নথিপত্র ছাড়া বিদেশি ব্যাংক থেকে লোন পাইয়ে দেওয়ার ফাঁদে নিঃস্ব অনেকে

বিদেশি ব্যাংক থেকে বিনা ডকুমেন্টে ও সহজ শর্তে ৫০ কোটি টাকার ঋণ পাইয়ে দেওয়ার লোভনীয় প্রলোভনে পড়ে দুই কোটি ছয় লাখ টাকা হারিয়েছেন দিনাজপুরের একজন শিল্পোদ্যোক্তা। চাঞ্চল্যকর এই প্রতারণার ঘটনায় জড়িত দুই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন—পিবিআই।
অভিযুক্তরা হলেন—সফিকুল ইসলাম ও ড. সিপার আহমেদ। রাজধানীর পল্লবী ও বনানী এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করে পিবিআই।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরে পিবিআই সদরদপ্তরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সংস্থাটির অতিরিক্ত উপ-মহাপরিদর্শক এনায়েত হোসেন মান্নান।
তিনি জানান, ভুক্তভোগী নুর আমিন শাহ চিরিরবন্দর থানার এম এইচ ব্রিক ফিল্ড ও অটো রাইস মিলের মালিক। ব্যবসা সম্প্রসারণে বড় অংকের টাকার প্রয়োজন হলে পরিচিত ব্যবসায়ী খন্দকার শাহ্ আলম তাকে সফিকুল ইসলামের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন। সফিকুল নিজেকে বিদেশি ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে জানান, মাত্র ৫ শতাংশ সুদে বিনা ডকুমেন্টে ৫০ কোটি টাকা লোন পাইয়ে দিতে পারবেন। পরে ঢাকায় এসে বনানীর একটি পাঁচ তারকা হোটেলে সফিকুলের সঙ্গে দেখা করেন নুর আমিন, সঙ্গে ছিলেন শাহ্ আলমও।
সেখানেই সফিকুল তার ‘বস’ হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেন ড. সিপার আহমেদকে, যিনি নিজেকে বেসিক ব্যাংকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং বিভিন্ন দেশি-বিদেশি ব্যাংকের সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করেন। এরপর ধাপে ধাপে কমিশন ও খরচের কথা বলে বিকাশ, নগদ ও ব্যাংক অ্যাকাউন্টে মোট দুই কোটি ছয় লাখ টাকা নেয় প্রতারক চক্রটি।
এমনকি জাইকা থেকে এতিমখানার জন্য ৭ কোটি টাকা অনুদান এনে দেওয়ার নামে ভুক্তভোগীর কাছ থেকে বিভিন্ন ব্যাংকের ৮টি স্বাক্ষরিত চেকও নেয় তারা।
পিবিআই জানায়, ড. সিপার আহমেদ আসলে বেসিক ব্যাংক ও প্রাইম এশিয়া ইউনিভার্সিটির চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা এবং তার বিরুদ্ধে দুদকে ২৬টি মামলা চলমান রয়েছে। তিনি প্রতারক চক্রের অন্যতম মাস্টারমাইন্ড হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে সাবেক পরিচয় ব্যবহার করে প্রতারণা চালিয়ে আসছিলেন।
আসামিদের কাছ থেকে চারটি মোবাইল, একটি গাড়ি, আটটি সিম, ভুয়া চুক্তিপত্র, ১৩টি চেক ও ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথোপকথনের ভয়েস রেকর্ড উদ্ধার করেছে পিবিআই।
পিবিআই বলছে, এই ধরনের প্রতারণা চক্র দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সক্রিয় রয়েছে। তদন্তে আরও ভুক্তভোগী ও জড়িতদের শনাক্তে কাজ চলছে।
(ঢাকাটাইমস/২৬জুন/এলএম)

মন্তব্য করুন