সমু চৌধুরীকে পরিবারের কাছে হস্তান্তর, বিশ্রামে থাকার পরামর্শ চিকিৎসকের

জনপ্রিয় অভিনেতা সমু চৌধুরীকে তার পরিবারের জিম্মায় দিয়েছে পুলিশ। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হওয়া ছবি ও নানা গুজবের পর তাকে উদ্ধার করে পাগলা থানায় নেওয়া হয়। চিকিৎসক জানিয়েছেন, সমু চৌধুরী শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ আছেন। তবে কিছুদিন তাকে বিশ্রামে থাকতে হবে।
অভিনয় শিল্পী সংঘের সদস্যদের উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে সমু চৌধুরীকে তার খালাতো ভাইয়ের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ফেরদৌস আলম।
তিনি বলেন, শেষ রাতে সমু চৌধুরীকে তার খালাতো ভাই অপুর কাছে হস্তান্তর করেছি। এ সময় অভিনয় শিল্পী সংঘের কয়েকজন সঙ্গে ছিলেন।
এর আগে বুধবার রাত ৯টার দিকে ঢাকা থেকে একজন পাঠাও মোটরসাইকেল রাইডারের মাধ্যমে উপজেলার পাগলা থানাধীন মশাখালী ইউনিয়নে অবস্থিত মুখী শাহ্ মিসকিনের মাজারে আসেন সমু চৌধুরী।
পরদিন বৃহস্পতিবার বিকেলে মাজারের পাশে একটি গাছের নিচে গামছা পরে শুয়ে থাকা সমু চৌধুরীর ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়। ভিডিওতে প্রথমে খালি গায়ে, গামছা পরা অবস্থায় তাকে দেখা যায়। পরে অবশ্য টাউজার ও গেঞ্জি পরা অবস্থায় স্থানীয় লোকজন ও পুলিশের সামনে তাকে কথা বলতে শোনা যায়।
অস্বাভাবিক অবস্থায় উদ্ধারের পর অনেকে তাকে মানসিক ভারসাম্যহীন বলে ধারণা করেন।
এদিকে সমু চৌধুরীকে এমন অবস্থায় দেখতে পেয়ে ভিড় জমায় বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ। বিকাল গড়িয়ে সন্ধ্যা হলেও পুলিশের অনুরোধে থানায় যাননি সমু চৌধুরী। সন্ধ্যার পর লোকজন আরও বাড়তে থাকলে পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের পাশাপাশি মাজার প্রাঙ্গণে সেনাবাহিনী অবস্থান নেয়।
এ সময় সমু চৌধুরী সবার সঙ্গে কথা বলেন এবং জানান, তিনি সুস্থ আছেন। সারারাত মাজারে ধ্যানে ছিলেন। বৃহস্পতিবার ভোরে একা একা হাঁটতে হাঁটতে ব্রহ্মপুত্র নদে গোসল করেন। গোসল করে গামছা পরে গাছতলায় শুয়ে ছিলেন। এরমধ্যে কে বা কারা ছবি তুলে ফেসবুকে ছড়িয়ে দেয়।
পরবর্তীতে তার সঙ্গে দেখা করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এন এম আবদুল্লাহ-আল-মামুন। মানসিক অবস্থার বিষয়ে নিশ্চিত হতে সেখানে উপস্থিত হন উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মোহাম্মদ জামাল উদ্দিন।
চিকিৎসক দিনভর আলোচিত সমু চৌধুরীর সঙ্গে দীর্ঘক্ষণ কথা বলে নানা বিষয় জানার চেষ্টা করেন। সমু চৌধুরী জানান, তিনি এর আগেও এই মাজারে আরও ৩–৪ বার এসেছিলেন এবং মুখী শাহ্ মিসকিনের ভক্ত। তিনি অন্যান্য কথাবার্তাও স্বাভাবিকভাবে বলেন।
সবকিছু বিবেচনায় চিকিৎসক রাতে জানান, সমু চৌধুরী শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ আছেন। তবে তাকে কিছুদিন বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দেন।
নব্বইয়ের দশকে টেলিভিশন নাটকে দর্শক মাতিয়েছিলেন এই মঞ্চ অভিনেতা। একসময় অভিমান করে অভিনয় ছেড়ে গ্রামের বাড়ি যশোরে চলে যান। পরে শিল্পী ঐক্যজোটের মাধ্যমে আবারও অভিনয়ে ফিরে আসেন। নাটকের পাশাপাশি চলচ্চিত্রেও অভিনয় করেছেন সমু চৌধুরী।
১৯৯৫ সালে আমজাদ হোসেন পরিচালিত ‘আদরের সন্তান’ ছবির মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে অভিষেক হয় তার। এরপর ‘দোলন চাঁপা’, ‘শত জনমের প্রেম’, ‘মায়ের অধিকার’, ‘দেশ দরদী’, ‘মরণ নিয়ে খেলা’, ‘প্রেমের নাম বেদনা’, ‘যাবি কই’, ‘সুন্দরী বধূ’সহ বেশ কিছু ছবিতে অভিনয় করেন।
(ঢাকাটাইমস/১৩ জুন/এলএম)

মন্তব্য করুন