সেতুতে উঠতে ভরসা বাঁশের সাঁকো
যানবাহন ও পথচারী চলাচল নির্বিঘ্ন করতে দুই বছর আগে নির্মাণ করা হয় পাকা সেতুটি। কিন্তু সেতুতে ওঠার জন্য নেই কোনো সংযোগ সড়ক। অগত্যা সেতু পার হওয়ার জন্য স্থানীয়রা দুই পাশে তৈরি করেছেন বাঁশের সাঁকো। এই বাঁশের সাঁকো দিয়ে পায়ে হেঁটে সেতুতে ওঠা গেলেও কোনো যানবাহন পারাপার সম্ভব নয়। এতে সেতু নির্মাণের মূল উদ্দেশ্য যেমন ব্যাহত হচ্ছে, তেমনি সাঁকোর খরচ বাবদ টাকা গুণতে হচ্ছে পথচারীদের।
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের ঘাটাবাড়ি এলাকায় রূপসী-পাকুরতলা সড়কে এ সেতুর অবস্থান। ঝুঁকি নিয়ে বাঁশের সাঁকো পার হয়ে সেতুতে উঠতে বৃদ্ধ, নারী ও শিশুদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। এভাবেই শত শত মানুষ প্রতিদিন হাট-বাজার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাওয়া-আসা করে থাকেন।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের অর্থায়নে ৩০ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫৭ টাকা ব্যয়ে ৪০ ফুট দৈর্ঘের কংক্রিট সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু দুই পাশের সংযোগ সড়ক না থাকায় উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের জালালপুর, ঘাটাবাড়ি, পাকুরতলা, বাঐখোলা ও কুঠিরপাড়ার পাঁচ গ্রামের মানুষ প্রতিদিন ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো পেরিয়ে সেতু পার হচ্ছেন।
ওই সেতু দিয়ে চলাচলকারী জালালপুর গ্রামের আসাদ আলী, পাকুরতলা গ্রামের আব্দুল হামিদ, দুলাল শেখ, রবি চান ও আলম শেখ বলেন, দুই বছর ধরে আমরা যাতায়াতে চরম ভোগান্তি পোহাচ্ছি। বিশেষ করে বৃদ্ধ ও স্কুলগামী শিশুদের যাতায়াত খুবই ঝুঁকিপূর্ণ।
স্থানীয়রা আরও জানান, সেতুটি নির্মাণের পর দায়সারাভাবে সামান্য মাটি ফেলা হয়। ফলে বর্ষার শুরুতেই তা ভেঙে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। এরপর দুই বছর ধরে স্থানীয়রা এ সেতুর দুই পাশে বাঁশের সাঁকো তৈরি করা করেছেন। সাঁকো পেরিয়ে সেতুতে ওঠার জন্য তাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে টাকা।
কুঠিরপাড়ার মুদি দোকানদার আমজাদ আলী বলেন, দুই বছর ধরে এ সেতুতে সংযোগ সড়ক না থাকায় সরাসরি কোনো যানবাহন চলাচল করতে পারে না। ধান, চালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস ও ভারি বোঝা মাথায় করে নিয়ে পার হতে হয়। এতে আমাদের খুবই কষ্ট হয়। এজন্য সেতুর দুই পাশে সংযোগ সড়ক নির্মাণের জোর দাবি পাঁচ গ্রামের মানুষের।
জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান সুলতান মাহমুদ জানান, সেতুটি নির্মাণের পর মাটি ভরাট করা হয়েছিল। কিন্তু বন্যার পানির চাপে তা ভেঙে গেছে। ফলে এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। বন্যার পানি নেমে গেলে আবারও মাটি ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করা হবে।
শাহজাদপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ জানান, সেতু পার হতে টাকা তুলছে এমন বিষয় আমার জানা নেই। সেতুটি নির্মাণের পর মাটি ভরাট করা হয়েছিল। কিন্তু বন্যার পানির তীব্র চাপে তা ভেঙে গেছে। পানি সরে গেলে অতিদ্রুত মাটি ভরাট করে চলাচলের উপযোগী করে দেয়া হবে।
(ঢাকাটাইমস/০৩নভেম্বর/প্রতিনিধি/কেআর)