ভবন সংকটে গণকপাড়া স্কুল অ্যান্ড কলেজে পাঠদান ব্যাহত
স্কুল দিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে বিদ্যাপীঠটি কলেজ পর্যন্ত উন্নীত হয়েছে। অনেক স্বপ্ন নিয়ে স্থানীয়রা বিদ্যাপীঠটি প্রতিষ্ঠা করেন। প্রত্যন্ত অঞ্চলে হলেও প্রতিষ্ঠানটিতে শিক্ষার্থীর সংখ্যা প্রায় দেড় হাজারের কাছাকাছি। প্রতিষ্ঠানটির অনেক কিছু ঠিক থাকলেও কেবলমাত্র শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষক সংকটে শিক্ষার্থীদের পাঠদান চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে। এর ফলে সম্প্রতি সময়ের কেন্দ্র পরীক্ষাগুলোতে খুব একটা আশানুরূপ ফল করতে পারছেন না শিক্ষার্থীরা। এতে চরম মনক্ষুন্ন অভিভাবকরাও।
সম্প্রতি ঝড়ে একটি টিনসেট ঘর ভেঙে পড়ায় বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার গণকপাড়া স্কুল এন্ড কলেজটিতে শিক্ষার্থীদের পাঠদানে আরও সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ভালো ফলাফল না হওয়ার অজানা আতঙ্কে ভুগছেন মেধাবী শিক্ষার্থীরা। স্কুলটি থেকে ছেলেমেয়েদের ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন অনেক অভিভাবক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলার নারচী ইউনিয়নের গণকপাড়া গ্রামে ২০০০ সালে স্থানীয় বিদ্যানুরাগীরা গণকপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় নামে স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর আশপাশের গ্রামের ছেলেমেয়েদের স্কুলটিতে লেখাপড়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়।
প্রতিষ্ঠার সময় নড়বড়ে টিনের চালার নিচে চলে পাঠদান কার্যক্রম। এরপর স্থানীয় একটি এনজিও সহায়তায় একটি পাকা ভবন নির্মিত হয়। তবে অধিকাংশ ছাত্র-ছাত্রীদের পাঠদান চলতে থাকে নড়বড়ে টিনের চালার নিচে।
সম্প্রতি কালবৈশাখী ঝড়ে সেই টিনের চালাটির একাধিক স্থানে লণ্ডভণ্ড হয়ে যাওয়ায় প্রায় খোলা আকাশের নিচেই চলছে পাঠদান। এছাড়াও স্কুলটিতে প্রয়োজনের তুলনায় শিক্ষকের সংখ্যা অনেক কম। বর্তমানে ১৪০০ ছাত্র-ছাত্রীর জন্য ১৪ জন শিক্ষক হওয়ায় পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। ছাত্রীদের জন্য নেই ভালো কোনো কমন রুমও।
বিজ্ঞানাগারে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির অভাবে বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা দুরবস্থায় পড়েছে। প্রতিষ্ঠার প্রায় ১৭ বছর পার হতে চললেও এখনো সরকারিভাবে কোনো অবকাঠামো নির্মিত হয়নি। এছাড়াও চেয়ার টেবিল বেঞ্চ ক্লাসরুম ও ব্লাকবোর্ড ভালো না থাকায় স্কুলটির লেখাপড়া বিঘ্ন ঘটছে।
স্থানীয় শহিদুল ইসলাম, হযরত আলী, আব্দুল জোব্বার বলেন, অনেক আশা ছিল স্কুলটি নিয়ে। বর্তমানে স্কুল থেকে কলেজে উন্নীত হলেও লেখাপড়ার মান বাড়েনি। সরকার গ্রামীণ জনপদের মানুষের জন্য স্থাপিত স্কুলের ব্যাপক উন্নয়ন করলেও অজ্ঞাত কারণে আমাদের স্কুলের কোনো উন্নয়ন করছেন না। লেখাপড়ার খরচ যোগাতে কষ্ট হলেও অনেক অভিভাবকই তাদের মেধাবী ছেলেমেয়ে অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে দিচ্ছেন।
এ ব্যাপারে প্রধান শিক্ষক মশিউর রহমান বলেন, আমাদের এমপি মহোদয় থেকে শুরু করে বিভিন্নস্থানে উন্নয়নের জন্য সহযোগিতা চাওয়া হলেও তেমন কোনো সহযোগিতা পাইনি।
এ ব্যাপারে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা রুহুল আমিন বলেন, আশা করছি স্কুলটির বিরাজমান বিভিন্ন সমস্যা খুব শিগগির সমাধান হবে এবং এলাকায় উন্নতমানের লেখাপড়ার পরিবেশ ফিরিয়ে আসবে।
ঢাকাটাইমস/২মে/প্রতিনিধি/এমআর
মন্তব্য করুন