চিকিৎসায় অবহেলা: ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের সনদ ৫ বছরের জন্য স্থগিত

চিকিৎসায় অবহেলার কারণে দেশের খ্যাতনামা লিভার বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ডা. মামুন আল মাহতাব স্বপ্নীলের চিকিৎসা সনদ পাঁচ বছরের জন্য স্থগিত করেছে বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি)। এর ফলে আগামী পাঁচ বছর তিনি চিকিৎসা পেশায় নিয়োজিত থাকতে পারবেন না। একইসঙ্গে আরও ১৩ চিকিৎসকের সনদও ৬ মাস থেকে ৪ বছর পর্যন্ত বিভিন্ন মেয়াদে স্থগিত করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ধানমন্ডির ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গিয়ে অন্তত দুজন রোগীর মৃত্যুর ঘটনায় ডা. স্বপ্নীলের বিরুদ্ধে গুরুতর অবহেলা ও গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেছে।
২০২৩ সালের ৯ নভেম্বর সুনামগঞ্জের ছাতক উপজেলার এলজিইডি প্রকৌশলী আফসার আহমেদ ল্যাবএইড হাসপাতালে মারা যান। তিনি অধ্যাপক স্বপ্নীলের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন এবং সেদিন অ্যান্ডোস্কপি করাতে গিয়েই মৃত্যুবরণ করেন।
সাড়ে চার মাস পর আফসার আহমেদের ভাই খায়রুল বাশার চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ করেন ডা. স্বপ্নীল ও ল্যাবএইড কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে।
এরপর ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে একই হাসপাতালে অ্যান্ডোস্কপি করাতে গিয়ে মারা যান জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী রাহিব রেজা। এই ঘটনার তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ডা. স্বপ্নীল ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে সরাসরি দায়ী করে।
বিএমডিসি এই দুই ঘটনার প্রেক্ষিতে তদন্ত শেষে সিদ্ধান্ত নেয় ডা. স্বপ্নীলের চিকিৎসা অনুশীলনের অনুমতি আগামী ৫ বছরের জন্য স্থগিত থাকবে।
বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা জানান, “সনদ স্থগিতের সিদ্ধান্ত অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং দীর্ঘ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নেওয়া হয়েছে। রোগী অধিকার রক্ষায় এটাই সময়োপযোগী ও ন্যায়সঙ্গত পদক্ষেপ।”
তিনি আরও বলেন, “চিকিৎসা পেশার মর্যাদা রক্ষা করতে হলে চিকিৎসকদের দায়িত্বজ্ঞান ও মানবিকতা একান্ত জরুরি।”
দেশের চিকিৎসা মহলে এই সিদ্ধান্ত ব্যাপক আলোড়ন তুলেছে। কারণ, অধ্যাপক স্বপ্নীল দীর্ঘদিন ধরে লিভার রোগ ও হেপাটাইটিস-বি নিয়ে কাজ করছেন এবং আন্তর্জাতিক পর্যায়েও তার পরিচিতি রয়েছে। তবে বিএমডিসি বলছে, রোগীর জীবন ও নিরাপত্তার প্রশ্নে কোনো আপস করা হবে না। এ ধরনের অবহেলা ও গাফিলতির বিরুদ্ধে ভবিষ্যতেও কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে।
(ঢাকাটাইমস/২৮ জুন/আরজেড)

মন্তব্য করুন