বনানী ধর্ষণকাণ্ডে অন্যরাও ধরা পড়বে: স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী
রাজধানীর বনানীতে দুই বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় বাকি আসামিরাও শিগগির ধরা পড়বে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বলেছেন, এই অপরাধে জড়িত কেউ ছাড় পাবে না। সরকার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করছে বলেও জানান মন্ত্রী।
শুক্রবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার বুড়িচংয়ে এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। উপজেলার পূর্ণমতি মনসুর আহমদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বঙ্গবন্ধু-স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের ফটোগ্যালারির উদ্বোধন এবং বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
ঢাকার দুটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই ছাত্রী গত ২৮ মার্চ রাজধানীর বনানীর রেইন ট্রি হোটেলে ধর্ষণের শিকার হন। পরে ৬ মে তাদের একজন বনানী থানায় মামলা করেছেন। এই মামলার প্রধান আসামি আপন জুয়েলার্সের মালিক দিলদার আহমেদের ছেলে সাফাত আহমেদ। তার সহযোগী হিসেবে আছেন রেগনাম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ হোসেন জনির ছেলে সাদমান সাকিফ। গতকাল সিলেট থেকে পুলিশ তাদের দুইজনকে গ্রেপ্তারের পর আজ আদালতের মাধ্যমে রিমান্ডে নিয়েছে। এই ঘটনায় আসামিদের মধ্যে আও আছেন ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ ইমেকার্স এর প্রধান নাঈম আশরাফ, সাফাতের গাড়িচালক বিল্লাল এবং দেহরক্ষী আবুল কালাম আযাদ।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘এটা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাংলাদেশ। এখানে অপরাধ করে কেউ পার পাবে না। বনানীর ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তরা গ্রেপ্তার হবে বলে আমি আগেই বলেছি। ঠিকই সিলেট থেকে প্রধান দুইজনকে পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে।’
বাকিরাও ধরা পড়বে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এককথায় যে যত প্রভাবশালীই হোক অন্যায় করে ছাড় পাবে না।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে বলেন, ‘তিনি অন্যায়ভাবে অবরোধের ডাক দিয়ে ৯২ দিন আন্দোলনের নামে মানুষ পুড়িয়েছেন। গাড়িতে আগুন দিয়ে শত শত মানুষকে নিঃস্ব করেছেন। দেশের মানুষ ঐকবদ্ধ হয়ে উনার সেই অগ্নিসন্ত্রাস আর হত্যার আন্দোলনকে রুখে দিয়েছে। তবে এখনো তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সেই আন্দোলন কর্মসূচি প্রত্যাহার করেননি। তার ডাকে এখন আর কেউ সাড়া দেয় না।’
পূর্ণমতি মনসুর আহমদ উচ্চ বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সাবেক আইনমন্ত্রী ও কুমিল্লা-৫ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট আবদুল মতিন খসরু, চট্টগ্রাম বিভাগের ডিআইজি এস.এম মনিরুজ্জামান, কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা পুলিশ সুপার মো. শাহ আবিদ হোসেন, সাংবাদিক প্রণব কুমার সাহা অপু প্রমুখ।
বিদ্যালয়ের শিক্ষক মো. আবদুল মজিদের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাবলিক রিলেশান অফিসার (পিআরও) মো. শরীফ মাহমুদ অপু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল হাসেম খান, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন স্বপন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. ফজলুল জাহিদ পাভেল, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ সহিদুল করীম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আকলাখ হায়দার, বুড়িচং সোনার বাংলা কলেজের অধ্যক্ষ সেলিম রেজা সৌরভ, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবু মুছা, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুল হক ভূঁইয়া, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সহ-সভাপতি মোশারফ হোসেন ভূঁইয়া বাবুল, উপজেলা পেশাজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার আল-আমিন, উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম খোকন, কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আবু তৈয়ব অপি প্রমুখ।
অনুষ্ঠানের শুরুতে বঙ্গবন্ধু, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধ ফটোগ্যালারির উদ্বোধন করেন মন্ত্রী। এছাড়া অনুষ্ঠান শেষে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ করেন তিনি।
(ঢাকাটাইমস/১২মে/প্রতিনিধি/জেবি)
মন্তব্য করুন