ওয়াইফাই সিগন্যাল পেতে ১.৬ কি.মি. পথ পাড়ি দেয় কিশোর

করোনাভাইরাসের সংক্রমণে ঠেকাতে পৃথিবীর বেশির ভাগ দেশে চলছে লকডাউন। অফিস-আদালতের পাশাপাশি বন্ধ স্কুল-কলেজও। ফলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবনে ভাটা পড়েছে। যদিও অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অনলাইনে ক্লাশ নিয়ে পুষিয়ে দিচ্ছে। সেজন্য প্রয়োজন ইন্টারনেট সংযোগ এবং ডিভাইস। ডিভাইস থাকলেও অনেকেরই নেই ইন্টারনেট সংযোগ। এমনই একজন ইতালির ১২ বছর বয়সী গুইলিও গিওভানি। যার বাসায় ইন্টারনেট সংযোগ নেই। তাই সে ইন্টারনেট সংযোগ পাওয়ার জন্য ১.৬ কিলোমিটার পথ হেঁটে রোজ বাড়ি থেকে একটা গাছের নিচে যায়। যেখানে গেলে মেলে ওয়াইফাই সিগন্যাল। ল্যাপটপ নিয়ে সেখানে হাজির হয়ে অংশ নেয় অনলাইন ক্লাশে। পড়াশোনার প্রতি তার এই নিবেদন রীতিমতো সাড়া ফেলেছে সারা পৃথিবীতে।
আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের বিভিন্ন খবর মারফত জানা যায়, গুইলিও গিওভানি ইতালির একটি গ্রামের শেষভাগে বাস করে। গ্রামের পাশেই শহর। সেই শহর থেকে আসা ফ্রি ওয়াইফাই সিগন্যাল ধরার জন্য রোজ সে ১.৬ কিলোমিটার হেঁটে যায়। সঙ্গে নেয় ল্যাপটপ, স্পিকার এবং চেয়ার টেবিল। পাহাড়ি পথ, ফসলের ক্ষেত এবং ফলের বাগান পেরিয়ে সে এতটা পথ পাড়ি দেয়। সেখানে পৌঁছে সে একটি গাছের নিচে চেয়ার টেবিল পাতে। চালু করে কম্পিউটার। মাথার উপর তখন গনগনে রোদ। এসব উপেক্ষা করেই সে অনলাইনে ক্লাশে অংশ নিয়ে তার পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে।
গুইলিও গিওভানির যে গ্রামে বাস করে তার নাম টুসকান। সেখানে ইন্টারনেট সংযোগ নেই।
রয়টার্সকে গুইলিও গিওভানি জানায়, তার মাকে সঙ্গে নিয়ে গ্রাম থেকে পাহাড়ি পথে হেঁটে যায় তারা। হেঁটে গিয়ে ওই নির্দিষ্ট জায়গায় পৌঁছায়। সঙ্গে তার বইপত্র সমেত ব্যাগও থাকে।
গুইলিও গিওভানির মা জানায়, তাদের গ্রামে ইন্টারনেট তো দূরে থাক মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্কও নেই। তার ছেলেকে সে উৎসাহিত করে অনলাইন ক্লাশে অংশ নেয়ার। এজন্য অবশ্য সে অনেকটাই পরিশ্রম করে। এতে তার মায়ের খেঁদ নেই। বরং তিনি তার ছেলের আগ্রহকে উৎসাহিত করেন।
গুইলিও গিওভানি স্কুলের মাঝামাঝি শ্রেণীর শিক্ষার্থী। সে ওই শ্রেণীর প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। করোনাভাইরাসের কারণে যে লকডাউনে চলছে তাতে তার পড়াশোনায় ভাটা পড়েছে। তাই সে রোজ অনলাইনে ক্লাশে অংশ নিয়ে নিজেকে হালনাগাদ রাখছে।
যদিও গুইলিও গিওভানি স্কুলেও যেতেই বেশি পছন্দ করে। কেননা, স্কুলে বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয়ার সুযোগ মেলে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে স্কুল বন্ধ।
গুইলিও গিওভানির মা জানান, তিনি অচিরেই মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছেন।
(ঢাকাটাইমস/১৯এপ্রিল/এজেড)

মন্তব্য করুন