অবশেষে হারিয়ে যাওয়া কিশোরী বৃষ্টি ফিরে পেল স্বজন

ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
 | প্রকাশিত : ২৭ মে ২০১৯, ২৩:২১

অবশেষে হারিয়ে যাওয়া বৃষ্টি ফিরে পেল স্বজনদের। সোমবার রাতে ভৈরব পৌর মেয়র ফখরুল আলম আক্কাছ-এর নিকট হতে বৃষ্টির স্বজনরা মেয়েটিকে নিয়ে যান।

বৃষ্টির প্রকৃত নাম বৃষ্টি নয় বলে জানান তার পালিত অভিভাবক এবাদুল ইসলাম। কিশোরীর নাম হলো সায়মা (১৩)। সে মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার গঙ্গারামপুর গ্রামে সামসের ওরফে সামসুদ্দিনের মেয়ে।

২০০৯ সালে সায়মার মা রেহানা বেগমকে গলাটিপে হত্যা করে কিশোরীর বাবা সামসুদ্দিন। এ ঘটনার পর থেকে সে পলাতক রয়েছে। সায়মার একটি ছোট বোনও আছে। বোনটির নাম ফাতেমা বেগম। মাকে হত্যার পর বাবা পালিয়ে গেলে দুটি বোনই অসহায় হয়ে পড়ে। তার নানা-নানি এখনও জীবিত আছে, কিন্ত তারা দরিদ্র হওয়াই মায়ের মৃত্যুর পর সায়মাকে ৯ বছর আগে এলাকার প্রতিবেশী ঢাকার গার্মেন্টস ব্যবসায়ী এবাদুল ইসলামের বাসায় আশ্রয় দেন। ছোট বোনটিকে এবাদুলের অপর ভাইয়ের বাসায় একইভাবে পালক দেন।

এবাদুল ইসলামের তিন ছেলে ও এক মেয়ে থাকা সত্ত্বেও সায়মাকে নিজের মেয়ের মত আদর-স্নেহ দিয়ে লালন-পালন করেছেন। ব্যবসায়ী এবাদুল ইসলামের বাসায় মীম নামে একজন কাজের মেয়ে ছিল। কয়েকদিন আগে ব্যবসায়ীর বাসার আলমিরা থেকে আড়াই লাখ টাকা চুরি হয়। তারা সন্দেহ করে ওই কাজের মেয়েকে। গত ১৭ মে সকালে কাজের মেয়েটি কৌশলে পালিয়ে যায়।

এদিন বিকালে সায়মাও দোকানে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে পালিয়ে যায়। ঘটনার পর এবাদুল ইসলাম তাকে খুঁজে না পেয়ে রাতে মোহাম্মদপুর থানায় একটি জিডি করে।

এদিকে সায়মা পালানোর পরদিন গত ১৮ মে ঢাকার সায়দাবাদ বাসস্ট্যান্ড থেকে ভৈরব আসতে সে বাসে উঠে। এই বাসে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলার একটি স্কুলের মহিলা শিক্ষকও তার পাশের সিটে বসেন।

কিশোরী সায়মার চেহারা সুন্দর দেখে বাসে প্রতারকরা তার খোঁজ খবর নিতে জেরা করে। ঘটনাটি দেখে শিক্ষিকা মেয়েটিকে সহায়তা করতে এগিয়ে আসেন। বাসটি এদিন ভৈরব আসলে শিক্ষিকা ওই কিশোরীকে নিয়ে পৌর মেয়রের অফিসে যান।

ভৈরব পৌরসভার মেয়র ফখরুল আলম আক্কাছ সব ঘটনা শুনে ভৈরব থানা পুলিশকে অবহিত করে থানায় জিডি করার পর তার জিম্মায় সায়মাকে রেখে দেন। এরপর ঢাকাটাইমসসহ বিভিন্ন পত্রপত্রিকা ও অনলাইনে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। খবরটি দেখে ব্যবসায়ী এবাদুল ইসলাম এবং তার স্ত্রী মোমতাজ বেগম ও পুত্র বখতিয়ার আবিদ খানকে (পলাশ) নিয়ে সোমবার সকালে ভৈরব পৌরসভার মেয়রের অফিসে আসেন এবং কিশোরী সায়মার সব ঘটনা অবহিত করেন।

এ সময় এবাদুল ইসলাম জানান, ওই কিশোরীর নাম বৃষ্টি নয়, প্রকৃত নাম সায়মা।

এ বিষয়ে সায়মাকে জিজ্ঞাসা করলে কিশোরী জানায়, ভয়ের কারণে প্রকৃত নামটি বলেনি।

সায়মার খোঁজ পেয়ে তাকে নিতে আসলেও সে পালিত বাবার সঙ্গে যেতে আগ্রহী নয়। সে বারবার বলছিল, আমি এই বাসায় আর যাব না। বাসায় তাকে নির্যাতন করা হয় বলে কিশোরী অভিযোগ করে।

যদিও তার অভিযোগগুলো ব্যবসায়ী অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, তাকে আমার মেয়ের মতো আদর-স্নেহ দিয়ে ৯ বছর যাবত লালন-পালন করেছি।

(ঢাকাটাইমস/২৭মে/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :