জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়: আজ সিন্ডিকেট সভায় ২০-২৫ কর্মকর্তার ভাগ্যে বাধ্যতামূলক অবসর

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়মিত সিন্ডিকেট সভা আজ শনিবার রাতে রাজধানীর ধানমন্ডিতে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, আজকের সভায় ২০-২৫ জন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র বলছে, বিশেষ করে যেসব কর্মকর্তা পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রশাসনিক পদে থেকে রাজনৈতিক আনুগত্য দেখিয়েছেন কিংবা সরাসরি দলীয় কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিলেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
রাজনৈতিক প্রভাবে নানা সুবিধা ভোগকারী এসব কর্মকর্তার চাকরির বয়স ২৫ বছর পূর্ণ হওয়ায় তাদের বাধ্যতামূলক অবসরে কোনো বাধা নেই।
অবসরের তালিকায় সহকারী পরিচালক, উপ-পরিচালকসহ বিভিন্ন প্রশাসনিক পর্যায়ের কর্মকর্তা রয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, নতুন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রশাসনে স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় যেন আর কোনো রাজনৈতিক প্রভাবের জায়গা না হয়, সে জন্য এই কঠোর সিদ্ধান্তের পথে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
আগেও অবসরে পাঠানো হয় ১৮ কর্মকর্তাকে
এর আগেও দুই দফায় ১৮ জন কর্মকর্তাকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট। সর্বশেষ চলতি বছরের ২২ এপ্রিল অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেট সভায় ২৫ বছর পূর্তি হওয়ায় ৯ জন কর্মকর্তাকে এবং গত বছরের ৩ নভেম্বর অনুষ্ঠিত ২৬৩তম সিন্ডিকেট সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বার্থে প্রয়োজন বিবেচনায় আরও ৯ জন কর্মকর্তাকে একইভাবে অবসর দেওয়া হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম আমানুল্লাহ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত হওয়ার পর থেকেই প্রশাসন ঢেলে সাজানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন। দায়িত্ব গ্রহণ করে তিনি ঘোষণা দেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে সব ধরনের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করা হবে। এখানে দক্ষতা, নৈতিকতা ও সততার ভিত্তিতেই কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল্যায়ন হবে।
এরই মধ্যে উপাচার্য প্রশাসনিক কাঠামোয় শৃঙ্খলা ফেরানো ও দলীয় প্রভাবমুক্ত একটি পরিবেশ গঠনের ওপর গুরুত্ব দিয়ে কাজ অনেকটা এগিয়ে নিয়েছেন।
শিক্ষা বিশ্লেষকরা বলছেন, দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক প্রভাবের কারণে দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি ব্যাহত হয়েছে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের এই উদ্যোগকে তারা ‘দ্রুত বাস্তবায়নযোগ্য প্রশাসনিক সংস্কার’ হিসেবে দেখছেন।
(ঢাকাটাইমস/২১জুন/এসএস/মোআ)

মন্তব্য করুন