নৌকায় ভোট দিয়ে আইভীর হেদায়েত চাইলেন শামীম ওসমান

আবারো নারায়ণগঞ্জের আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর জন্য দোয়া ও হেদায়েত কামনা করলেন সংসদ সদস্য এ কে এম শামীম ওসমান।
শেষ মুহূর্তে এসে সিটি করপোরেশন নির্বাচনে পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে শামীম ওসমান বললেন, ‘আমি যাকে ভোট দিয়েছি সেই নৌকার বিজয় হবে।’
রবিবার বিকাল পৌনে চারটার দিকে আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে ভোট দেয়ার পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শামীম ওসমান বলেন, আমি যাকে ভোট দিয়েছি সেই নৌকা জয়লাভ করবে। তবে আমার মনে অনেক কষ্ট ও রক্তক্ষরণ আছে। তারমধ্যেও আমি চাই নির্বাচনের পর সবাই মিলে নারায়ণগঞ্জের জন্য কাজ করবো। ’
সুষ্ঠু ভোটের জন্য গণমাধ্যমকর্মী, প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আবারো প্রমাণ হয়েছে নারায়ণগঞ্জ শান্তির শহর।’
আওয়ামী লীগের মেয়রপ্রার্থী সেলিনা হায়াৎ আইভীর জন্য কী পরামর্শ থাকবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আর কিছু না শুধু দোয়া করি। আর আল্লাহ যেন হেদায়েত করেন। তাদের আল্লাহ সুশিক্ষায় সুশিক্ষিত করেন।’
নির্বাচনের কয়দিন আগেও সংবাদ সম্মেলনে নিজের কষ্টের কথা জানিয়ে আইভীর হেদায়েত কামনা করেন শামীম ওসমান।
নির্বাচনে নিজের অবদান কতটুকু আর অর্জন কী এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, সব অর্জন জনগণের। আমার মাত্র একটা ভোট। জনগণের ভোট বেশি। অর্জন হচ্ছে জনগণ সন্তুষ্ট কিনা। আমি জানি প্রার্থী ও ভোটাররা সন্তুষ্ট। তারা ভালো ভোট দিয়েছেন। এটাই সন্তুষ্টির জায়গা।
ভোট সুষ্ঠু হয়েছে এমন দাবি করে এই সংসদ সদস্য বলেন, আল্লাহর রহমতে ভালো ভোট হয়েছে। আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ হয় যখন দেখি ভোটের আগে বলা হয় নারায়ণগঞ্জে এই হবে, সেই হবে। কিন্তু এখানে জাতীয়, স্থানীয় কোনো নির্বাচনে একটা ধাক্কাধাক্কি ও হয়নি। মাথাও ফাটেনি। নারায়ণগঞ্জ সুন্দর ও শান্তির শহর।
তিনি বলেন, ভোটে জয় পরাজয় থাকবে থাকবে। কিন্তু দেশটা তো সবার। তাই সবাই মিলে দেশের জন্য কাজ করবো।
দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হচ্ছে এমন অভিযোগ করে শামীম ওমসান বলেন, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের যে অগ্রগতি হচ্ছে তা থামিয়ে দিতে আমাদের ভৌগলিক কারণে অনেক ষড়যন্ত্র হচ্ছে। দেশি বিদেশি ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। এটা আমাদের দেশ। আমাদের সন্তানরা এখানে বড় হবে। সাংবাদিকরা সমাজের দর্পন। তাই আমরা সাংবাদিকদেরও পাশে চাই।
গণমাধ্যমের সক্রিয় ভূমিকার কারণে সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে এমন মন্তব্য করে শামীম ওসমান বলেন,সাংবাদিকদের থ্যাংকস। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচন কমিশনকেও থ্যাংকস। সুষ্ঠু ভোটের জন্য কার অবদান কী, কাদের কী অবদান সেটা আসলে বিষয় না। এখানে মাত্র ৫ লাখ ভোটের নির্বাচন কভার করার জন্য এত পরিমাণ সংবাদকর্মীরা আসছেন। কোথাও সমস্যা হলে দ্রুত আপনাদের টিম চলে গেছে। সাংবাদিকদের কারণে পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে। আমি ধন্যবাদ জানাই সাংবাদিকদের আপনারা যে পরিশ্রমটা করেছেন নারায়ণগঞ্জে সুষ্ঠু ভোটের জন্য তাতে আপনাদের জন্য দোয়া করা ছাড়া আর কিছু আমার দেয়ার নেই। আল্লাহ আপনাদের পিতামাতাকে হেফাজত করুন। যারা বেঁচে নেই তাদের শান্তিতে রাখুন।
নৌকার প্রার্থীর বিজয় নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করে শামীম ওসমান বলেন, এই নির্বাচনে জাতীয় পর্যায়ের অনেক নেতারা, স্থানীয় নেতারা এত বেশি কাজ করেছেন। আমার বিশ্বাস এর রেজাল্ট আমরা পাবো। নির্বাচন নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলবে। তারপরও আশা করি ভোট শেষে সবাই মিলে কাজ করবো।
তিনি বলেন, আমি নৌকার কর্মী। আমারও মনে কষ্ট আছে, রক্তক্ষরণ আছে। কিন্তু আমি শেখ হাসিনার সৈনিক। তিনি যদি নীলকণ্ঠি হতে পারেন আমিও নীলকণ্ঠি। তবে তিনি তো জাতির পিতার কন্যা। তিনি অনেক কিছু হজম করে ফেলতে পারেন। আমি হয়তো অনেক কিছু বলে ফেলি। যারা অনেক কষ্ট দিয়েছেন তাদের আল্লাহ হেদায়েত করেন। সুশিক্ষায় সুশিক্ষিত করুন।
নির্বাচনে প্রার্থী না প্রতীকের বেশি প্রয়োজন- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মানসিকতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। আমি সারাজীবন প্রতীকের পক্ষে কাজ করেছি।
(ঢাকাটাইমস/১৬জানুয়ারি/বিইউ/ইএস)

মন্তব্য করুন