শাহ মখদুম মেডিকেলে অনুমোদন ছাড়া ভর্তি, বিপাকে শিক্ষার্থীরা

বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের (বিএমডিসি) অনুমোদন ছাড়াই শিক্ষার্থী ভর্তি করেছে রাজশাহীর বেসরকারি শাহ মখদুম মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ। তাই শিক্ষার্থীরা এমবিবিএস পাস করলেও অনুমোদন না থাকায় ইন্টার্নশিপ করতে পারছেন না। ফলে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থীর স্বপ্ন ভেঙে চুরমার হতে চলেছে।
প্রতিষ্ঠানটির হতাশাগ্রস্ত শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা শনিবার দুপুরে নগরীর রেলগেট এলাকায় প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। রবিবার ক্যাম্পাসে তারা ক্লাস বর্জন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেন।
শিক্ষার্থীরা জানান, সাত বছর ধরে প্রতিষ্ঠানটিতে ধারাবাহিকভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করা হলেও এখনো বিএমডিসির অনুমোদন মেলেনি। ফলে চারজন শিক্ষার্থী এমবিবিএস পাস করলেও ইন্টার্নশিপ করতে পারছেন না।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, এই কলেজের প্রথম ব্যাচের শিক্ষার্থীদের মধ্যে চারজন এমবিবিএস পাস করেন গত বছরের মার্চে। কিন্তু কলেজটির বিএমডিসির অনুমোদন না থাকায় ওই শিক্ষার্থীরা গত এক বছর ধরে ইন্টার্নশিপ করতে পারছেন না। এতে করে তারা প্র্যাক্টিস করারও অনুমতি পাচ্ছেন না। এমনকি পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসকের স্বীকৃতিও পাচ্ছেন না। ওই চার শিক্ষার্থী হলেন- মামুনুর রশিদ, রুমা খাতুন, আলী জিন্নাহ ও মৌ খাতুন।
এখন পর্যন্ত মোট সাতটি ব্যাচে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী ভর্তি করা হয় কলেজটিতে। এর মধ্যে প্রথম দুই ব্যাচ ও চতুর্থ ব্যাচে ২৫ জন করে এবং পরবর্তীতে ৫০ জন করে শিক্ষার্থী ভর্তির অনুমোদন মেলে। তবে কলেজটিতে শুরু থেকেই অনুমোদন না থাকা, শিক্ষক সংকট এবং হাসপাতালে রোগী না থাকায় আসন ফাঁকা থেকে যায়। ফলে এখন পর্যন্ত অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রায় ২০০ শিক্ষার্থী রয়েছেন কলেজটিতে।
কলেজের এমবিবিএস পাস করা শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ বলেন, নানা সংকটের মধ্যেও আমি গত বছর ১২ মার্চ এমবিবিএস পাস করেছি। কিন্তু কেন ইন্টার্নশিপ করতে পারছি না, সেটি জানতে বারবার কলেজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছে গিয়েছি। কিন্তু তারা আমাকে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। উল্টো আমাকেই নানাভাবে হুমকি দেয়া হয়েছে, যেন আমি বিষয়টি নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি না করি।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বিএমডিসির অনুমোদন পেতে কর্তৃপক্ষ যেন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করে তার জন্য তারা আন্দোলন শুরু করেছেন। তাদের দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবেন না।
জানতে চাইলে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনিরুল ইসলাম স্বাধীন বলেন, বিএমডিসির অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে। তারা পরিদর্শন করেছে। কিছু শর্ত দিয়েছে। সেগুলো পূরণের চেষ্টা চলছে। হয়তো দ্রুত আমরা অনুমতি পেয়ে যাব। তবে কিছু শিক্ষার্থী হয়তো কারো দ্বারা প্ররোচণায় আন্দোলনে যাচ্ছে। তারপরেও তারা তাদের ন্যায্য দাবি উত্থাপন করতেই পারে। আমরা বিষয়টি দেখছি।
(ঢাকাটাইমস/৯ফেব্রুয়ারি/কেএম/এলএ)

মন্তব্য করুন