মাগুরায় পুলিশের কাছ থেকে ছাত্রলীগ নেতাকে ছিনিয়ে নিল ছাত্রদল-স্বেচ্ছাসেবক দল নেতারা

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সদস্য আকাশ বিশ্বাসকে আটকের পর ছিনিয়ে নিয়েছে ছাত্রদল-স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতারা। রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এই ঘটনা ঘটে।

এর আগে শনিবার বিকালে আকাশকে আটক করে থানা হেফাজতে নেওয়া হয়। আজ তাকে আদালতে নিয়ে (হাজির) যাচ্ছিল পুলিশ। পথে পুলিশের ওপর হামলা করে তাকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়। এই ঘটনায় পুলিশ সদস্যরা আহত হয়েছেন।

জানা গেছে, ৪ আগস্ট মাগুরায় ছাত্র-জনতার আন্দোলন চলাকালে ছাত্রলীগ ক্যাডার আকাশ বিশ্বাস তাদের ওপর সশস্ত্র হামলা করে। পরবর্তীতে এই ঘটনায় মামলা হলে এজাহারনামীয় আসামি করা হয় তাকে। এরপরেই পুলিশ তাকে আটক করেছিল।

পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের নাম পেয়েছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনী। এদের মধ্যে রয়েছে— মহম্মদপুর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি আরিফুজ্জামান মিল্টন, মহম্মদপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম-আহবায়ক ইউসুফ ও রাজিব, আমিনুর রহমান কলেজ ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ইব্রাহীম সর্দার শাকিল এবং একই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছাত্রদলের সহ-সভাপতি রিপন। তারা বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির একজন নেতার অনুসারী বলে জানা গেছে।

খুলনা রেঞ্জের ডিআইজি মো. রেজাউল হক ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। আর আমি অসুস্থ থাকায় বর্তমানে ঢাকায় অবস্থান করছি।’

খুলনা রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি (ক্রাইম ম্যানেজমেন্ট) মো. বেলায়েত হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমাদের কাছে এমন কোনো খবর আসেনি। আমি বিস্তারিত এখনই খোঁজ নিচ্ছি।’

মহম্মদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রহমান ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে আমি সিনিয়র স্যারদের সঙ্গে বৈঠকে আছি। আকাশ বিশ্বাসকে ধরার চেষ্টা করছি।’

পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় কোনো মামলা হবে কি-না জানতে চাইলে ওসি বলেন, ‘বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।’

ঘটনার বিস্তারিত জানতে চেয়ে মাগুরার পুলিশ সুপার (এসপি) মিনা মাহমুদা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) এ.এস.এম মুক্তারুজ্জামান এবং শালিখা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. মোস্তাফিজুর রহমানকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তারা সাড়া দেননি। এমনকি খুদে বার্তা পাঠানো হলেও তারা চুপ থেকেছেন।

এদিকে ৪ আগস্ট বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমনে মিছিল করে আওয়ামী লীগ। সেই মিছিলে হলুদ গেঞ্জি পরা ছিল নিষিদ্ধ সংগঠনের সদস্য ছাত্রলীগ নেতা আকাশ বিশ্বাস। সে সময়ের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনার দিন আন্দোলনরতদের ওপর হামলা চালায় আকাশ সহ তার সহযোগীরা। গতকাল তাকে গ্রেপ্তারের পর আজ তাকে মাগুরা আনার পথে শাকিল, ইউসুফের নেতৃত্বে মিল্টনদের বাড়ির সামনে থেকে তাকে ছিনিয়ে নেওয়া হয়।

উপজেলা বিএনপির একাধিক নেতা ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ছাত্রলীগ নেতাকে ছিনিয়ে নেওয়ার ঘটনায় বিব্রত বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। নিষিদ্ধ সংগঠনটি গেল ১৬ বছর আমাদের ব্যাপক নির্যাতন করেছে। আজ তাকে ছাড়াতে পুলিশের ওপর হামলা হলো। যা নিন্দনীয়। যারা এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত তাদেরকে দলীয় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।’

(ঢাকাটাইমস/১৫জুন/এসএস)