ঝালকাঠিতে আ.লীগ ঠিকাদারের বিলের তদ্বির, দুই সমন্বয়ক আটক

ঝালকাঠিতে আওয়ামী লীগের ঠিকাদারের বিলের তদ্বির করতে এসে জনতার হাতে আটক হয়েছে বরিশালের দুই সমন্বয়ক।
বৃহস্পতিবার বিকালে ঝালকাঠি এলজিইডিতে এ ঘটনা ঘটে।
এলজিইডি অফিস সূত্র ও উপস্থিত ঠিকাদাররা জানান, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা ঝালকাঠি-২ আসনের সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমুর কম্পিউটার অপারেট শাওন খানের ৩ কোটির টাকার ব্রিজ ও সড়কে কাজের চূড়ান্ত বিল তুলতে গত দুই মাস ধরে বরিশালের দুই সমন্বয়ক নলছিটি উপজেলা প্রকৌশলীকে চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। এক পর্যায়ে তারা উপজেলা প্রকৌশলীকে বিল ছাড়ানোর জন্য ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। রাজি না হওয়ায় তার বিরুদ্ধে বিভন্ন জায়গায় দপ্তরে অনিয়মের অভিযোগ দেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার দুপুর ২টায় তারা ঝালকাঠি এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলীর কাছে বিল না দেয়ার কৈফিয়ত চান। এসময় সেখানে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে উপস্থিত বিএনপি পন্থি ঠিকাদাররা ২ সমন্বয়ককে আমির হোসেন আমুর স্টাফ শাওনের বিল ছাড়াতে আসার অপরাধে তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। থানায় পুলিশ হেফাজতে থাকা দুই সমন্বক সাংবাদিকদের জানান, নলছিটি উপজেলা প্রকৌশলী ইকবাল কবীরের ঘুষ ও দুর্নীতির বিষয়ে আমরা নির্বাহী প্রকৌশলীকে অবহিত করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু এসময় উপস্থিত ঠিকাদাররা মব সৃষ্টি করে আমাদের পুলিশে ধরিয়ে দেয়।
আটককৃতরা হলেন, সদ্য বিলুপ্ত হওয় বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্য সচিব ও আইন বিভাগের তৃত্বীয় বর্ষের ছাত্র সিরাজুল ইসলাম (২৪) ও বরিশাল গ্লোবাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ম সেমিস্টারের ছাত্র মো. মেহেদী(২৫)। সিরাজুল ইসলাম ঝালকাঠি সদর উপজেলার নবগ্রাম ইউনিয়নের দোগলচিড়া গ্রামের নুরুল বাশারের ছেলে এবং মেহেদী বরিশাল শহরের কাকলীর মোড়ের মো. কালামের ছেলে।
ঝালকাঠি সদর থানার ওসি মনিরুজ্জামান বলেন, এলজিইডিতে দুই বৈসম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ককে চাঁদাবাজির ঘটনায় আটক হয়েছে এমন খবর পেয়ে পুলিশ পাঠিয়ে তাদেরকে দুজনকে থানা হেফাজতে নিয়ে আসি। এলজিইডি কর্তৃপক্ষ জানিয়ে এক সমন্বয়করা তাদের অনৈতিকভাবে হয়রানি করে আসছে। আজ একটি কাজের বিল তুলে নিতে নির্বাহী প্রকৌশলী অফিসে গিয়েছিল। এ নিয়ে ঠিকাদারদের সাথে জামেলা হলে পুলিশ তাদের থানায় নিয়ে আসে। তাদের বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ আসলে আমি মামলা নিব।
নলছিটি উপজেলা প্রকৌশলী ইকবাল কবীর জানান, বরিশালের দুই সমন্বয়ক আমির হোসেন আমুর স্টাফ শাওনের পক্ষে ৩ কোটি টাকার একটি কাজের চূড়ান্ত বিল ছাড়িয়ে নিতে আসে। কাজ শেষ না হওয়ায় এবং যথাযথ প্রক্রিয়া বিল না করায় প্রকৃত ঠিকদারকে নিয়ে আসতে বলি। প্রকৃত ঠিকাদারকে না নিয়ে তারা কিছু ছেলেপেলে নিয়ে এসে বারবার চাপ প্রয়োগ করে আসছিলেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা, নলছিটি উপজেলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সাংবাদিকদের, স্থানীয় ছাত্রদল ও ছাত্র সম্বয়কদের জানিয়েছি। ঠিকাদার ছাড়া বিল কিভাবে দিব? এক পর্যায়ে তারা এ বিল ছাড়ানোর জন্য ঘুষ দেওয়ার প্রস্তাব দেন। আমি রাজি না হওয়ায় আমার বিরুদ্ধে বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করে হয়রানি করে আসছে। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আলাপ করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।(ঢাকা টাইমস/৩১জুলাই/এসএ)

মন্তব্য করুন