২৮ অক্টোবরের হত্যাকাণ্ড ছিল দেশ ও জাতিসত্তাবিরোধী ষড়যন্ত্র: সেলিম উদ্দিন

২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবরের পৈশাচিক হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে আওয়ামী- বাকশালীরা তাদের হত্যার রাজনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করে দেশের স্বাধীনতা- সার্বভৌমত্ব ও জাতিসত্তার মর্মমূলে আঘাত করেছিল বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
শনিবার রাজধানীর মিরপুরস্থ রূপনগর কমিউনিটি সেন্টারে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তরের মিরপুর উত্তর থানা শাখা আয়োজিত এক সহযোগী সদস্য সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সেলিম উদ্দিন বলেন, ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর রাজপথে নারকীয় হত্যাকাণ্ড নিছক কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনা বা হত্যাকাণ্ড ছিল না বরং তা ছিল আমাদের দেশ ও জাতিসত্তাবিরোধী গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমেই আমরা আমাদের দেশের ওপর কার্যত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলি। ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয় একটি আধিপত্যবাদী ও সাম্রাজ্যবাদী শক্তির সেবাদাস সরকার। ফলে দেশে ফ্যাসীবাদী ও মাফিয়াতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, সাড়ে ১৫ বছরের বাকশালী সরকারের হত্যা, সন্ত্রাস ও নৈরাজ্যের মাধ্যমে দেশকে বধ্যভূমিতে পরিণত করা হয়। ক্ষমতা গ্রহণের মাত্র দেড় মাসের মাথায় বিডিআর বিদ্রোহের নামে ৫৭ জন দেশপ্রেমিক সাহসী, মেধাবী ও চৌকস সেনা অফিসারকে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকাণ্ডে সরাসরি শেখ হাসিনা ও তার পরিবারের সদস্যরা জড়িত। তারা কথিত বিচারের নামে প্রসহন করে জাতীয় নেতাদের একের পর এক হত্যা করে দেশের মানচিত্রকে রক্তাক্ত ও কলুষিত করে। ৫ মে হেফাজতের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পৈশাচিক নিধনযজ্ঞ চালানো হয়। কিন্তু তাদের শেষ রক্ষা হয়নি বরং ছাত্র-জনতার যুগপৎ আন্দোলনের মাধ্যমে তাদেরকে লজ্জাজনকভাবে ক্ষমতা থেকে বিদায় নিতে হয়েছে। শহীদ আবু সাইদ ও মুগ্ধ সহ প্রায় দেড় হাজার ছাত্র-শ্রমিক জনতার জীবনদান, অসংখ্য মানুষের পঙ্গুত্ব বরণ, হাজার হাজার মানুষের ত্যাগ ও কোরবানির মাধ্যমে আমরা নতুন বাংলাদেশ পেয়েছি। তাই এই বিজয়কে অর্থবহ করতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি দেশ বিরোধী ষড়যন্ত্র মোকাবেলায় জামায়াতের সকল স্তরের জনশক্তিকে সব সময় সতর্ক থাকার আহ্বান জানান।
জামায়াতের এই নেতা আরও বলেন, বিগত ১৭ বছরে ফ্যাসিবাদীরা রাষ্ট্রের সমস্ত প্রতিষ্ঠান বিশেষ করে বিচার বিভাগ, ব্যাংক-বীমাসহ অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, জনপ্রশাসন ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করে দিয়েছে। আওয়ামী-বাকশালী শাসনামলে অসংখ্য হত্যাকাণ্ড সহ যত অন্যায়-অবিচার সংগঠিত হয়েছে বাংলার মানুষ একদিন এর ন্যায়সংগত বিচার করবে-ইনশাআল্লাহ। নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণে ছাত্র-জনতার দাবি ছিল একটা বৈষম্যহীন ইনসাফপূর্ণ রাষ্ট্র গড়ার।
