নরসিংদীতে লম্বা বেগুনের কেজি ১২০ টাকা!
লম্বা বেগুন উৎপাদনে সমৃদ্ধ জেলা হিসেবে পরিচিত নরসিংদীতে এখন তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জেলা শহরসহ বিভিন্ন এলাকার বাজারগুলোতে বেগুনের আমদানি একেবারেই কমে গেছে। মূল্য বেড়ে অস্বাভাবিক হারে। এক কেজি মানসম্পন্ন লম্বা বেগুন ১২০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যেসব বেগুন একেবারেই পোকরা, কুকড়া ও বাকা-তেরা সেসব বেগুনও বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে।
ময়মনসিংহ এলাকার যেসব ছোট ছোট আঙ্গুল সাইজের বেগুনের বাজার মূল্য ছিল কেজিপ্রতি ১০ থেকে ১৫ টাকা, সেসব বেগুনও এখন ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কোনো কোনো বাজারে ভর্তা খাবার বেগুনও পাওয়া যাচ্ছে না।
বেগুন চাষিরা জানান, নরসিংদী জেলার বিস্তীর্ণ পাহাড়ি অঞ্চলসহ সমভূমি বেগুন উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। রাজধানী ঢাকাসহ আশেপাশের শহর অঞ্চলগুলোতে যেসব বেগুন বিক্রি হয়, তার ৪০ ভাগই নরসিংদীতে উৎপাদিত লম্বা বেগুন। রাজধানী ঢাকার ৪০ ভাগ বেগুনের চাহিদা পূরণ করত নরসিংদী। দেশে বন্যা দেখা দিলে সমভূমি যখন পানির নিচে তলিয়ে যায়, তখনও নরসিংদীর পাহাড়ি ও পাহাড়ি সমভূমিতে ব্যাপকভাবে বেগুন উৎপাদিত হয়।
যে বেগুনের দাম মাঝেমধ্যে ২ টাকা কেজিতে নেমে আসে। এছাড়া চাষিরা উৎপাদিত বেগুন রাস্তায় ফেলে দাম হ্রাসের প্রতিবাদও জানিয়েছে বহুবার। সেই নরসিংদী এখন লম্বা বেগুনশূন্য।
নরসিংদী ব্রাহ্মন্দী নয়া বাজারে লম্বা বেগুনের আকালের সময়ও পলাশের খোরশেদ আলম নামে এক বেগুন ব্যবসায়ী লম্বা বেগুন আমদানি করে মানুষের রসনা তৃপ্ত করতেন। তিনি বলেন, এবছর হচ্ছে বেগুনের সবচেয়ে বড় আকালের মৌসুম। তিনি ২৫ বছর ধরে বেগুনের ব্যবসা করেন। এর আগে বেগুনের এতবড় আকাল তিনি দেখেননি।
তিনি জানান, নরসিংদীর পাহাড় অঞ্চলে ভাল মানের যে বেগুন উৎপাদিত হচ্ছে- তা ফড়িয়ারা জমি থেকেই ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছে। নরসিংদীর বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে পোকরা-দুকরা বেগুন।
লম্বা বেগুনের এত আকালের কারণ হিসেবে চাষিরা জানান, এবছর বৃষ্টির কারণে বেগুন ক্ষেত মরে গেছে। তাছাড়া বৃষ্টি সহনশীল জাতের বেগুন চাষের সময় পেরিয়ে গেছে। এখন ক্ষেতে যেসব বেগুন রয়েছে, তা গাছ ঝাড়া শেষ পর্যায়ের বেগুন। এরপর চাষিরা শীত মৌসুমের শুরুতে উন্নত জাতের বেগুনের চারা রোপন করবে। সেই নতুন গাছে বেগুন ফলন পর্যন্ত বেগুনের জন্য অপেক্ষা করা ছাড়া আর কোন পথ খোলা নেই।
(ঢাকাটাইমস/৯ অক্টোবর/প্রতিনিধি/এলএ)
মন্তব্য করুন