যৌতুকের বলি গৃহবধূ
স্বজনদের অভিযোগ হত্যা, পুলিশের দাবি আত্মহত্যা
শরীয়তপুর জেলার গোসাইরহাটে যৌতুকের টাকা না পেয়ে স্ত্রীকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। নিহত গৃহবধূর নাম সোনিয়া বেগম। এ ঘটনায় নিহতের স্বামী শাহ্ আলম হাওলাদারকে আটক করা হয়েছে। তবে এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি।
শনিবার গভীর রাতে উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের হোচেন হাওলাদার পাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।
নিহতের স্বজন ও প্রতিবেশিদের অভিযোগ, যৌতুকের টাকা না পেয়ে সোনিয়ার স্বামী শাহ্ আলম হাওলাদার তাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে। তবে পুলিশের দাবি, স্বামীর সঙ্গে ঝগড়া করে সোনিয়া আত্মহত্যা করেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শাহ্ আলমের বাড়ি গোসাইরহাট উপজেলার কোদালপুর ইউনিয়নের হোচেন হাওলাদার পাড়া গ্রামে। আর সোনিয়া চাঁদপুরের হাইমচর ইউনিয়নের মাঝিরচর গ্রামের ইব্রাহীম দর্জির মেয়ে।
২০১৪ সালে ঢাকায় পোশাক কারখানায় কাজ করা সূত্রে দুজনের সম্পর্ক হয়। এরপর তারা বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন পর থেকেই যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে সোনিয়ার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোকজন। যৌতুকের টাকা না পেয়ে সোনিয়াকে মারধর করা হয়। এক পর্যায়ে মেয়ের সুখের জন্য সোনিয়ার বাবা মেয়ের জামাইকে কয়েক দফা টাকা দেন। এর কিছুদিন পর শাহ্ আলম আবার ৪০ হাজার টাকা যৌতুক দাবি করলে সোনিয়ার বাবা টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। এরই জের ধরে শনিবার রাতে সোনিয়ার গলায় ওড়না পেচিয়ে শ্বাসরোধ করে শাহ্ আলম হত্যা করে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। তবে সোনিয়া আত্মহত্যা করেনি বলে প্রতিবেশিরা দাবি করলেও পুলিশ বলছে এটা আত্মহত্যা।
প্রতিবেশি ওসমান গনি জানান, ‘রাত তখন আড়াইটা। শাহ্ আলম হাওলাদার আমাকে ঘুম থেকে উঠায়। ও আমাকে বলে তার স্ত্রী তো আত্মহত্যা করেছে। শুনে আমি ওর ঘরে গিয়ে দেখি সোনিয়া মেঝেতে পড়ে আছে। কিন্তু ঘরের ভেতরে আত্মহত্যা করার কোনো আলামত চোখে পড়েনি। অথচ পুলিশ বলছে আত্মহত্যা।’ শুধু তাই নয় সোনিয়ার বুকের মাংস কামড় দিয়ে ছিড়ে ফেলা হয়েছে বলে জানান তিনি।
নিহত সোনিয়ার মা জেসমিন বেগম বলেন, ‘যৌতুকের কারণে আমার মেয়েকে শাহ্ আলম মাইরা ফালাইছে। কিন্তু পুলিশ কইতাছে আমার মেয়ে আত্মহত্যা করছে। আমি আমার মেয়ের হত্যার বিচার চাই।’
এ বিষয়ে থানার ওসি মোফাজ্জল হোসেনের সঙ্গে কথা বললে তিনি জানান, ‘এটা একটি আত্মহত্যা । রাতে স্মামীর সাঙ্গে ঝগড়া করে সোনিয়া আত্মহত্যা করেছে বলে আমার ধারণা। তবে অভিযুক্ত শাহ্ আলম হাওলাদারকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছি। এখনো পর্যন্ত কেউ মামলা করতে আসেনি। তদন্ত চলছে।’
(ঢাকাটাইমস/২২জানুয়ারি/প্রতিনিধি/জেডএ)
মন্তব্য করুন