কাঁটা বিছানো রাস্তায় হাঁটা ও আমার ৫১ বছর
আপাদমস্তক একজন সংবাদকর্মী আমি। তবে শুধুই কি তাই? নিজ এলাকার মানুষের অধিকার ও সম্মান রক্ষার প্রশ্নে একজন ক্ষুদ্র রাজনৈতিক কর্মী হিসেবেও যে আমার নাম উচ্চারিত হয়। সমাজকর্মী হিসেবেও দুই যুগের বেশি সময় ধরে কাজ করছি নিজ জন্মস্থান ফরিদপুর অঞ্চলে। উদ্যোক্তা হওয়ার চেষ্টাও দেড় দশকের বেশি সময় ধরে করে চলেছি। লেখক সত্তা ভেতরে ভেতরে স্বস্তি দেয় না; কিন্তু যে অফুরান সময় লেখার জন্য চাই, সেই অবসর কি আর আছে? তবুও কখনো সখনো লিখি। উপন্যাস কিংবা প্রবন্ধ এবং রাজনৈতিক বিশ্লেষণ এখনও আমার লেখনীর প্রিয় বিষয়।
বহুমুখী এসব কর্মকাণ্ডে বারবার চ্যালেঞ্জ এসেছে সামনে। কখনও অকারণ ষড়যন্ত্রের মুখে পড়েছি। ঈর্ষান্বিত হয়ে পিঠে ছুরি মারতে উদ্যত হয়েছে বাবা-মার কসম খাওয়া শুভাকাঙ্ক্ষীরূপী দু”চারজন!!! অবাক হয়েছি, খারাপ লেগেছে তাদের বিশ্বাসঘাতকতায়।
চলার পথ কখনো মসৃণ ছিল না। তবে পিছপা হইনি। লড়াই, সংগ্রাম জীবনের অংশ মেনে কর্মে অবিচল আছি।
পেশাগত জীবনের অন্যতম সেরা সময় কেটেছে প্রথম আলোতে, এক দশক। স্পেশাল করস্পন্ডেন্ট, ডেপুটি চিফ রিপোর্টার, সিনিয়র রিপোর্টার, স্টাফ রিপোর্টার হিসেবে দেশ-বিদেশ ঘুরেছি। জঙ্গি, গডফাদারের মুখোশ উন্মোচন করেছি। অনুসন্ধান করেছি আরও অনেক বড় বড় অসঙ্গতি। বাংলাদেশ প্রতিদিন পত্রিকার সূচনাকালে এর ডেপুটি এডিটর, পরবর্তীতে আমাদের সময়ের নির্বাহী সম্পাদক, বাংলাভিশন টেলিভিশনে নিউজ এডিটর এবং পরবর্তীতে ঢাকা টাইমস ও সাপ্তাহিক এই সময়ের মালিক/সম্পাদক হিসেবে আমার পেশাজীবী জীবন চলমান। সফল না-কি ব্যর্থ সেই হিসেব কষা হয়নি।
একজন পেশাজীবীর পুনর্বার রাজনৈতিক কর্মী হয়ে ওঠা ও মানুষের নায্য অধিকার প্রতিষ্ঠায় নির্বাচনি রাজনীতিতে নামা যে কাঁটা বিছানো রাস্তায় হাঁটা তা আমার চেয়ে ভালো আর কে বোঝে?
অকারণ শত্রুতা আমার সঙ্গে যেমন হয়েছে আর হচ্ছে তেমনি গোয়েবলস এর জমানার চেয়েও ভয়ঙ্কর বানোয়াট মিথ্যা প্রচারণার শিকারও আমাকে হতে হয়েছে। পরিকল্পিত, সাজানো, শতভাগ মিথ্যে মামলায় ফাঁসিয়ে আমার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীকে সুবিধে দেওয়ার চেষ্টা, অপচেষ্টা যে বা যারা করেছে তারা একাধারে নিজেরাও রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষী!!!! পাশাপাশি নিজ এলাকায় আমার জনপ্রিয়তায় ভীত। তৃণমূলের জনসাধারণের সঙ্গে আমার অনায়াসে মিশে যাওয়া, মানুষের জন্যে আমার নিরন্তর কাজ করার চেষ্টাকে হাতেগোনা চিহ্নিত স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী মানতে পারে না। ষড়যন্ত্রের পথ বেছে নিয়ে আমায় দমন করতে চায়।
সর্বশেষ দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমি ফরিদপুর-১ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছি; বিপুল সংখ্যক মানুষের রায় পেয়েছি। ৮৫ হাজার মানুষের ভোট পেয়েছি। কার্যত বহুবিধ নীলনকশা, ষড়যন্ত্র করে বিশেষ গোষ্ঠীর অপচেষ্টায় আমার জয়কে ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে। তবে মানুষের মন থেকে আমায় মুছে ফেলা যায়নি, যাবেও না। কারণ মানুষ জানেন তাঁদের জন্য আমি যেমন নিবেদিত তেমনি ষড়যন্ত্রীরা কতটা পরিকল্পিত মিথ্যাচারী।
আমার ৫০ বছরের পথ চলা শেষ হয়েছে। ৫১ বছরে পাড়া দিয়েছি। মানুষের জন্য কাজ করছি বলে আমার জনপ্রিয়তায় ভীতদের পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রে ইতোমধ্যে কারাবরণও করেছি। ভয় পাইনি, পাই না এবং আমাকে রক্তচক্ষু দেখিয়ে ভয় পাওয়ানো যাবেও না। মানুষের অধিকার আদায়ে বঙ্গবন্ধু, বঙ্গবন্ধু কণ্যা বারবার কারাবাস করেছেন। পিছিয়ে যাননি তাঁরা। অদম্য সাহস নিয়ে এগিয়েছেন। মানুষের অধিকার আদায় করে ছেড়েছেন। আমিও তাঁদের একজন অনুসারী।
৫১ বছরের প্রথম দিনে আমার অঙ্গীকার যত বাধাই আসুক, অধিকার বঞ্চিত মানুষের পাশে আছি, থাকব।
লেখক: সম্পাদক, ঢাকা টাইমস ও সাপ্তাহিক এই সময় এবং চেয়ারম্যান কাঞ্চন মুন্সী ফাউন্ডেশন
মন্তব্য করুন