যে কারণে কামাল ইবনে ইউসুফকন্যা নায়াবকে ফরিদপুর-৩ আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত করলেন তারেক রহমান

ফরিদপুর-৩ সদর আসনে তিনিই বিএনপির প্রার্থী, তিনিই ধানের শীষের কাণ্ডারী। বিষয়টি অনেকটা নিশ্চিতই ছিল। তবু নায়াব ইউসুফকে যখন খোদ দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান নিজ মুখে সুখবরটি দিলেন তখন সেটির গুরুত্ব আরও আলাদা।
জানা গেছে, সম্প্রতি দলের নেতৃবৃন্দকে নিয়ে করা এক স্কাইপ বৈঠকে তারেক রহমান ফরিদপুর-৩ আসনে বিএনপির হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্যে চৌধুরী নায়াব ইবনে ইউসুফকে সর্বাত্মক প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দেন। নির্বাচনী এলাকায় সংগঠন গোছানো, আরও শক্তিশালী করাসহ যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করতে তারেক রহমানের একগুচ্ছ নির্দেশনা নায়াব ইউসুফকে আরও উজ্জীবিত করেছে বলে বিএনপির একাধিক সূত্র ঢাকাটাইমসকে নিশ্চিত করেছে।
বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী ও ৫ বারের এমপি, অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং সব মহলে গ্রহণযোগ্য চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফের বড় মেয়ে নায়াব ইউসুফ। আগে থেকেই রাজনীতিতে ছিলেন নায়াব ইউসুফ। তবে প্রয়াত পিতার মৃত্যুর পরে সার্বক্ষণিক সক্রিয় রাজনীতিতে এসে তৃণমূলের সর্বস্তরের মানুষের সাথে অনায়াসে মিশে গিয়ে নির্বাচনী এলাকায় যে এক ইতিবাচক ভাবমূর্তি গড়ে তুলেছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার । দাদা ইউসুফ আলী চৌধুরী ওরফে মোহন মিয়া সাবেক মন্ত্রী, রাজনীতিক ও জমিদার হিসেবে যেইভাবে জনহিতকর কাজ করে মানুষের হৃদয় জয় করেছেন ঠিক সেসব কাজকেই আরও একধাপ এগিয়ে নেন তার বাবা চৌধুরী কামাল ইবনে ইউসুফ।
তাই তো আজও ফরিদপুরের সর্বস্তরের মানুষের মুখে মুখে মোহন মিয়া আর কামাল ইউসুফের ভালো কাজের প্রশংসা। ঠিক একই কায়দায় মানুষের কল্যাণের মাধ্যমে সবার কাছে পৌঁছে গেছেন চৌধুরী নায়াব ইউসুফ। নিরহংকার, সদা হাসিমুখ, বিনয়ী, সাহসী এবং উদার মনের অধিকারী নায়াব ইউসুফ একজন সার্বক্ষণিক রাজনীতিবিদ। তার সাথে দেখা করতে বা কথা বলতে পারেন যে কেউ, যা অন্য অনেক এমপি প্রার্থী থেকে তাকে আলাদা করে চেনার আরও এক সহজ উপায়। জমিদারি রক্ত তার শরীরে কিন্তু আচরণে একজন সাধারণের চেয়েও সাধারণ নায়াব ইউসুফ সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি আর মাদকের বিরুদ্ধে বলিষ্ঠ কণ্ঠস্বর হিসেবে ইতিমধ্যেই ফরিদপুরের সব মহলের প্রশংসা কুড়িয়েছেন।
দলের মধ্যে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থাকলেও কখনো দলীয় প্রতিযোগীকে নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্য দেন না নায়াব ইউসুফ। এই রাজনৈতিক শিষ্টাচার নায়াব ইউসুফকে আরও আলাদা করে চিনতে সাহায্য করে। জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি দলের ঢাকা মহানগর উত্তরের সভানেত্রী তিনি। নিজ নির্বাচনী এলাকার নেতাকর্মীদের পাশাপাশি ভোটারদের মাঝে পর্যাপ্ত সময় দিয়ে ঢাকায় একই সাথে দুই দুইটি বড় সাংগঠনিক দায়িত্ব পালনের ঝুঁকি কেন নিচ্ছেন কামাল ইউসুফ কন্যা? ফরিদপুর-৩ আসনের বিএনপির প্রার্থীর সাংগঠনিক কারিশমা নিজ নির্বাচনী এলাকার মানুষের কি আরও বেশি প্রয়োজন নয়?
ঐতিহাসিকভাবে ফরিদপুর সদর আসন আসলে বিএনপিরই আসন। প্রতিযোগিতামূলক সব নির্বাচনেই এখানে বিএনপির জয় জয়কার হয়েছে এবং বলতে গেলে মোহন মিয়া-কামাল ইউসুফ পরিবারের জয় হয়েছে। শুধু কামাল ইবনে ইউসুফই যে ৫ বার এমপি হয়েছেন তাই নয়, তার বাবাও ছিলেন মন্ত্রী, অবিভক্ত ফরিদপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, আইন প্রণেতা। কামাল ইবনে ইউসুফের এক চাচা চৌধুরী আবদুল্লাহ জহিরউদ্দিন ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা যেমন ছিলেন তেমনি পাকিস্তান সরকারের মন্ত্রী ছিলেন । আরেক চাচা চৌধুরী এনায়েত হোসেন ছিলেন পাকিস্তান জাতীয় পরিষদের সদস্য।
বংশ পরম্পরায় এই যে মানুষের সাথে কাজ করা, জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনকল্যাণ করতে থাকার সেই ধারাবাহিকতা নিশ্চয়ই নায়াব ইউসুফ বজায় রাখবেন? ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে রাজনীতি করতে গিয়েও ২০১৯ সালে ঠিকই আওয়ামী লীগের রোষানলে পড়েছেন এবং কারা নির্যাতনের শিকার হয়েছেন কামাল ইউসুফকন্যা।
পৌর মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হওয়া যখন নিশ্চিত তখন তার বিজয় ভোট ডাকাতির মাধ্যমে ছিনিয়ে নিয়েছে আওয়ামী লীগ ও প্রশাসনের লোকজন। আগামী সংসদ নির্বাচনে নায়াব ইউসুফকে বিএনপির প্রার্থী হিসেবে এমপি নির্বাচিত করে ফরিদপুরের সাধারণ জনগণ নিশ্চয়ই আওয়ামী লীগের ভোট ডাকাতি ও দুঃশাসনের মধুর প্রতিশোধ নেবেন।

মন্তব্য করুন