-গড়াই নদীতে জেগে ওঠা চরের জমি খাস খতিয়ানভুক্ত হলেও ফি বছর জেগে ওঠা এই জমিতে সাধারণত লাগোয়া জমির কৃষকেরাই বিভিন্ন ফসল আবাদ করে থাকেন। তবে এমএনজেড ব্রিকস রায়জাদাপুরের খেয়াঘাটের প্রায় কয়েকশো বর্গমিটার বিস্তৃত নদী পাড়ের জমি থেকে মাটি কেটে নিচ্ছে। এতে স্থানীয়দের খাদ্যশষ্য উৎপাদনের সুযোগ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।

কৃষকরা জানান, ভাটার মালিকেরা অর্থবিত্তের মালিক ও প্রভাবশালী। তাদের কেউ কিছু বলার সাহস রাখেনা। এভাবে মাটি কেটে নেয়ায় আশেপাশের ফসলি জমি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেখানে নদী তীরে ভাঙ্গনের আশঙ্কাও রয়েছে।

এব্যাপারে এমএনজেড ব্রিকসের মালিকদের একজন মিলন বিশ্বাসের কাছে জানতে চাইলে তিনি প্রথমে অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করে বলেন, আমাদের ইট ভাটায় সব মাটি বাইরে থেকে আনা। নদীর কোন মাটি নেই। পরে রাতের বেলায় বেকু দিয়ে মাটি কাটেন কেনো? এ প্রশ্ন করা হলে তিনি দাবি করেন, নদীর পাড়ের ব্যক্তি মালিকানা জমি থেকে তারা মাটি কাটছেন। তবে এসব জমি থেকে মাটি কাটার কোন অনুমতি তাদের নেই বলে স্বীকার করেন।

মধুখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশিকুর রহমান চৌধুরী এই ব্যাপারে বলেন, প্রতিদিন মাটি কাটা বা বালু উত্তোলনের বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে মাটি কাটার অভিযোগে এমএনজেড ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্টে জরিমানা করা হয়েছিল। তিনি বলেন, আবারো মাটি কেটা বা উত্তোলন করা হলে প্রয়োজনের আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২৮ফেব্রুয়ারি/এআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :