গাজীপুরে ফ্যান কারখানায় ভয়াবহ আগুন, নিহত ১০

গাজীপুর প্রতিনিধি, ঢাকাটাইমস
| আপডেট : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ২২:৫২ | প্রকাশিত : ১৫ ডিসেম্বর ২০১৯, ১৯:৪৬

গাজীপু‌রে একটি ফ্যান তৈরির কারখানায় ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটেছে। এতে ১০ জন নিহত হয়েছেন। নিহতরা সবাই কারখানার শ্রমিক বলে নিশ্চিত করেছে ফায়ার সার্ভিস।

রবিবার সন্ধ্যায় সদর উপ‌জেলার বা‌ড়িয়া ইউ‌নিয়‌নের কেশোর্তা এলাকায় লাক্সারি ফ্যান তৈরির কারখানায় ওই আগুনের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিস এক ঘণ্টার বেশি সময়ের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

নিহতদের মধ্যে চারজনের নাম জানা গেছে। তারা হলেন- রংপুরের মো. ফরিদুল ইসলাম (১৮), গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মার্তা এলাকার রাশেদ (২৫), এলাকার মো. শামীম (২৬), স্থানীয় কেশরিতা এলাকার উত্তম (২৫)। আহতদের মধ্যে স্থানীয় আনোয়ার হোসেন ও গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মার্তা গ্রামের মো. হাসান নাম জানা গেছে।

দুর্ঘটনা তদন্তে ৫ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন আসেন পুলিশ সুপার, জেলা প্রশাসক, ফায়ার সার্ভিসের ডেপুটি ডাইরেক্টর বিগ্রেডিয়ার জেনারেল সাজ্জাদ হোসেন।

গাজীপুর ফায়ার সার্ভিসের উপ সহকারী পরিচালক মামুনুর রশিদ জানান, সন্ধ্যা ৬টার দিকে কারখানার তিনতলা ভবনের তৃতীয় তলায় আগুন লাগার খবর পান। পরে তাদের স্টেশনের চারটি ইউনিটের কর্মীরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ শুরু করেন। পৌণে ১ ঘণ্টার চেষ্টায় আগুন নেভানো হয়। পরে তৃতীয় তলায় ১০শ্রমিকের লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। প্রথমে তৃতীয় তলায় একটি দরজার কাছে আগুনের সূত্রপাত হলে শ্রমিকরা আত্মরক্ষায় ভেতরের দিকে চলে যায়। পরে মুহূর্তে আগুন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে শ্রমিকরা আটকা পড়েন। প্রাথমিক আলামত দেখে মনে হচ্ছে, ১০জনই ধোঁয়ায় শ্বাসরুদ্ধ হয়ে মারা গেছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণের পর তৃতীয় তলার কক্ষ থেকে ওই ১০শ্রমিককের লাশ উদ্ধার করা হয়। কয়েকজন আহত হলেও তাদের কাউকে ঘটনাস্থলে পাওয়া যায়নি।

তিনি আরো বলেন, আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির প্রকৃত পরিমাণ তাৎক্ষণিকভাবে জানা যায়নি। দুর্ঘটনার সময় সেখানে তখন ১৯জন শ্রমিক কাজ করছিলেন । কারখানার ভবনটি আবাসিক ভবন এবং তৃতীয় তলায় টিনসেডের অতিরিক্ত শেড ছিল। ভবনের মালিকের নাম মো. জাহিদ বলে জানা গেছে।

শহীদ তাউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক প্রণয় ভ’ষন দাস জানান, তার হাসপাতালে ওই ঘটনায় দ্বগ্ধ স্থানীয় কেশরিতা গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে আনোয়ার হোসেন (২০) ও জামুনা এলাকার আব্দুল মোতালেববের ছেলে মো. হাসান (১৯) ভর্তি আছেন।

তদন্ত কমিটি:

ঘটনার পর পর গাজীপুরের জেলা প্রশাসক এসএম তরিকুল ইসলাম ও জেলা পুলিশ সুপার শামসুন্নাহার ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের জানান, ঘটনা তদন্তে গাজীপুরের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক মো. শাহিনুর ইসলামকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠণ করা হয়েছে। কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়ার সময় দেয়া হয়েছে ৭ কার্যদিবস। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে নিহতদের প্রত্যেকের লাশ দাফনের জন্য ২৫হাজার করে টাকা প্রদানের ঘোষণা দেন জেলা প্রশাসক। এছাড়া শ্রম মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে নিহতের স্বজনদের ৫০ হাজার টাকা করে ক্ষতি পূরণ দেয়া হবে।

এর আগে গত ১১ ডিসেম্বর বিকালে কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় প্রাইম পেট অ্যান্ড প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড কারখানায় ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত মোট ১৭ জনের মৃত্যু হয়েছে। দগ্ধ হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন আরও বেশ কয়েকজন।

(ঢাকাটাইমস/১৫ডিসেম্বর/জেবি)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :