অচল ক্যাবলে সচল যন্ত্রপাতি, বেশিরভাগ এলাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন 

জয়পুরহাট প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১১:১৭

জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলায় অবস্থিত বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনন্স কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) অফিসের যন্ত্রপাতি সচল থাকলেও অচল ক্যাবল। একারণে বেশিরভাগ এলাকায় টেলিফোনে সংযোগ বিচ্ছিন্ন আছে দীর্ঘদিন যাবৎ। ভবনটির চারপাশে অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ। দেখাশোনার দায়িত্ব আছেন দুজন লাইনম্যান।

জরাজীর্ণ ভবনে সেবামূলক প্রতিষ্ঠানটি নানা সমস্যা ও সংকটে জর্জরিত। এ কারণে সেবা বঞ্চিত হচ্ছেন গ্রাহকরা।

উপজেলা বিটিসিএল অফিস সূত্র জানা যায়, ২০০৩ সালে এ উপজেলায় বিটিসিএলকে ডিজিটালে রূপান্তরিত করা হয়। এ অফিসটি প্রথমে ৩৮৪টি লাইন সংযোগ দেওয়া হয়। পরে বকেয়া বিল ও গ্রাহকের অনীহার কারণে সেটি কমিয়ে প্রায় ২০০টি লাইন চালু ছিলো। কিন্তু ক্যাবলগুলো ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ায় টেলিফোন সংযোগের সব কটিই প্রায় বিচ্ছিন্ন অবস্থায় পড়ে আছে অনেক দিন ধরে। তবে পৌরশহরে ও সরকারি অফিসে ৪০/৫০টির মতো সংযোগ চালু আছে।

উপজেলা বিটিসিএল অফিসের লাইনম্যান লাইনম্যান মো. জালাল উদ্দীন বলেন, ২০০৩ সালে ৩৮৪টি টেলিফোনে সংযোগ দেওয়ার মধ্য দিয়ে ডিজিটালে চালু হয়। এরপর ক্যাবলগুলো ক্ষতিগ্রস্ত, বিল বকেয়া ও গ্রাহকদের অনীহার কারণে তা কমে ২০০ গ্রাহককে সেবা দিয়ে আসছিল অফিসটি। এরপর প্রায় দেড় বছর আগে জয়পুরহাট-হিলি সড়কের নতুন করে কাজ করার সময় আমাদের ক্যাবলগুলো নষ্ট হয়ে গেছে। এ কারণে বেশিরভাগ এলাকায় কর্যাক্রম বন্ধ প্রায় দেড় বছর থেকে। তবে ফাইবারের মাধ্যমে উপজেলায় ৫০/৬০ টির মতো চালু আছে।

পৌরসভার এলাকার কয়েকজন গ্রাহক জানান, দীর্ঘদিন থেকে তাদের টেলিফোন লাইন অচল হয়ে পড়ে রয়েছে। বহুবার জানানোর পরও মেরামত করা হচ্ছে না। সরকারি-বেসরকারি অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সমূহে টেলিফোনের ব্যবহার নেই বললেই চলে। মুঠো ফোন চালুর পর থেকে টেলিফোনের ব্যবহার কমতে কমতে শূন্যের কোঠায় এসে দাঁড়িয়েছে।

উপজেলা বিটিসিএলের অফিসে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, অফিসটির প্রধান গেটে ছিটকিনি লাগিয়ে অফিসের লাইনম্যান জালাল উদ্দীন দুজন শ্রমিক দিয়ে একটি ছোট শুকনো মরা গাছ কেটে লাকড়ি বানাচ্ছেন। গাছের বিষয়ে প্রশ্ন করতেই তিনি বলেন বাড়ি থেকে গাছ নিয়ে এসে এখানে কাটছেন। দ্বিতল ভবনটি বেশ জরাজীর্ণ, অফিস চত্বরে নোংরা ও অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ। তিনি ব্যতীত অন্য কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী চোখে পড়লো না। এছাড়া অফিস চত্বরে উত্তর পার্শ্বে প্রায় দুই বিঘা সম্পত্তিতে ধানের চারা রোপণ করেছেন লাইনম্যান জালাল উদ্দীন। অফিসের পূর্ব পার্শ্বে কিছু জমিতে বোরো বীজতলাও প্রস্তুত। সেখানে পাওয়ারট্রিলারও দেখা গেছে। অধিক সময় ধরে বিচ্ছিন্ন রয়েছে বেশিরভাগ এলাকায় টেলিযোগাযোগ। উপজেলার বিটিসিএল অফিসের মেশিনারিজ যন্ত্রপাতি, সুইচ রুমটি, দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না করায় অফিস ভবনটিও জরাজীর্ণ আকার ধারণ করেছে। অফিসের সামনে অভিযোগ গ্রহণের জন্য কোনো ‘অভিযোগ বক্স’ চোখে পড়লো না।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, জরাজীর্ণ ভবনটিতে একবারও রঙ ও চুনকামের কাজ করতে দেখা যায়নি এই ভবনটিতে। কোনো ধরনের সংস্কার কাজ চোখে পড়েনি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে এখানে বেশি একটা আসতে দেখা যায় না। যন্ত্রপাতি, সরঞ্জাম নষ্ট অবস্থাতেই পড়ে আছে দীর্ঘদিন ধরে তবুও মেরামত করা হয় না।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পাঁচবিবির বিটিসিএল অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন, মাটির নিচ দিয়ে ছড়ানো সংযোগ ক্যাবল তার রাস্তা মেরামত ও পৌরসভার ড্রেন নির্মাণের ফলে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি সচল থাকলেও ক্যাবল অচল হওয়ায় বেশিরভাগ এলাকায় সংযোগ বিচ্ছিন্ন আছে। বর্তমানে প্রায় অর্ধশতাধিক সংযোগ চালু আছে। এ বিষয়ে উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষের কাছে জানানো হয়েছে।

(ঢাকাটাইমস/৭ফেব্রুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :