ভারত থেকে ট্রেনে চড়ে ১২ হনুমান বাংলাদেশে
ভারত থেকে বাংলাদেশে আসা মালবাহী ট্রেনে চড়ে ১২ সদস্যের একটি হনুমান পরিবার চলে এসেছে রাজশাহীতে। হনুমান পরিবারটির কর্তা হয়তো ভেবেছিল- খালি বগিতে পুরো পরিবার নিয়ে চড়ে বেশ ভালই একটা ভ্রমণ করা যাবে! তাই সবাইকে নিয়েই ট্রেনে উঠেছিল। কিন্তু সেই ট্রেন তাদের ভারত থেকে নিয়ে এসেছে বাংলাদেশে।
এখন ভারতের ১২ সদস্যের এই হনুমান পরিবারটি রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও পবা উপজেলার কয়েকটি গ্রামে অবস্থান করছে। গাছে-গাছে লাফিয়ে বেড়াচ্ছে, দাঁত খিচিয়ে ভেংচি কাটছে, আবার কেউ কোনো খাবার দিলে খাচ্ছে। হনুমানগুলো দেখতে রীতিমতো ভিড়ও জমে যাচ্ছে এলাকায়।
শনিবার বিকেলে পবার দামকুড়াহাট এলাকায় গিয়ে ওই পরিবারের চারটি হনুমান দেখা যায়। একটি হনুমান বসে ছিল রবার্ট রিচার্ড মুর্মুর বাড়ির টিনের ছাদে।
রবার্ট ঢাকাটাইমসকে জানান, গ্রামের কয়েকটি বাড়ি ঘুরে ঘণ্টা দুয়েক আগে হনুমানটি তার বাড়িতে এসেছে।
রবার্ট বলেন, ‘কলা দিচ্ছি, পাউরুটি দিচ্ছি, পানি দিচ্ছি সবই খাচ্ছে। খুব খিদে পেয়েছে মনে হয়। লোকজন দেখার জন্য আসছে। কেউ কেউ বিরক্ত করছে। কেউ যেন বিরক্ত না করে সে জন্য মেম্বার (ইউপি সদস্য) ইবরাহীম আলীকে জানিয়েছি।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেল, পবার শিতলাই, কাদিপুর, রায়পাড়া ও গোদাগাড়ীর আলোকছত্র গ্রামে আরও ৮টি হনুমান অবস্থান করছে।
আলোকছত্র গ্রামের ফিরোজ কবির ঢাকাটাইমসকে বলেন, হনুমানগুলোর মুখ কুচকুচে কালো। কেউ কাছে গিয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করলেই দাঁত খিচিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে।
শিতলাই গ্রামের মজিবর রহমান বলেন, ‘শুক্রবার ভোরে বাড়ির সামনে বসে ছিলাম। তখন রেললাইনে একটি ট্রেনকে ক্রস করার জন্য মালবাহী আরেকটি ট্রেন দাঁড়িয়েছিল। এ সময় একটি খালি বগি থেকে একসঙ্গে নেমে এলো ১২টি হনুমান। তারপর হনুমানগুলো বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে গেছে।’
এই গ্রামের আবদুর রাকিব নামে আরেক ব্যক্তি জানালেন, সোনামসজিদ স্থালবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি করে বাংলাদেশ। পাথরের ট্রেনে চড়ে মাঝে মাঝেই ভারতীয় হনুমান এসব এলাকায় আসে। অনেক সময় হনুমান মানুষকে বিরক্ত করে, আবার বেশিরভাগ সময় মানুষ তাদেরকে বিরক্ত করে।
রাকিব বলেন, উপযুক্ত পরিবেশ এবং খাবারের অভাবে ভারত থেকে আসা হনুমান মারাও যায়। কিন্তু সেগুলো উদ্ধার করে না বনবিভাগ। বাংলাদেশে যেহেতু হনুমান সব এলাকায় দেখা যায় না, তাই এসব হনুমান উদ্ধার করে নিরাপদ পরিবেশে নিয়ে গিয়ে অবমুক্ত করা প্রয়োজন।
জানতে চাইলে বিভাগীয় বন বিভাগের সহকারি বন সংরক্ষক একেএম রুহুল আমিন ঢাকাটাইমসকে বলেন, হনুমানরা সাধারণত একটা পরিবার এক সঙ্গে থাকে। তাই তাদের সবাইকে ধরা খুব কঠিন। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কেউ একটি-দুটি ধরে রাখলে এবং খবর পেলে সেগুলো উদ্ধার করা হয়।
পবা-গোদাগাড়ীর নতুন এসব হনুমানের ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলেও জানান।
(ঢাকাটাইমস/১৭জুন/আরআর/ইএস)
মন্তব্য করুন