নরসিংদীতে গুলিবিদ্ধ ছাত্রদল নেতা ইসমাইল হোসেনের ঢাকায় মৃত্যু

গুলিবিদ্ধ হয়ে টানা ছয়দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে অবশেষে মারা গেলেন নরসিংদীর পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ইসমাইল হোসেন। শনিবার দুপুর ২টায় রাজধানীর হোমকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

ইসমাইলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালটির দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. মো. আশরাফুজ্জামান সজিব।

সূত্রে জানা গেছে, গত ১৫ জুন সন্ধ্যায় পলাশ বাসস্ট্যান্ডসংলগ্ন বিএডিসি এলাকায় নরসিংদী জেলা বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির গ্রুপের অনুসারীদের গুলিতে আহত হন ইসমাইল হোসেন। পরে গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ইসমাইলকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে চিকিৎসকরা তাকে আইসিইউতে স্থানান্তরের পরামর্শ দেন। কিন্তু ঢামেকে আইসিইউ বেড খালি না থাকায় পরিবার বাধ্য হয়ে বিভিন্ন হাসপাতালে ছুটোছুটি শুরু করে।

অবশেষে ১৮ জুন দুপুর ১২টা ৫ মিনিটে তাকে নিউমার্কেট থানাধীন হোমকেয়ার হাসপাতালের আইসিইউতে রাখা হউ তাকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজ দুপুর ২টায় ইসমাইল মৃত্যুবরণ করেন।

এ বিষয়ে নিউমার্কেট থানার উপপরিদর্শক মো. আব্দুল কাদির শাহ্ বলেন, মামলার ভিকটিম চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। মৃত্যুর ঘটনা নথিভুক্ত করে পরবর্তী আইনানুগ কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ইসমাইলের মৃত্যুতে পরিবারে শোকের মাতম নেমে এসেছে। তার পরিবারের সদস্যরা এই ঘটনার বিচার দাবি করেছেন এবং মামলার আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

এদিকে একই ঘটনায় সোহেল মিয়া নামের আরেক বিএনপির কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তার শারিরীক অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে জানা গেছে। এ ঘটনায় গত ১৬ জুন পলাশ থানায় একটি মামলা দায়ের হয়েছে।

নিহতের বাবা আব্দুর রহিম ভুঁইয়া জানান, শনিবার বেলা ২ টার দিকে রাজধানীর ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার ছেলের মৃত্যু হয়েছে। ময়নাতদন্তের পর আমাদেরকে মরদেহ হস্তান্তর করা হবে এবং আজই জানাজা শেষে গ্রামের বাড়িতে তার দাফন করা হবে। আমার ছেলের হত্যার বিচার ও জড়িত আসামিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানাই।

পলাশ উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. নাজমুল হোসেন সোহেল জানান, ইসমাইল ছাত্রদলের অন্যতম সদস্য ছিলেন। আমাদের ছাত্রদলের শান্তিপূর্ণ মিছিলে জেলা বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল কবির জুয়েল ও তার লোকজন গুলিবর্ষণ করে। এতে ইসমাইল গুলিবিদ্ধ হয়ে ৬ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার পর আজ মারা যায়। এ ঘটনার যেন বার বার পুনরাবৃত্তি না হয় সেজন্য তার গ্রেপ্তারসহ দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

পলাশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনির হোসেন বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, গুলিবিদ্ধ ঈসমাইল হোসেন মারা গেছেন। তবে, আনুষ্ঠানিকভাবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আমাদেরকে এখনো জানায়নি। বিষয়টি জানানোর পর পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

(ঢাকাটাইমস/২১জুন/এলএম/এসএ)