বসন্তবরণে গিয়ে বিভীষিকাময় মৃত্যু
পহেলা ফাল্গুনে বসন্তবরণে আনন্দ করতে ঢাকা থেকে গ্রামের বাড়ি কিশোরগঞ্জের নিকলী যাচ্ছিল কয়েকটি পরিবার। স্বজনরাও তাদের অপেক্ষায় পথ চেয়ে ছিলেন। কিন্তু নরসিংদীর বেলাবোতে উল্টোদিক থেকে আসা দ্রুতগামী বাসের ধাক্কায় দুমড়ে মুচড়ে যাওয়া মাইক্রোবাসের সঙ্গে থেমে যায় ১১ জনের জীবন। তাদের মৃত্যুর খবরে গ্রামের বাড়িতে পৌঁছলে তৈরি হয় হৃদয়বিদারক পরিবেশের।
মাইক্রোবাসের নিহত আরোহীরা সবাই একই এলাকার এবং নিকটজন। প্রাপ্তবয়স্করা ঢাকায় শ্রমজীবী হিসেবে কাজ করতেন। সন্তানদের স্কুল ছুটি হওয়ায় এবং পহেলা ফাল্গুনের বসন্ত বরণ উৎসবকে সমানে রেখে পরিবারগুলো একসঙ্গে মাইক্রোবাস ভাড়া করে গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন পুরুষ, চারজন নারী ও দুজন শিশু। রবিবার ভোরে ঢাকা থেকে তারা কিশোরগঞ্জের উদ্দেশে রওয়ানা হন তারা। সাড়ে আটটার দিকে বেলাবোতে সংঘর্ষ হয় বিপরীত দিক থেকে আসা বাসের সঙ্গে তাদের মাইক্রোবাসের।
দুর্ঘটনাস্থলে স্বপন মিয়া নামের এক জন বলেন, মাইক্রোবাসের নিহত আরোহীরা তার পরিচিত ছিলেন। তারা অনেক দিন পর পরিবার নিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন। তাদের সঙ্গে তিনিও ঢাকা থেকে নিকলী ফিরছিলেন। তবে তিনি অন্য একটি গাড়িতে ছিলেন।
পুলিশ জানিয়েছে, মাইক্রোবাসটিতে ১৪ জন আরোহী ছিলেন। আরোহীদের এই সংখ্যা মাইক্রোবাসের ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি।
এই দুর্ঘটনায় আহত হয় আরও মোট নয় জন। এদের মধ্যে তিনজন মাইক্রোবাসের যাত্রী, তিনজন বাসের আর তিনজন পথচারী। এদের মধ্যে বাস ও মাইক্রোবাসের আরোহীদেরকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। তিনজন পথচারীকে স্থানীয় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
নিহতরা হলেন- কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলা ছাতি চর গ্রামের রহিম মিয়ার ছেলে হাসান, আর স্ত্রী হালেমা, শ্যালিকা ঝুমা বেগম, ছেলে ঈশান, একই এলাকার ছিদ্দিক মিয়ার ছেলে নাজমুল, ছেলের বউ সাধনা, সফদর মিয়ার ছেলে হিরা মিয়া, কালু মিয়ার ছেলে মানিক মিয়া, ছেলের বউ মফিয়া খাতুন, নাতি অন্তর আলম, মহরম আলীর ছেলে নাজমুল।
এছাড়া গুরুতর আহত অবস্থায় ভৈরবের চন্ডিবের ব্যবসায়ী সিরাজ মিয়া, মুসলিম মিয়ার ছেলে কাওছার মিয়া, নিকলী ছাতির চরের নিহত মানিকের ছেলের বউ শারমিন ও নাতী রাব্বিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
গত শুক্রবার রাতে ফরিদপুরে গ্যাস সিলিন্ডারবাহী কাভার্ড ভ্যানের সঙ্গে একটি যাত্রীবাহী বাসের সংঘর্ষের পর আগুন ধরে ১৩ জন মারা যায়। এ ছাড়া শুক্রবার রাত থেকে গতকাল শনিবার রাত পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় মাগুরা, গাজীপুর, নাটোর ও রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনায় এক সাবেক সেনাসদস্যসহ আরও ১২ জন নিহত ও ৪২ জন আহত হন।
(ঢাকাটাইমস/১২ফেব্রুয়ারি/জেডএ/ডব্লিউবি)
মন্তব্য করুন