লালমনিরহাটে ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ৩ টাকা দরে, লোকসানে চাষি

লালমনিরহাট প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ১৬ জানুয়ারি ২০২৫, ১৭:৪২
অ- অ+

উত্তরবঙ্গের সবজি ভাণ্ডার বলে পরিচিত লালমনিরহাট। এ জেলায় বাহারি সবজির মধ্যে হচ্ছে ফুলকপি ও বাঁধাকপি। সেই ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম কমায় এর কদর কমেছে। লালমনিরহাটে শীতের শুরুতে ফুলকপির দাম থাকলেও বাজারে বেশি সরবরাহের কারণে দাম কমেছে। এখন ফুলকপি ৩ থেকে ৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এতে লোকসানের মুখে পড়েছেন চাষিরা।

এই ফুলকপি ও বাঁধাকপি জেলার চাহিদায় মিটিয়ে চলে যাচ্ছে রাজধানী, বগুড়াসহ বিভিন্ন জেলায়।

খুচরা বাজারে সাধারণত পিস হিসেবে বিক্রি হয়। তবে পাইকারির হিসাব আলাদা। সে হিসাবে লালমনিরহাটের বাজারে বিক্রি হওয়া প্রতি কেজি ফুলকপির দাম পড়ছে সর্বনিম্ন ৩ থেকে ৪ টাকা। এরপরেও অনেক সবজি চাষি ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করে ক্রেতার দেখা পাচ্ছেন না।

মৌসুমের শেষের দিকে এসে চাহিদার তুলনায় সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় বাজারে এর দাম পড়ে গেছে বলে মনে করছেন সবজি চাষিরা।

চাষিরা বলছেন, দুই সপ্তাহ আগেও প্রতিমণ ফুলকপির দাম ছিল ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকার মধ্যে। গত এক সপ্তাহে সেই দাম কমতে কমতে এখন ১২০ থেকে ১৫০ টাকায় এসেছে।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার মোগলহাট ইউনিয়নের সবজি চাষি মকবুল হোসেন জানান, বুধবার ভোরে স্থানীয় বাজারে ৮ মণ ফুলকপি নিয়ে এসেছিলেন সকাল ১১টায় সবগুলো কপি তিনি বিক্রি করেন মাত্র ১ হাজার টাকায়। একই কথা জানালেন আবু বকর সিদ্দিক। এতে তাদের পরিবহন ও হাট খরচ হয়েছে ২৫০ টাকা। একই এলাকার সবজি চাষি আব্দুল বাসেদ বাজারে এনেছিলেন পাঁচ মণ কপি। এই প্রতিবেদকের সামনেই তিনি এক মণ ফুলকপি (জাত ভেদে) বিক্রি করলেন ১২০ ও ১৫০ টাকায়।

আরেক সবজি চাষি মাইদুল ইসলাম জানালেন, প্রতি পিস কপি উৎপাদনে তার খরচ হয়েছে ৮ থেকে ১০ টাকা। বিক্রি করতে গিয়ে এখন তার দাম পড়ছে ৩ থেকে ৪ টাকারও কম।

তারা জানান, এক বিঘা জমিতে ফুলকপি চাষে খরচ হয় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা। এক মাস আগে যারা কপি তুলে বিক্রি করেছেন তারা প্রতি বিঘায় ৫০ থেকে ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ করেছেন। এখন প্রতি বিঘায় ২০ থেকে ২২ হাজার টাকার বেশি লোকসান হচ্ছে।

অন্যান্য সবজি চাষিরা জানান, ফুলকপি উৎপাদনে সবচেয়ে বেশি খরচ হয় সারের পেছনে। ডিলাররা সার মজুত করে দাম বাড়িয়ে দেয়। সেখানেই অনেক টাকা বেরিয়ে যায়। কিন্তু ডিলারদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে দেখা যায় না।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বড়বাড়ি, দুরারকুটি, গোশালা বাজারসড় বিভিন্ন হাটে বাজারে ঘুরে দেখা যায়, ফুলকপির মতো শীতের অন্য সব সবজির দামও কমে এসেছে।

লালমনিরহাট কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে জেলায় এক হাজার ১৮৩ হেক্টর ফুলকপি, বাঁধাকপি ৭৬৮ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। সম্ভাব্য ৩৩ হাজার ১২৪ মেট্রিক টন ফুলকপি ও ২২ হাজার ৮০ মেট্রিক টন বাঁধাকপি সম্ভাব্য উৎপাদনের কথা বলা হয়েছে।

কৃষি বিভাগ আরো জানিয়েছেন, চলতি মৌসুমে উৎপাদন ও সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় সবজির দাম নিচে নেমে এসেছে।

(ঢাকা টাইমস/১৬জানুয়ারি/এসএ)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
বিশ্ব জাকের মঞ্জিলের বার্ষিক ওরস শুরু শনিবার
আমিরাত সফর শেষে দেশের পথে প্রধান উপদেষ্টা 
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির প্রাইজমানি ঘোষণা, কত পাবে চ্যাম্পিয়ন দল
সিরাজদিখান থানায় হামলা: ৬০ জনকে আসামি করে মামলা, গ্রেফতার ২ 
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা