রংপুর মেডিকেলে চিকিৎসার অভাবে শিশু মৃত্যুর অভিযোগ

রংপুর ব্যুরো, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ০৬ আগস্ট ২০১৭, ১৮:২৬

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে বিনা চিকিৎসায় এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। শিশুটির চিকিৎসার জন্য ডাক্তারকে বারবার ডাকার কারণে দায়িত্বরত চিকিৎসক এসেই নানা ধরনের আপত্তিকর কথা বলে শিশুটির ভর্তিপত্র ছুড়ে ফেলেন বলে অভিযোগ স্বজনদের। এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ স্বজনরা ওই চিকিৎসকের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন। রবিবার সকাল আটটার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল (রমেকহা) এর ভর্তি ফাইল থেকে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও জেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারের মাধ্যমে পুত্র সন্তানের মা হন সদরের বাহাদুরপাড়া এলাকার হাসান আলীর স্ত্রী রীনা বেগম। সেখানে শিশুটির অবস্থার অবনতি হলে রেফার্ড করা হয় রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসাপাতালে। শনিবার সন্ধ্যা সাতটার দিকে ওই দম্পতি নবজাতককে হাসাপাতলের শিশু সার্জারি ওয়ার্ডে ভর্তি হন।

নিহত ওই নবজাতকের স্বজন পারভীন আক্তার সাংবাদিকদের জানান, আমরা যখন ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে ছিলাম তখন আমাদের বাবু ভালো ছিল। এখানে আসার পর ভর্তি হই। কিন্তু কেউ আমাদের খোঁজখবর রাখেনি। রাতে চিকিৎসার জন্য বারবার ছোটাছুটি করি কেউ সাড়া দেয়নি। নার্সদের ডাকাডাকির পরও তারা আসেনি। দুইজন নার্স এলেও তারা বলেন, আমরা এই ওয়ার্ডে ভাড়ায় আসছি। আমরা পারব না। পরে তারাও চলে যায়।

চাঁদনী নামের আরেকজন জানান, একজন ওয়ার্ড বয় আসে। তিনি একশ টাকা চান লেবুনেশন করার জন্য। সেই টাকা দেয়ার পর তিনি চেষ্টা করেও পাননি। এরপর তিনিও চলে যান। আমরা অসহায় হয়ে পড়ি।

নিহত ওই নবজাতকের বাবা আহসান আলী জানান, আমরা চিকিৎসকের জন্য ছোটাছুটি করি কেউ আসে না। এরপর রাত দশটার দিকে আমাদেরকে ওয়ার্ড থেকে বের করে দেয়া হয়। সকাল আটটায় দিয়ে দেখি আমার বাবু মারা গেছে। আমি এর বিচার চাই।

আহসান আলীর স্ত্রী রিনা আখতার বলেন, আমার বুক খালি হয়েছে। আমি আর কোনো মায়ের বুক খালি হতে দেব না। আমি ওদের বিচার চাই।

নবজাতকের বাবা আহসান এর বন্ধু সাইফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, আমরা যখন বিষয়টি জানতে পারলাম তখন অনেক দৌড়াদৌড়ি করে একজন ডাক্তারের কাছে যাই। সেখানে গিয়েই দেখি আমার ছোট বোন সেখানে দাঁড়িয়ে আছি। আমি তাকে শিশুটির কাছে যাবার অনুরোধ করি। কিন্তু উনি তখন বলে এটা সরকারি হাসপাতাল এখানে কিছু নিয়ম কানুন আছে। ইচ্ছে করলেই যাওয়া যাবে? এরপর তিনি ক্ষুব্ধ হয়ে শিশুর কাছে এসেই সেখানে থাকা স্বজনদের নানা ধরনের কথা বলেন। এরপরইে শিশুর ভর্তি ফরম ছুড়ে ফেলে দেন। এরপর সেখানকার নার্সরাই তাদের হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন।

তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, এটা কোন দেশ? সেখানে ডাক্তার নার্সরা হাসপাতাল থেকে বের হয়ে যেতে বলেন। তিনি ওই চিকিৎসক ও নার্সদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সরকারের প্রতি অনুরোধ জানান।

তিনি সাংবাদিকদের আরও বলেন, আমি আপনাদের অনুরোধ করে আপনার গিয়ে দেখেন যে অক্সিজেন দেয়া হয়েছে তার লাইন ঠিক আছে কী না। সেটি ঠিক ছিল না বলে দাবি করেন সাইফুল ইসলাম।

ওই ওয়ার্ডে দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মাহফুজুল হক মানিক সাংবাদিকদের বলেন, আমি ওই সময় দায়িত্বে ছিলাম না। কিন্তু শিশুর বিষয়ে জানতাম। শিশুটি জন্মের পর বায়ুপথ ছিল না। আর তার বয়স অনুযায়ী অপারেশন করার মতো অবস্থাও ছিল না। আমরা সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি। এরপরেও কোনো চিকিৎকের অবহেলা থাকলে কর্তৃপক্ষ বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা নেবেন।

এ বিষয়ে হাসপাতালটির পরিচালক ডা. মওদুদ ঢাকাটাইমসকে বলেন, আমি রংপুরের বাইরে। বিষয়টি নিয়ে পরে কথা হবে।

(ঢাকাটাইমস/০৬আগস্ট/আরআই/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

যে কথা বলায় এমভি আব্দুল্লাহ’র নাবিকদের কিছু করেনি জলদস্যুরা

উখিয়ায় আরসার আস্তানা থেকে বিপুল অস্ত্র গ্রেনেড ও রকেট শেল উদ্ধার, গ্রেপ্তার ২

বগুড়ায় হত্যা মামলার আসামিকে ছুরিকাঘাতে হত্যা

রোহিঙ্গাদের জন্য ইরানের খাদ্য সহায়তা

শেরপুরে এক হাজার ২৯২ বস্তা ভারতীয় চোরাই চিনিসহ গ্রেপ্তার ১

উপজেলা নির্বাচন: ওবায়দুল কাদেরের ছোট ভাইয়ের মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ হাইকোর্টের

মাগুরায় কৃষকদের মাঝে কৃষি যন্ত্রপাতি বিতরণ

কালীগঞ্জে ট্রেনে কাটা পড়ে অজ্ঞাত বৃদ্ধের মৃত্যু

ত্রিভুজ প্রেমের জেরে কলেজছাত্র খুন, যুবকের যাবজ্জীবন 

ফরিদপুরে ছেলে হত্যা মামলায় বাবা ও সৎমায়ের যাবজ্জীবন 

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :