অবরোধে রাস্তায় গণপরিবহন কম, দুর্ভোগে নারী যাত্রীরা

সাইফুল্লাহ আমান, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ১৭:৫২ | প্রকাশিত : ৩১ অক্টোবর ২০২৩, ০৯:৪৮

আজ সকাল থেকে শুরু হওয়া বিএনপি ও জামায়াতের তিন দিনের অবরোধে রাস্তায় গণপরিবহন কম। ব্যক্তিগত গাড়ি নেই বললেই চলে। রাস্তায় অনেক সময় ধরে দাঁড়িয়ে থেকেও মিলছে না গন্তব্যে পৌঁছানোর বাহন। দু-একটি বাস যদি আসেও তাতে উঠতে পারেন না নারী ও শিশু যাত্রীরা। সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন নারী যাত্রীরা।

মঙ্গলবার সকালে গাজীপুর চৌরাস্তার চিত্র এটি। অবরোধের সঙ্গে আরও ভোগান্তি বাড়িয়েছে কয়েকদিন ধরে চলমান গার্মেন্টস শ্রমিকদের আন্দোলন। গতকাল সোমবার একজন গার্মেন্টস কর্মী মারা যাওয়ার ঘটনায় আজ আরও উত্তপ্ত হয়েছে আন্দোলনের পরিস্থিতি।

গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ি ও কাশিমপুর এলাকায় প্রচুর গার্মেন্টস থাকায় সেদিকে আন্দোলনের তোপে কোনো গাড়িই শহরে ঢুকতে পারছে না। বাইপাস রোড দিয়ে দু-একটি গাড়ি আসছে, তাতে তিল ধারণের জায়গা নেই। এতে করে অফিসগামী সাধারণ মানুষ পড়েছেন ভোগান্তিতে।

সাইয়েদা সামিয়া নামের একজন যাত্রীর সঙ্গে কথা হয় ঢাকা টাইমসের। তিনি রাজধানীর উত্তরার একটি আইটি ফার্মের জ্যেষ্ঠ প্রকৌশলী। সামিয়া বলেন, ‘প্রায় এক ঘণ্টা হয়ে গেল এখানে এসে দাঁড়িয়ে আছি। এর মধ্যে মাত্র দুটি বাস এসেছে। সেখানে উঠতে চেষ্টাও করিনি। এত মানুষ, পুরুষ মানুষ বাদুরঝোলা হয়ে ছিল। মেয়ে মানুষের দাঁড়াবার জায়গাও ছিল না। একটু ফাঁকা কোনো গাড়ি আসবে সে অপেক্ষায় আছি। আসছে না। কিন্তু অফিসে তো যেতে হবে। কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয় কে জানে?’

রাস্তায় পর্যাপ্ত বাস না থাকায় মালামাল পরিবহনের ট্রাক, মিনি পিকআপেও অনেক অফিসগামী মানুষকে উঠে বসতে দেখা গেছে। ভাড়াও বাসের তুলনায় বেশি নিচ্ছে এসব পরিবহনের ড্রাইভার ও হেলপাররা। রিকশা ভাড়া স্বাভাবিক সময়ের চার থেকে ছয় গুণ চাচ্ছেন রিকশাওয়ালারা। চৌরাস্তা থেকে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত সিএনজিতে ৪০০ টাকা চেয়েছেন এক ড্রাইভার। তা নিয়ে তুমুল হট্টগোলের দেখাও মিলল রাস্তায়।

এদিকে রাজধানীর প্রবেশমুখ আব্দুল্লাহপুরেও প্রচণ্ড ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। সে তুলনায় বাস নেই বললেই চলে। এখান থেকে চলাচল করা তুরাগ, বিআরটিসি, প্রজাপতি, পরিস্থানসহ অন্যান্য পরিবহন আগের তুলনায় অর্ধেকেরও কম চলছে বলে জানান যাত্রীরা।

একই কথা বলেন পরিবহন সংশ্লিষ্টরাও। মিরপুর হয়ে গাবতলিমুখী প্রজাপতি পরিবহনের কন্ডাক্টর মো. রাজন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আজকে তো রাস্তা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ি নাই। অন্যগুলাও নাই। শুধু আমাগোরই না। অন্য বাসও পাইবেন না রাস্তায়। আজকে অনেক মালিক বাস দেয় নাই। এহন আমগো না নাইমা তো উপায় নাই। রোজ কামের লোক আমরা। নামলে পয়সা আছে, না নামলে পেটে খাওন নাই।’

আব্দুল্লাহপুরে উত্তরবঙ্গ, ফেনী, চট্টগ্রাম, সিলেটে চলাচল করার আন্তঃনগর বাস কাউন্টার রয়েছে। এসবের প্রায় অর্ধেকই বন্ধ দেখা যায় সকাল ৮টা ৪৫ মিনিটে। নাবিল পরিবহনের সুজন নামের এক কর্মী বলেন, ‘এসব পরিবহনের কাউন্টার দিনরাত খোলা থাকে অন্যান্য সময়। আজ যাত্রী নেই দূরপাল্লার। তাই অফিস বন্ধ রেখেছে বেশিরভাগ। তাছাড়া সকালে হামলার ভয় বেশি থাকে। তাই হয়তো সকালে বন্ধ রেখেছে। বেলা বাড়লে খুলবে সম্ভবত। তবে আজকে অন্যান্য দিনের চেয়ে বাস কম চলবে।’

অবরোধ চলাকালে যানজটবিহীন রাস্তা পাওয়া গেছে। গাজীপুর থেকে মাত্র ৩৭ মিনিটে বিমানবন্দর পৌঁছে যাওয়া যাচ্ছে। গতকালও এ পথে সময় লেগেছে আড়াই ঘণ্টার বেশি।

(ঢাকাটাইমস/৩১অক্টোবর/এসএ/এফএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

জাতীয় এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :