‘আগের মতোন আমগোর জিনিস কিনবার চায় না’

ফরমান শেখ, ভূঞাপুর (টাঙ্গাইল)
 | প্রকাশিত : ২৬ নভেম্বর ২০২১, ১২:০৩

‘এহন আর আগের মতোন আমগোর কাছে কেউ জিনিস কিনবার চায় না। গেরামে গেরামে, আস্তার মোড়ে মোড়ে দহান ঘর অইছে। তার জন্যই আমাগোর এহন পথে বহার মতোন অবস্থা।’কথাগুলো বলছিলেন- চাঁপাইনবাবগঞ্জের বাসিন্দা ফেরিওয়ালা সুমন। ৭-৮ বছর ধরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলাসহ আশপাশের বিভিন্ন উপজেলার গ্রামে গ্রামে তিনি বাঁশি, ফিতা, খেলনা, পাতিলসহ নানা রকম জিনিস বিক্রি করেন।

সুমন বলেন, দিন বদলে গেছে, প্রত্যন্ত অঞ্চল এখন আর আগের মতো নেই। উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে। ফলে মানুষ এখন বাজার বা শহরে গিয়ে তাদের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করছে। বর্তমানে ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে মানুষ জিনিসপত্র কিনতে চায় না।

একটা সময় হরেক রকম জিনিস নিয়ে ফেরিওয়ালাদের ডাকাডাকিতে মুখর হতো গ্রাম। কাকডাকা ভোর হতে না হতেই তাদের আনাগোনা দেখা যেত। কেউ কেউ নানা রঙের পোশাকও পরতেন। এই ব্যবসা চলে না বলে পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকেই। শুধু সুমন নন, তার মতো এক সময় মজিদ, নুরুল ইসলামও ফেরিওয়ালা ছিলেন। সারাদিন বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে তারা ফেরি করে বেড়ান পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার স্বপ্ন নিয়ে। কেউ চুড়ি, লেইস ফিতা, কানের দুল, নাকের ফুল, প্লাস্টিকের জিনিস, কেউ বা চানাচুর, বাদাম বিক্রি করতেন।

সুমন বলেন, ‘চাঁপাইনবাবগঞ্জে বউ ও পোলাপান রাইখা ভূঞাপুরের গেরামে গেরামে ঘুইরা ঘুইরা এগুলো বেচি। এহন মানুষ আমগোর কাছ থিকা কিনতে চায় না। যা উপার্জন হয় তাতে সংসার চলে না। তাই ভাবছি, অন্য কিছু করমু। এহন আর মানুষের কাছে আমাগোর কদর নাই।’

নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এক সময় গ্রামগঞ্জে ফেরি করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস বিক্রি করতাম। দীর্ঘ ১৭ বছর ওই পেশায় নিয়োজিত ছিলাম। বেচা-কেনা কম হওয়ায় বাধ্য হয়ে ছেড়ে দিয়েছি। এখন মুদির দোকান দিয়েছি।’

৭২ বছর বয়সী নবিরন বেওয়া বলেন, ‘আগে ফেরিওয়ালাদের কাছ থেকে সবাই জিনিসপাতি কিনতাম। এখন আগের মতো তাদের দেখা যায় না। হয়তো তারা অনেকেই এ পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় চলে গেছে।’

(ঢাকাটাইমস/২৬নভেম্বর/এলএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

বাংলাদেশ এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :