বিছানায় ঘুমিয়ে পড়ল বন্যায় ভেসে আসা বাঘ

আন্তর্জাতিক ডেস্ক, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২১ জুলাই ২০১৯, ০৯:২০

বন্যার হাত থেকে বাঁচতে বন থেকে পালিয়ে স্থানীয় একটি বাড়ির ঘরে আশ্রয় নেয় একটি বাঘ। এরপর বিছানায় গা এলিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে সে। পরে অনেক চেষ্টার পর বাঘটিকে সেখান থেকে ভালোভাবে তাড়ানো গেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ভারতের আসামে।

ভারতের বন্যা-কবলিত আসাম রাজ্যের জঙ্গল থেকে একটি বাঘ স্থানীয় একটি বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়ে সেই বাড়ির খাটে শুয়ে আরাম করছিল। ধারণা করা হচ্ছে, স্থানীয় কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্ক থেকে সে চলে এসেছে। কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কে সাম্প্রতিক ব্যাপক বন্যায় ৯২টি প্রাণি মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

পরে বাঘটিকে নিরাপদে সরিয়ে নিতে সেখানে পৌঁছান বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ সংগঠনের কর্মকর্তারা। তারপর ব্যবস্থা গ্রহণ করেন তারা। বাঘটিকে জঙ্গলের পথের দিকে ঠেলে দেয়া হয়।

ওয়াইল্ড লাইফ ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার তথ্য অনুসারে, সেটি একটি মেয়ে বাঘ। তাকে প্রথম দেখা যায় বৃহস্পতিবার সকালে একটি মহাসড়কের কাছে, যে জায়গাটি ছিল জাতীয় উদ্যান থেকে ২০০ মিটার দূরত্বে।

ব্যস্ত সড়কের যানবাহন হয়ত তাকে বিরক্ত বোধ করিয়েছিল এবং এরপর সে মহাসড়কের কাছে অবস্থিত এক বাড়ির ভেতর ঢুকে পড়ে আশ্রয়ের খোজে।

রথিন বর্মণ, যিনি এই বাঘ উদ্ধার অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছেন, তিনি বলেন ওই বাঘিনী একটি দোকানের পার্শ্ববর্তী ওই বাড়িটিতে সকাল সাড়ে সাতটার দিকে ঢোকে এবং দিনের বেলা পুরোটা ঘুমিয়ে কাটায়। সে ছিল ভীষণ ক্লান্ত-পরিশ্রান্ত এবং দিনভর একটা ভালো ন্যাপ নিয়েছে সে।

কিন্তু জলজ্যান্ত এক বাঘ যাদের ঘরের ভেতর সেই বাড়ির মালিকের কী অবস্থা? বাড়ির মালিকের নাম মতিলাল। তিনিই নিকটবর্তী দোকানটির মালিক। বাঘটিকে তার বাড়ির ভেতর ঢুকতে দেখেই পরিবারের লোকজনকে নিয়ে তিনি ভয়ে পালিয়েছেন।

রথিন বর্মণ বলেন, ‘সবচেয়ে দারুণ বিষয় ছিল যেটি সেটা হলো যে, তার বিশ্রামে কেউ বাধা দিতে আসেনি। এই অঞ্চলের মানুষদের মাঝে বন্যপ্রাণীর প্রতি ব্যাপক শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা কাজ করে।’

বাড়ির মালিক মতিলাল বলেন, বাঘটি যে বিছানায় শুয়েছিল সেই বিছানার চাদর ও বালিশ তিনি যত্ন সহকারে তুলে রাখবেন।

বিছানা থেকে ঘুমন্ত বাঘকে তুলতে এক ঘণ্টার জন্য মহাসড়কের যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয় এবং আতশবাজি ফাটানো হয়। বাঘটি শেষপর্যন্ত স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বাড়িটি থেকে বেরিয়ে যায়, এরপর সে মহাসড়ক অতিক্রম করে এবং জঙ্গলের দিকে রওনা হয়। তবে রথিন বর্মণ বলেন, মেয়ে বাঘটি আসলেই জঙ্গলের ভেতরে ঢুকে গেছে নাকি সে আশেপাশের এলাকায় হাটাহাটি করেছে-সেটা নিশ্চিত নয়।

ইউনেস্কোর হিসেবে, কাজিরাঙ্গা ন্যাশনাল পার্কে ১১০টি বাঘের বসবাস, কিন্তু তাদের একটিও বন্যায় মারা যায়নি। এই পার্কের নিহত প্রাণীদের মধ্যে ৫৪টি হরিণ, সাতটি গণ্ডার, ছয়টি বুনো শূকর এবং একটি হাতী রয়েছে।

ভারী বর্ষণে সৃষ্ট বন্যার ফলে আসাম ও বিহার রাজ্যে ব্যাপকভাবে তাণ্ডবে শতাধিক মানুষের মৃত্যুসহ ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে এবং বাস্তুচ্যুত হয়েছে লাখ লাখ মানুষ।

ঢাকা টাইমস/২১জুলাই্/একে

সংবাদটি শেয়ার করুন

আন্তর্জাতিক বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

আন্তর্জাতিক এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :