ঘরমুখো মানুষের ‘আসল ভিড়’ দেখছে সদরঘাট

ঢাকা টাইমস ডেস্ক
  প্রকাশিত : ৩১ জুলাই ২০২০, ১২:২৮| আপডেট : ৩১ জুলাই ২০২০, ১৫:৩৬
অ- অ+

ঈদুল আজহার একদিন আগে শেষ মুহূর্তে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে ঘরমুখো মানুষের উপচেপড়া ভিড় দেখা গেছে। যাত্রীদের ভিড় থাকায় টার্মিনালে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। আর টার্মিনাল এলাকায় কুলিদের দৌরাত্ম্য ও যানজটের কারণে দক্ষিণাঞ্চলগামী যাত্রীরা নানা দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন। শত শত নারী-পুরুষ মালামাল ও পরিবার-পরিজন নিয়ে টার্মিনালে অপেক্ষা করছেন। যাত্রীদের ভিড় থাকায় পন্টুনে তিল ধারণের ঠাঁই নেই।

সদরঘাট টার্মিনাল সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার ভোর ছয়টা থেকে দক্ষিণাঞ্চলগামী শত শত নারী-পুরুষ তাঁদের পরিবার-পরিজন ও মালামাল নিয়ে টার্মিনালে আসতে থাকেন। করোনাভাইরাসকে উপেক্ষা করে সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে বাড়তে থাকে ঘরমুখো মানুষের ভিড়। সরকারের পক্ষ থেকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ পরিচালনার নির্দেশনা থাকলেও তা পুরোপুরি পালন করতে দেখা যায়নি লঞ্চ মালিক ও যাত্রীদের। দুপুর ১২টার পর টার্মিনাল এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে গিয়ে মাস্কের সঠিক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি অর্ধেকের বেশি যাত্রীকে।

করোনা সংক্রমণ ঠেকাতে গত ঈদে সদরঘাট ছিল একেবারেই ফাঁকা। এবার সেই দৃশ্য থেকে ফিরে এসেছে আগের আসল রূপে। করোনার আগে অন্যান্য ঈদে সদরঘাটে ঘরমুখো মানুষের যে উপচেপড়া ভিড় দেখা যেতো এবারের ঈদে অনেকটা সেই রুপের দেখা গেছে সদরঘাটে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত যাত্রীবহন করছে লঞ্চগুলো। লঞ্চের ছাদেও যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। কিছু লঞ্চের প্রবেশ পথে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করতে দিলেও অনেকেই তা মানছেন না। বেশিরভাগ যাত্রীদের মাস্ক ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। অনেককে আবার নাক-মুখ না ঢেকে থুতনি বা কানের সঙ্গে মাস্ক ঝুলিয়ে রাখতে দেখা গেছে। কেউ কেউ আবার লঞ্চের প্রবেশ পথে মাস্ক পরলেও পরে খুলে ফেলছেন। লঞ্চের ডেকের যাত্রীদের গাদাগাদি করে বসে থাকতে দেখা গেছে।

মানুষের ভিড়ে সদরঘাট টার্মিনালের পন্টুনে তিল পরিমাণ জায়গাও ফাঁকা নেই। ফলে টার্মিনালের মধ্যে সামাজিক দূরত্ব কোনোভাবেই বজায় রাখা যাচ্ছে না। বেশিরভাগেরই মাস্ক থাকলেও সেটি সঠিকভাবে ব্যবহার করতে দেখা যায়নি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে লঞ্চ চলাচল নিশ্চিত করার সর্বাত্মক চেষ্টা করছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী৷ স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারি নির্দেশনা মানতে যাত্রী, লঞ্চ মালিক ও শ্রমিকদের সচেতনতা বাড়াতে কাজ করছে তারা। বিআইডব্লিউটিএ বারবার শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলাচল ও মাস্ক না পড়লে লঞ্চে না উঠতে দেওয়ার জন্য মাইকিং করলেও তা মানতে দেখা যায়নি যাত্রীদের।

এদিকে দূরপাল্লার লঞ্চ স্বাভাবিক সময়ে সন্ধ্যা থেকে সদরঘাট থেকে ছেড়ে যায়। কিন্তু অতিরিক্ত যাত্রীর চাপে সকাল থেকেই ভোলা, বরিশাল, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুরের উদ্দেশে লঞ্চ ছেড়ে যেতে দেখা গেছে। ভোরে যেসব যাত্রীর মুখে মাস্ক ছিল না, তাদেরকে সদরঘাটে ঢুকতে বাধা দেওয়া হলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যাত্রীদের চাপ বাড়ায় সেটা আর সম্ভব হচ্ছে না। একইসঙ্গে জীবাণুনাশক ব্যবহারে যাত্রীদের অনীহা দেখা গেছে।

ভোলাগামী গ্রীন লাইন-২ এর এক কর্মচারী নাম প্রকাশ না করা শর্তে বলেন, এখন কোনো নিয়ম মানা হচ্ছে না। আমাদের লঞ্চ ফুল এসি। একটি সিট পর পর যাত্রীদের বসার কথা থাকলেও কোনো সিট ফাঁকা নেই। লঞ্চের সামনে ফাঁকা স্থানেও যাত্রীরা চাদর পেতে বসে আছেন। না করার পরও তারা জোড় করে উঠে পড়ছেন, বলছেন পরিবারের সঙ্গে ঈদ করব, এখন যেতে না পারলে ঈদ করা হবে না। লঞ্চে ওঠার সময় স্যানিটাইজার ব্যবহার ও মাস্ক পরা নিশ্চিত করলেও পরে আর কোনো কিছু লক্ষ্য করা হচ্ছে না।

চাঁদপুর রুটের সোনারতরী-৩ লঞ্চের চালক জাহিদুল ইসলাম বলেন, ঈদের কারণে লঞ্চ চলাচলে আমরা সরকারের সব নির্দেশনা মানতে পারছি না। লঞ্চে ওঠার সময় যাত্রীদের স্যানিটাইজার ব্যবহারে বাধ্য করা গেলেও মাস্ক পরা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। যাত্রীরা ওঠার সময় মাস্ক পড়ছেন, কিন্তু লঞ্চে উঠে মাস্ক খুলে ফেলছেন। বারবার বলার পরও মানছেন না। বলতে গেলে চড়াও হন আমাদের ওপর। যাত্রীদের অতিরিক্ত চাপ তাই, লঞ্চের ডেক, কেবিনে তিল পরিমাণ জায়গাও ফাঁকা নেই। এজন্য না করা সত্যেও কিছু যাত্রী ছাদে উঠে গেছেন।

ঢাকাটাইমস/৩১জুলাই/এমআর

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
জামায়াত নেতা আ জ ম ওবায়দুল্লাহ আর নেই
মোহাম্মদপুর থেকে নারী কাউন্সিলর মাহফুজা আক্তার গ্রেপ্তার
বিএনপির বিরুদ্ধে সব ষড়যন্ত্রের জবাব দেবে তৃণমূল: অধ্যক্ষ সেলিম ভূঁইয়া
অপারেশন সিঁদুরে এক শর বেশি ‘সন্ত্রাসবাদী’ নিহত, দাবি ভারত সেনাবাহিনীর
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা