মাছ কিনতে ফার্মগেটের মেলায়
বেসরকারি চাকরিজীবী মারুফ হোসেনের হাতে বেশ কয়েকটি ব্যাগ। এক ব্যাগে চিংড়ি, অন্য ব্যাগে কাতল, আরেকটি ব্যাগে ইলিশের সঙ্গে রয়েছে বিভিন্ন ছোট মাছ।
কেবল মারুফ নয় রাজধানীর ফার্মগেট কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে মাছ মেলায় দেখা গেছে কেনার ধুম। ক্রেতারা বলছে, এক জায়গায় পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন নদীর প্রজাতির মাছ। তার উপর মেলা কর্তৃপক্ষ বলেছে এ মাছে কোন ক্ষতিকর কিছু মেশানো হয় না। পরিবেশ ভালো ও বাজার দরেই পাওয়া যাচ্ছে বলে এই মাছ কিনছে তারা।
বাংলাদেশ মৎস উন্নয়ন কর্পোরেশনের স্টলে দেখা গেল নদীর বড় রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪৮০ টাকা কেজি দরে। এ ছাড়া মাঝারি রুই ৪৪৫ টাকা, কোরাল ৬২০ টাকা, বাইলা ৭৫৫ টাকা, নদীর বড় আইড় ১১৫৫ টাকা, ইলিশ ১১৫৫ টাকা, বড় চিংড়ি ৭৮৫ টাকা, সামুদ্রিক রিটা মাছ ৫৮৫ টাকা, রুপচাঁদা ৯০০ টাকা, পাবদা মাছ ৬২৫ টাকা, টেংরা ৬৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
২১ নম্বর স্টল নিয়েছে মৎসজীবী, উপজাতি এবং হতদরিদ্র উন্নয়ন সোসাইটি এখানে। প্রতি কেজি চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা। এক কেজিতে ১২টি মত পাওয়া যাবে। পাঁচকেজি ওজনের কাতল মাছ প্রতি কেজি ৫০০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে সেখানে। বাইলা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজি দরে। এগুলো কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকা থেকে আনা হয়েছে বলে জানান বিক্রয়কর্মী।
হাবিব এন্টার প্রাইজের তাদের স্টলে বিক্রি করছে আইড়, বোয়াল, রুপচাদা, চিংড়ি, কই।কিছু স্টলে দেখা গেল জীবন্ত শিং, কৈ, রুই মাছ। ছোট শিং ৩২০ টাকা ও বড় আকাগেররগুলো ৭০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কৈ মাছের কেজি ১৫০ টাকা।
এছাড়া ধোঁয়া ও কোটা সামুদ্রিক মাছ বাজারজাত করছে ‘এসাপ হেলদি ফুড লিমিটেড’। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফাতেমা পারভিন পুতুল ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘গভীর সমুদ্রে মাছ আহরণের পরপরই প্রক্রিয়াজাত করে (আঁশ, নাঁড়িভুঁড়ি ফেলে দেওয়া) নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় সংরক্ষণ করি।’ এখানে চাপিলা, সুরমা, রুপচান্দা, কাউয়াবড় চোখ, কালো চান্দা, মুন ফিশ, বাটার মাছ, বেলে, মলা, ইলিশ, পোয়া, লইট্টা, বাটা, চিংড়ি, কাটেল মিট, স্কুইটিসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ পাওয়া যাচ্ছে।
চাপিলা ৫০০ গ্রাম ১২৩ টাকা, সুরমা মাছ ২৬২ টাকা, টুনা ২৫৯ টাকা, রুপচাঁদা ৩৭১ টাকা দরে বিক্রি করছে প্রতিষ্ঠানটি।
২০ জুলাই বিকালে রাজধানীর খামারবাড়ি কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশ প্রাঙ্গণে ‘কেন্দ্রীয় মৎস্য মেলা ২০১৭’-র উদ্বোধন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। মেলা শেষ হবে আগামী ২৪ জুলাই। মেলায় প্রবেশে কোন টিকিট লাগে না। প্রতিদিন সকাল ১০ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত চলে এই মেলা।
জাতীয় মৎস্য সপ্তাহ উপলক্ষে মৎস ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও মৎস্য অধিদপ্তরের যৌথ উদ্যোগে এই মেলার আয়োজন করা হয়েছে এ মেলা।
মৎস অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সৈয়দ আরিফ আজাদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মেলায় সরকারি বেসরকারি ২৯ টি প্রতিষ্টান ৪০ স্টল নিয়েছে। মেলায় মাছের উন্নত জাত, সুষম খাদ্য, বদ্ধ ও উন্মুক্ত জলাশয়ে মাছ চাষ, খাঁচায় মাছ চাষ, কাঁকড়া ও কুচিয়া চাষ, রেনু উৎপাদনসহ মাছের উৎপাদন, চাষ, প্রক্রিয়াজাতকরণের নানান কলা-কৌশল দেখানো হচ্ছে।মৎস্য উৎপাদন বাড়াতে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগও তুলে ধরা হচ্ছে মেলায়। আমি বলবো সন্তানকে মাছ চেনাতে হলেও মেলায় আসুন। দেখুনে আমাদের দেশীয় মাছ। আমাদের মাছ চাষের প্রযুক্তি।’
(ঢাকাটাইমস/২৩জুলাই/জেআর/ডব্লিউবি)