আমেরিকার কাছে রয়েছে ভয়ংকর পরমাণু বোমা, মুহূর্তেই উড়ে যাবে ৬ লাখ মানুষ!

ইরান-ইসরায়েল সংঘাত ক্রমেই ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্যে রক্তাক্ত এ যুদ্ধ পরিস্থিতিতে একে একে ইরানের মিত্র দেশগুলো প্রকাশ্যে নিজেদের অবস্থান জানাতে শুরু করেছে। ইরান-ইসরায়েল, রাশিয়া-ইউক্রেন, হামাস হুথি-ইসরায়েল যুদ্ধের উত্তেজনার মধ্যেই আমেরিকা তৈরি করেছে ভয়ংকর নতুন পরমাণু বোমা—‘বি৬১-১৩’। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের মতে, এই বোমার একটিমাত্র বিস্ফোরণেই ৬ লাখেরও বেশি মানুষ মুহূর্তে উড়ে যেতে পারে। এই বোমার শক্তি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে হিরোশিমায় ফেলা ‘লিটল বয়’-এর চেয়ে ২৪ গুণ বেশি।
আমেরিকার প্রতিরক্ষা সদর দপ্তর পেন্টাগনের তরফে এখনো সরকারিভাবে বোমাটির পরীক্ষার তারিখ জানানো না হলেও বিভিন্ন পশ্চিমা সংবাদমাধ্যম বলছে—এটি হবে মানবজাতির ইতিহাসে সবচেয়ে বিধ্বংসী পারমাণবিক অস্ত্রগুলোর একটি।
বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, ‘বি৬১-১৩’-এর বিস্ফোরণ ঘটলে কেন্দ্রস্থল থেকে ৮০০ মিটার ব্যাসার্ধের মধ্যে প্রাণহানি হবে অবশ্যম্ভাবী। ওই অঞ্চলের সব বাসিন্দা মুহূর্তেই মারা যাবেন। বিস্ফোরণের বাইরে থাকা দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত এলাকা ভস্মীভূত হবে, ধ্বংস হবে সব স্থাপনা।
তেজস্ক্রিয়তার কারণে বিস্ফোরণস্থলের বাইরে বেঁচে যাওয়ার সম্ভাবনাও ক্ষীণ। যারা বাঁচবেন, তারাও আক্রান্ত হবেন ক্যানসার বা জিনগত বিকলাঙ্গতার মতো রোগে।
বিশ্লেষকদের মতে, ধ্বংসাত্মক এই পরমাণু বোমা তৈরির পিছনে একাধিক কারণ রয়েছে—
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে ইরান যদি পরমাণু বোমা তৈরি করে ফেলে, তবে মার্কিন মিত্র ইসরায়েল হুমকির মুখে পড়বে।
হামাস, হিজবুল্লাহ ও হুথিদের সঙ্গে একাধিক ফ্রন্টে যুদ্ধরত ইসরায়েলকে রক্ষা করতে প্রতিরক্ষায় সক্রিয় আমেরিকা।
রাশিয়া ও চীনের মতো শক্তিধর পরমাণু শক্তিধর দেশগুলোর গোপন কর্মসূচি নিয়ে পেন্টাগনের দুশ্চিন্তা।
সম্প্রতি প্রকাশিত ‘নিউক্লিয়ার পশ্চার রিভিউ’ রিপোর্টে পেন্টাগন জানিয়েছে, রাশিয়া ও চীন গোপনে এমন পরমাণু অস্ত্র তৈরি করছে, যা সম্মিলিতভাবে আমেরিকাকে বিশ্ব মানচিত্র থেকে মুছে দিতে পারে।
বর্তমানে রাশিয়ার কাছে রয়েছে সবচেয়ে বেশি পারমাণবিক অস্ত্র—প্রায় ৫,৮৮৯টি। আমেরিকার হাতে রয়েছে ৫,২২৪টি পারমাণবিক বোমা ও ক্ষেপণাস্ত্র। এত অস্ত্র থাকা সত্ত্বেও কেন নতুন বোমা?
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ‘আত্মরক্ষার কৌশল’ হিসেবেই এই পদক্ষেপ নিচ্ছে হোয়াইট হাউস। কিন্তু বাস্তবে এটি পশ্চিম এশিয়ায় যুদ্ধের আগুনে ঘি ঢালার শামিল।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর থেকেই ইসরায়েলের প্রতি দৃশ্যমান সমর্থন দেখিয়ে আসছে আমেরিকা। ভূমধ্যসাগরে মোতায়েন করেছে বিমানবাহী রণতরী ‘ইউএসএস জেরাল্ড আর. ফোর্ড’। লোহিত সাগরে হুথিদের রুখতে রয়েছে আরও চারটি যুদ্ধজাহাজ। সিরিয়ায় মার্কিন ঘাঁটিতে হামলার জবাবে ‘বি-২ স্পিরিট’ স্টেলথ বোমারু বিমান দিয়ে পাল্টা হামলাও চালিয়েছে পেন্টাগন।
‘বি৬১-১৩’ যদি ব্যবহার করা হয়, তবে এর ধ্বংসের ক্ষমতা হিরোশিমা ও নাগাসাকির ভয়াবহতাকেও হার মানাবে।
বিশ্ব রাজনীতিতে প্রশ্ন উঠেছে—
এটা কি কেবল আত্মরক্ষার প্রস্তুতি, নাকি আরও বড় যুদ্ধের আগাম বার্তা?
নিজে পরমাণু বোমা তৈরি করেও কি আমেরিকার পক্ষে আফগানিস্তান, ইরাক, ইরানকে ‘পরমাণু সন্ত্রাসের’ অজুহাতে আক্রমণ করা ন্যায্য ছিল?
বিশ্ববাসীর আশঙ্কা—পরমাণু যুদ্ধের ভয়াল ছায়া যেন আবার পৃথিবীকে গ্রাস না করে।
(ঢাকাটাইমস/২১ জুন/আরজেড)

মন্তব্য করুন