‘আগামী ফসল ঘরে ওঠা পর্যন্ত ত্রাণ দেবে সরকার’
আগামী ফসল ঘরে না উঠা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকসহ হাওরাঞ্চলের মানুষদের সরকার ত্রাণ দেবে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।
মঙ্গলবার দুপুরে নেত্রকোণার মদন উপজেলার উচিতপুর ট্রলারঘাটে আগাম বন্যায় বোরো ফসলহানি ও পরবর্তী পরিস্থিতি নিয়ে এক মতবিনিময় সভায় এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের মনোবল নষ্ট করার কোনো কারণ নেই। হাওর অঞ্চলের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে এলাকাবাসী সচেষ্ট এবং পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারের সামর্থ রয়েছে। হাওরের তিন লাখ ৩০ হাজার পরিবারকে আগামী একশো দিন প্রতি মাসে ৩০ কেজি চাল ও নগদ পাঁচশো টাকা করে দেওয়া হবে। এজন্য ইতিমধ্যে ৩৫ হাজার মেট্রিক টন চাল ও ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। তবে যারা ত্রাণ নেবে না, তারা খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির মাধ্যমে ১০টাকা কেজি চাল ও ওএমএস এর মাধ্যমে ১৫টাকা কেজি চাল আগামী ফসল না উঠা পর্যন্ত নিতে পারবেন।
মন্ত্রী আরো বলেন, হাওরাঞ্চলের সমস্যা চিহ্নিত করণ ও ভবিষ্যতে যা করণীয় তা এ সরকার করবে। আগামী মৌসুমের শুরুতে বীজ, সার, কীটনাশক বিনামূল্যে কৃষকদের মাঝে দেয়া হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে কৃষকদের ব্যাংক ঋণ আগামী এক বছরের জন্য স্থগিত করা হয়েছে। এনজিও ঋণ ও বিদ্যুৎ বিল এক বছরের জন্য স্থগিত করারও আহবান জানান তিনি।
এ সময় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব শাহ কামাল, যুব ও ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয় (এমপি), রেবেকা মমিন (এমপি), ইফতেখার উদ্দিন তালুকদার পিন্টু (এমপি), জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রশান্ত রায়, জেলা প্রশাসক ড. মুশফিকুর রহমান বক্তব্য রাখেন।
আলোচনা শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষ থেকে তিনশো পরিবারের মাঝে ১৫কেজি চাল ও পাঁচশো টাকা করে বিতরণ করে এ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া।
এর আগে সকালে জেলার বারহাট্রায় বিভিন্ন দপ্তরের সরকারি কর্মকর্তা ও সরকার দলীয় নেতাদের সাথে নিয়ে ত্রাণ বিতরণ করেন তিনি। এছাড়াও সোমবার রাতে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলা প্রশাসক মুশফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে মধ্যরাত নাগাদ হাওরাঞ্চলের মানুষদের কিভাবে পূর্ণাঙ্গভাবে সহায়তা করা যায় এ নিয়ে মতবিনিময়সভা করেন।এতে জনপ্রতিনিধি, সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা, বিশিস্টজনসহ গণমাধ্যম কর্মীদের মতামত নেয়া হয়েছে।
নেত্রকোণা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক বিলাস চন্দ্র পাল জানান, টানা বর্ষণে আর উজানের পাহাড়ি ঢলে নেত্রকোণায় এ নাগাদ প্রায় ৭৪ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল তলিয়ে গেছে।এর মধ্যে ৬৪ হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল সম্পূর্ণভাবে নষ্ট হয়ে গেছে। এতে অন্তত এক লাখ ৪০ হাজার কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
তিনি আরো জানান, এরই মাঝে জেলার হাওর এলাকার আবাদের পুরোটাই ৪০হাজার হেক্টর জমির বোরো ফসল নষ্ট হয়েছে। এখনও নেত্রকোণায় বর্ষণ চলছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে জেলার বিল এলাকাসহ নিচু এলাকা প্লাবিত হয়ে আরো ফসলের ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে।
(ঢাকাটাইমস/২৫এপ্রিল/ প্রতিনিধি/ ইএস)
মন্তব্য করুন