শ্রমিক সংকটে বিপাকে বাউফলের মুগডাল চাষিরা

কৃষ্ণ কর্মকার, বাউফল (পটুয়াখালী)
 | প্রকাশিত : ০৪ মে ২০২১, ১৫:১২

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় শ্রমিক সংকটে বিভিন্ন এলাকার ক্ষেতের ডাল ক্ষেতেই ঝড়ে যাচ্ছে। প্রচণ্ড তাপদাহের কারণে শ্রমিকরা রৌদ্রের মধ্যে ক্ষেতে নেমে কাজ করতে চাইছে না। এতে দেখা দিয়েছে শ্রমিক সংকট। এতে বিপাকে পড়েছেন মুগডাল চাষিরা।

সরেজমিনে উপজেলার কয়েকটি এলাকায় মুগডাল ক্ষেতে গিয়ে দেখা গেছে, রৌদের তাপে ডালের ছড়া ফেটে ক্ষেতেই ঝড়ে পড়ে যাচ্ছে।

নাজিরপুর ইউনিয়নের ডালচাষি শাহআলম মিয়া বলেন, শ্রমিকদের অধিক মুজুরি দিয়েও ক্ষেত থেকে ডাল তোলা যাচ্ছেনা। দুই দিন ধরে চার ভাগের এক ভাগ ডাল বিনিময় চুক্তিতে ক্ষেত থেকে ডাল তুলছেন এলাকার কিছু নারী শ্রমিকরা। ভোর থেকে শুরু করে সকাল সাড়ে সাতটা/আটটার মধ্যে কাজ শেষ করেন তারা। কারণ এরপর যে রোদের তাপ শুরু হয়, সেই তাপের মধ্যে ক্ষেতে বসে থাকা সম্ভব হয় না।

চরকালাইয়া গ্রামের চাষি বাদল মুন্সি বলেন, শ্রমিকদের চার ভাগের এক ভাগ ডাল দেওয়ায় চাষিদের লোকাসনের মুখে পড়তে হচ্ছে।

দাসপাড়া গ্রামের আব্দুর রহিম মুন্সি জানান, তিনি এক একর জমিতে উচ্চ ফলনশীল বারি-৬ প্রজাতীর পনেরো কেজি মুগডাল চাষ করেছেন। সর্বসাকুল্যে তার ব্যয় হয়েছে প্রায় সারে সাত হাজার টাকা। গাছে যেভাবে ফল এসেছিল তাতে প্রতি একরে ডাল পাওয়া যেত কমপক্ষে আট মণ। বর্তমান বাজার মূল্যে প্রতিমণ ডালের দাম তিন হাজার চারশত টাকা। তার মোট বিক্রি হতো কমপক্ষে সাতাশ হাজার টাকা। ক্ষেতে প্রথমে দেখা দেয় লেদা পোকার আক্রমণ। পোকায় ক্ষেতের অনেক ডাল বিনষ্ট করে ফেললে ওষুধ ছিটিয়ে কিছু ডাল রক্ষা হয়। কিন্তু বর্তমানে শ্রমিক সংকটের কারণে ডাল পেকে ক্ষেতে ঝড়ে পড়ার উপক্রম। তাই বাধ্য হয়ে শ্রমিকদের সঙ্গে বিগত বছরের চেয়ে অধিক বিনিময় চুক্তি করে ডাল তুলতে হচ্ছে।

ক্ষেত থেকে ডাল তুলছেন এমন কয়েকজন নারী শ্রমিক বলেন, রোদের এই তাপে কোনোভাবেই একসঙ্গে ত্রিশ মিনিট বসা যায় না। গতপরশু দিন এক নারী শ্রমিক ডাল তুলতে এসে ক্ষেতেই অচেতন হয়ে পড়েন।

উপজেলা কৃষি কার‌্যালয় জানায়, চলতি বছর উপজেলায় ১৮ হাজার ৭৬২ হেক্টর জমিতে মুগ ডালের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে উচ্চফলনশীল বারি-৩, বারি-৫ ও বারি-৬ প্রজাতির ১৭ হাজার হেক্টর ও দেশি প্রজাতীর সোনাইমুগ খ্যাত প্রজাতীর একহাজার ৭৬২ হেক্টর জমিতে চাষ করা হয়েছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান হিমু জানান, আসলে এটা একটা প্রকৃতিক দুর্যোগ বলতে পারেন। রোদের তাপদাহের কারণে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তারপরও কৃষকদের বলা হয়েছে শ্রমিক মুজুরি যদি বেশি যায় তবুও ক্ষেত থেকে ডাল তুলে ফেলুন। তাতেও কৃষকদের লোকসান হবে না। কারণ বিগত বছরের চেয়ে এ বছর ডালের দাম অনেক বেশি হবে।

(ঢাকাটাইমস/৪মে/পিএল)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :