উন্নয়নশীল দেশ হওয়ার যোগ্যতা অর্জন বাংলাদেশের

স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণে চূড়ান্ত সুপারিশ পেয়েছে বাংলাদেশ। নিউইয়র্কের স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসির ৫ দিনব্যাপী বৈঠকের সমাপনী দিনে এলডিসি থেকে বেরিয়ে বাংলাদেশের উন্নয়নশীল দেশে পদার্পণের সুপারিশ করা হয়।
এর ফলে জাতিসংঘের বিচারে চূড়ান্তভাবে স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি থেকে বের হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বাংলাদেশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে প্রস্তুতির জন্য দুই বছর বাড়তি সময় দেওয়ার সুপারিশের সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়। ফলে আগামী ২০২৬ সালে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হতে আর কোনো বাধা রইলো না।
স্বল্পোন্নত দেশগুলোর (এলডিসি) মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকের ভিত্তিতে কোনো দেশকে এলডিসি থেকে উত্তরণের সুপারিশ করে জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি)। বাংলাদেশের পাশাপাশি নেপাল, ভুটান ও লাওস চূড়ান্তভাবে এলডিসি থেকে বের হওয়ার স্বীকৃতি পেয়েছে।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ হলে বিশ্ববাজারে বাংলাদেশ এখন যে শুল্কমুক্ত বাজার সুবিধা, ওষুধ খাতে সুবিধা, মেধাস্বত্ব সুবিধাসহ অন্য যেসব সুবিধা পাচ্ছে সেগুলো পর্যায়ক্রমে প্রত্যাহার করা হবে। তবে কিছু চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে পারলে বিনিয়োগকারী আকর্ষণ, ক্রেডিটরেটিংয়ে উন্নয়ন, বিশ্বদরবারে মর্যাদা বৃদ্ধিসহ নানা ক্ষেত্র তৈরি হবে।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বের হওয়ার যোগ্যতাসূচকে (মাথাপিছু আয়, মানবসম্পদ ও অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা) ২০১৮ সালে বাংলাদেশ প্রয়োজনীয় মান অর্জন করে। এ বছর পর্যালোচনার মানদণ্ডে আন্তর্জাতিক পদ্ধতির হিসাবে গড় মাথাপিছু আয়ের প্রয়োজন এক হাজার ২২২ ডলার। গত বছর শেষে বাংলাদেশের গড় মাথাপিছু আয় দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৮২৭ ডলার।
মানবসম্পদ সূচকে ৬৬ বা তার বেশি স্কোর থাকতে হবে। এক্ষেত্রে ২০২০ সাল শেষে স্কোর দাঁড়িয়েছে ৭৫ দশমিক ৩। প্রয়োজনের চেয়ে বেশি পয়েন্ট রয়েছে বাংলাদেশের। অর্থনৈতিক ভঙ্গুরতা সূচকে ৩২ বা তার কম স্কোর থাকতে হবে। বাংলাদেশের স্কোর ২৭ দশমিক ৩। তিনটি সূচকেই প্রয়োজনীয় স্কোর তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।
প্রস্তুতির এই সময়ে বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ হিসেবে প্রাপ্ত সব সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতে পারবে। তাছাড়া বর্তমান নিয়মে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশ ২০২৬ সালের পর আরও তিন বছর অর্থাৎ ২০২৯ সাল পর্যন্ত শুল্কমুক্ত সুবিধা পাবে।
স্বল্পোন্নত দেশ (এলডিসি) থেকে বের হতে দ্বিতীয় দফায় জাতিসংঘের আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনার মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। ২২-২৫ ফেব্রুয়ারি জাতিসংঘের কমিটি ফর ডেভেলপমেন্ট পলিসি (সিডিপি) এলডিসিগুলোর জন্য ত্রিবার্ষিক পর্যালোচনা বৈঠক করে। সিডিপি দ্বিতীয় দফায় এলডিসি থেকে বের হওয়ার প্রয়োজনীয় মানদণ্ড বাংলাদেশ পূরণ করতে পেরেছে কিনা তা নিয়ে পর্যালোচনা হয়। বাংলাদেশের পক্ষে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল অংশ নেন।
প্রথম দফায় ২০১৮ সালের মার্চে বাংলাদেশ এলডিসি থেকে বের হওয়ার যোগ্য হিসেবে সিডিপির সুপারিশ লাভ করে। নিয়ম হচ্ছে এলডিসি থেকে বের হতে সিডিপির পরপর দুটি পর্যালোচনায় উত্তরণের স্বীকৃতি পেতে হয়।
এ স্বীকৃতি পাওয়ার পর আরো তিন বছর এলডিসি হিসেবে থাকে একটি দেশ। তারপর উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে যাত্রা শুরু হয়। এ তিন বছরকে এলডিসি থেকে বের হওয়ার প্রস্তুতির সময় ধরা হয়। সে অনুযায়ী বাংলাদেশের ২০২৪ সালে এলডিসি থেকে বের হওয়ার কথা। কিন্তু বাংলাদেশ সম্প্রতি অনুষ্ঠিত স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ সম্পর্কিত এক্সপার্ট গ্রুপের সভায় সিডিপির কাছে এ উত্তরণকাল তিন বছর থেকে বাড়িয়ে পাঁচ বছর করার আহ্বান জানিয়েছে। যার ফলে ২০২৬ সালে অর্জন হবে কাঙ্খিত লক্ষ্য।
ঢাকাটাইমস/২৭ফেব্রুয়ারি/একে
সংবাদটি শেয়ার করুন
জাতীয় বিভাগের সর্বাধিক পঠিত
জাতীয় এর সর্বশেষ

বাংলাদেশের নারীদের গড় আয়ু ৭৫, পুরুষের ৭১

ভারতের টিকা প্রাপ্তিতে অনিশ্চয়তা, বিকল্প ভাবছে বাংলাদেশ

টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১৮ লাখ ১৬ হাজার

পুলিশে প্রথমবারের মতো স্যাটেলাইটে বেতার যোগাযোগ স্থাপিত

হেফাজত নেতা খুরশিদ কাসেমী ও শারাফত গ্রেপ্তার

‘অন্য দেশ থেকেও টিকা আনার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে’

ঢাকায় এলো মেট্রো রেলের প্রথম বগি

এবারের সর্বনিম্ন ফিতরা ৭০, সর্বোচ্চ ২৩১০

রেকর্ড ছুঁতে পারে তাপমাত্রা, কয়েক বিভাগে ঝড়ের সম্ভাবনা
