ডায়াবেটিসের চিকিৎসা আবিষ্কারের দাবি চীনের

নিরাময় অযোগ্য ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসা আবিষ্কারের দাবি করেছে চীনের একদল গবেষক। গবেষকরা বলছেন, বিশ্বের সব প্রান্তে লাখ লাখ ডায়াবেটিস রোগীর চিকিৎসার জন্য সেল থেরাপি ব্যবহার করে নিরাময় সম্ভব।
সেল ডিসকভারি জার্নালে প্রকাশিত এই গবেষণায় টাইপ-২ ডায়াবেটিস আছে এমন ৫৯ বছর বয়সি এক ব্যক্তির সফল চিকিৎসার বিবরণ দেওয়া হয়েছে। সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে।
গবেষণায় বলা হয়েছে, সেই ব্যক্তি ২৫ বছর ধরে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত এবং প্রতিদিন ইনসুলিন ইনজেকশন নিতেন। ২০২১ সালের জুলাই মাসে প্রথম তার ওপর এই গবেষণা পরিচালনা করা হয়; যেখানে তার একটি কোষ প্রতিস্থাপন শুরু হয়। এই পদ্ধতিতে অগ্ন্যাশয়ে ইনসুলিন-উৎপাদনকারী আইলেট কোষগুলোর প্রতিলিপি ল্যাবে তৈরি করা হয়। তারপর সেই কোষগুলো রোগীর মধ্যে প্রতিস্থাপন করা হয়।
সংবাদমাধ্যম সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চিকিৎসাটি অসাধারণভাবে সফল প্রমাণিত হয়েছে। এগারো সপ্তাহের মধ্যে রোগীর বাহ্যিক ইনসুলিনের প্রয়োজন হয়নি। এরপর ২০২২ সাল থেকে রোগীর ডায়াবেটিস ধীরে ধীরে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে কোনো প্রকার ওষুধ ছাড়া। ফলোআপ পরীক্ষাগুলোতে রোগীর অগ্ন্যাশয় আইলেট কোষে একটি পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া নিশ্চিত করা হয় যার জন্য আগামী ৩৩ মাস তার কোনো ওষুধের প্রয়োজন হবে না।
যদিও এই গবেষণাটি এখন পর্যন্ত একজন রোগীর ওপরই পরিচালনা করা হয়েছে কিন্তু বিশেষজ্ঞরা ডায়াবেটিসের জন্য সেল থেরাপিকে একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হিসাবে দেখছেন।
গবেষণার বিষয়ে ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন গবেষক অধ্যাপক টিমোথি কিফার বলেন, ‘ডায়াবেটিস রোগের চিকিৎসার ক্ষেত্রে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। তবে চিকিৎসা হিসাবে এই পদ্ধতি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করার আগে এর কার্যকারিতা এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আরও বড় মাপের ট্রায়াল প্রয়োজন।’
ইন্টারন্যাশনাল ডায়াবেটিস ফেডারেশন (আইডিএফ) বলছে, ‘২০২১ সাল নাগাদ, ২০ থেকে ৭৯ বছর বয়সি আনুমানিক ৫৩৭ মিলিয়ন প্রাপ্তবয়স্কদের ইতিমধ্যেই ডায়াবেটিস ছিল। এই সংখ্যাটি ২০৩০ সালের মধ্যে ৬৪৩ মিলিয়নে এবং ২০৪৫ সালের মধ্যে ৭৮৩ মিলিয়নে পৌঁছাবে। এটি ২০৪৫ সাল নাগাদ বিশ্বব্যাপী ৪ জনের মধ্যে প্রতি ১ জন প্রাপ্তবয়স্কের ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যা ৪৬ শতাংশ বৃদ্ধি পাবে।
এই নতুন চিকিৎসা পদ্ধতি ডায়াবেটিসের ক্রমবর্ধমান বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ এবং কার্যকর প্রতিরোধ ও ব্যবস্থাপনার জন্য একটি নতুন আশা।
(ঢাকাটাইমস/০১জুন/কেএ/এসআইএস)

মন্তব্য করুন