জামায়াতে ইসলামী দেশকে একটি ইসলামী কল্যাণ রাষ্ট্রে পরিণত করার পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে উল্লেখ করে, স্বপ্নের সেই বাংলাদেশ গড়ার জন্য জামায়াতের সর্বস্তরের জনশক্তিকে কুরআন-হাদিসের আলোকে জীবন গড়ার পাশাপাশি অসহায়, সমস্যাগ্রস্ত, নিপীড়িত মানুষের পাশে থেকে তাদেরকে সার্বিকভাবে সাহায্য-সহযোগিতা করার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
থানা আমির মনিরুল ইসলাম মৃধার সভাপতিত্বে এবং সেক্রেটারি রফিকুল ইসলাম রিমনের সঞ্চালনায় এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য, ঢাকা মহানগর উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ও মিরপুর জোন পরিচালক মাহফুজুর রহমান। বক্তব্য রাখেন শাহ আলী থানা আমির ডা মাঈন উদ্দিন ও থানা নায়েবে আমির বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ এম এম লিয়াকত আলী প্রমুখ।
কাফরুল দক্ষিণ থানায় কর্মী সমাবেশ
কাফরুল দক্ষিণ থানার উদ্যোগে রাজধানীর একটি মিলনায়তনে কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। তালতলা পূর্ব ওয়ার্ডের সভাপতি ও থানা কর্মপরিষদ সদস্য সালাউদ্দিন শাহিনের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক এবং বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য ও কাফরুল দক্ষিণ থানা আমির অধ্যাপক আনোয়ারুল করিম, শেরেবাংলা নগর উত্তর থানা আমির আব্দুল আউয়াল আজম ও কাফরুল দক্ষিণ থানা সেক্রেটারি মু. আবু নাহিদ। উপস্থিত ছিলেন জামায়াত নেতা জাকির হোসেন, রুহুল আমীন, মাওলানা এনামুল হক, ও আলমগীর হোসেন প্রমুখ।
ফার্মগেটে জামায়াতের কর্মী সমাবেশ
কেন্দ্র ঘোষিত চলমান বায়তুলমাল ও সাংগঠনিক পক্ষ উপলক্ষে শেরেবাংলা নগর দক্ষিণ থানার পূর্ব রাজাবাজার ও ফার্মগেট ওয়ার্ডের কর্মী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। থানা কর্মপরিষদ সদস্য ও ফার্মগেট ওয়ার্ড সভাপতি আব্দুজ জাওয়াদের সভাপতিত্বে ও পূর্ব রাজাবাজার ওয়ার্ডের সভাপতি এম কে নাদিমের পরিচালনায় সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগরী প্রচার ও মিডিয়া সেক্রেটারি এবং হাতিরঝিল অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মু.আতাউর রহমান সরকার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শেরেবাংলা নগর থানার সাবেক আমীর অধ্যাপক আ জ ম কামাল উদ্দীন, ঢাকা মহানগরী মজলিসে শুরা সদস্য ও শেরেবাংলা নগর দক্ষিণ থানা আমীর মাওলানা আমিনুল ইসলাম, থানা সেক্রেটারি আবু সাঈদ মন্ডল, থানা শূরা ও কর্মপরিষদ সদস্য জামিল বিন হোসাইন। বক্তব্য রাখেন পেশাজীবি ওয়ার্ড সভাপতি শাহ মজুদ উদ্দিন, জীবন্ত শহীদ আলমগীর মিয়া, জামায়াত নেতা শেখ ফরিদ, হাবিবুর রহমান, শফিকুর রহমান, আল হিজবুল বাহার, এস এম সাইফুল্লাহ স্বপন, ইঞ্জিনিয়ার আব্দুল আজিজ, বিশিষ্ট চিকিৎসক ডা. মো. ইয়াহিয়া ও বিশিষ্ট ব্যাংকার জহির উদ্দিন বাবর প্রমূখ।
(ঢাকাটাইমস/২৬অক্টোবর/জেবি/এমআর)

মন্তব্য করুন