লালমনিরহাট-২

আসন ধরে রাখার চ্যালেঞ্জে নুরুজ্জামান

রাহেবুল ইসলাম টিটুল, কালীগঞ্জ (লালমনিরহাট)
 | প্রকাশিত : ১৬ নভেম্বর ২০১৮, ০৮:৩০

জাতীয় পার্টি গঠনের পর থেকে কালীগঞ্জ ও আদিতমারী উপজেলা নিয়ে গঠিত আসনটি ছিল এই দলের দখলে। তবে সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী নুরুজ্জামান আহমেদের হাত ধরেই ধীরে ধীরে সেখানে অবস্থান জোরাল হয়েছে আওয়ামী লীগের। আর গত পাঁচ বছরের উন্নয়নের সুবাদে আবার আসনটি ধরে রাখার জন্য প্রত্যয়ী তিনি।

এই আসনে ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারির একতরফা নির্বাচন বাদে ৩৫ বছরেও কালীগঞ্জের কেউ সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারেননি। জিতেছেন আদিতমারীর প্রার্থীরা। ফলে কালীগঞ্জ ছিল অনেকটাই উন্নয়ন বঞ্চিত।

আসনটি ৩৫ বছর আসনটি দখলে রেখেছিলেন জাতীয় পার্টির প্র্রয়াত সভাপতিম-লীর সদস্য মজিবুর রহমান। তবে ২০১৪ সালে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেন নুরুজ্জামান।

এবার জাতীয় পার্টি চাইছে আসনটি পুনরুদ্ধার করতে। তবে জোটের সমর্থন পাওয়ার আশায় নুরুজ্জামান। জেলার এই আসনটিতে ভালো ভোট আছে বিএনপিরও। আর তারাও বসে নেই। সবমিলিয়ে তিন দলের সম্ভাব্য প্রার্থীরাই নানা ভাবে চালিয়ে যাচ্ছেন গণসংযোগ।

গত নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রয়াত নেতা মজিবুর রহমান মনোনয়নপত্র কিনলেও শেষ পর্যন্ত জমা দেননি। আর বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন নুরুজ্জামান আহমেদ। প্রথমে পান খাদ্য প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব; পরে করা হয় সমাজকল্যাণ প্রতিমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বলছেন, নুরুজ্জামানের হাতে ধরেই এলাকায় উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। আর এ কারণে তার অবস্থান শক্তিশালী হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রীর বাবা প্রয়াত করিম উদ্দিন আহমেদ ১৯৭০ ও ১৯৭৩ সালে এখানে নির্বাচিত হয়েছিলেন। আর নুরুজ্জামান উঠে এসেছেন তৃণমূলের রাজনীতি করে। বেশ কয়েকবার তুষভা-ার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন তিনি। কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানও হন দুই বার।

১৯৯৬ সালে প্রথমবার নৌকা প্রতীক পেয়ে জাতীয় পার্টির মজিবুর রহমানের কাছে হেরে যান। ২০০১ সালে দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে লড়াই করেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে। কিন্তু আড়াই হাজারের কিছু বেশি ভোটে হেরে যান। ২০০৮ সালে জাতীয় পার্টিকে আসনটি ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ।

নুরুজ্জামান আহমেদ ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘নির্বাচন সম্পর্কে নতুন করে কিছু বলার নেই। শুধু দলীয় মনোনয়ন নয়, জোটগতভাবেও নির্বাচন হলে আমি মনোনয়ন পাব বলে বিশ্বাস করি’।

জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ব্যবসায়ী সিরাজুল হকও মনোনয়নপ্রত্যাশী। দুই বার আদিতমারী উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন তিনি। তবে সবশেষ উপজেলা নির্বাচনে হেরে যান বিএনপির কাছে।

সিরাজুল হক বলেন, ‘মনোনয়ন অবশ্যই চাই। তবে দল যে সিদ্ধান্ত দেবে, তাই তিনি মেনে নিবেন বলে জানিয়েছেন।’

জাতীয় পার্টির প্রার্থী ঘোষণা

এই আসনে জাতীয় পার্টির সম্ভাব্য প্রার্থী রোকন উদ্দিন বাবুল। দলীয় চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ জনসভা করে তাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন।

বাবুল জাতীয় পার্টিতে এসেছেন বিএনপি থেকে। তিনি ইউনিয়ন ও উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে একাধিকবার অংশ নিয়েও জিততে পারেননি।

বাবুল ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘এই আসনটি দির্ঘদিন ধরেই জাতীয় পার্টির ছিল। এখনো এখানকার মানুষ দলের সঙ্গেই আছে। তাই আগামী নির্বাচনে জয়ের লক্ষ্যে জাতীয় পার্টি কাজ করে যাচ্ছে।’

বিএনপিতে তিন নাম

জেলা বিএনপির জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি সালেহ উদ্দিন আহমেদ হেলাল ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি একতরফা নির্বাচনে জিতেন। এরপর আর দলের কেউ এখান থেকে জিততে পারেননি। আগামী নির্বাচনে তিনি প্রার্থী হতে আগ্রহী।

বিএনপিতে প্রার্থিতা নিয়ে অবশ্য দ্বন্দ্ব আছে। কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে কয়েক বছর ধরে জেলা বিএনপির সভাপতি আসাদুল হাবিব দুলুর সঙ্গে হেলালের কোন্দল রয়েছে। এই দ্বন্দ্ব মেটাতে না পারলে ভোটে প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে নেতা-কর্মীদের মধ্যে।

জানতে চাইলে ঢাকা টাইমসকে হেলাল বলেন, ‘আমি যুগ যুগ ধরে এ আসনের মানুষের সঙ্গে আছি, তাদের জন্য কাজ করছি। আগামী নির্বাচনেও আমি আবারও দলীয় মনোনয়ন পাবো বলে বিশ্বাস করি। আর নির্বাচনী মাঠে নেতাকর্মীরা সব কিছু ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবেই কাজ করবে।’

তবে হেলালের পাশাপাশি বিএনপি নেতা চন্দ্রপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলমও ধানের শীষ চান। উপজেলা নির্বাচনে তিনি বিএনপির হয়ে লড়ে হেরে যান।

দুলুর কাছের লোক হিসেবে পরিচিত জাহাঙ্গীর। ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘দল যেহেতু করি, তাই মনোনয়ন চাইব। মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারেও আমি আশাবাদী।’

বিএনপি নেতা প্রকৌশলী রাকিউল ইসলাম কামালও ভোটে আগ্রহী। তিনি নিজেকে তারেক রহমানে আস্থাভাজন হিসেবেই নিজেকে তুলে ধরছেন। বলেন, ‘আমাকে মনোনয়ন দিলে যুবসমাজের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন ঘটাব।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

রাজনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

রাজনীতি এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :