নুরুজ্জামান আহমেদ: ইউপি চেয়ারম্যান থেকে মন্ত্রী

বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক জীবনে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছাত্রজীবন থেকেই সম্পৃক্ত। ছাত্র রাজনীতির পরে ইউপি চেয়ারম্যান, এর পর লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। সেখান থেকে উত্থানের শুরু। সব শেষ সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী নিযুক্ত হন নুরুজ্জামান আহমেদ।
১৯৫০ সালের ৩ জানুয়ারি লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাশিরাম গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নুরুজ্জামান আহমেদ। বাবার নাম করিম উদ্দিন আহমেদ ও মাতার নাম নূরজাহান বেগম। করিম উদ্দিন আহমেদও লালমনিরহাট-২ আসন থেকে ১৯৭০ ও ১৯৭৩-এর নির্বাচনে (তৎকালীন রংপুর-৬ আসন) সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
নুরুজ্জামান ২০১৪ ও ২০১৮ সালে দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে লালমনিরহাট-২ (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
নুরুজ্জামান আহমেদ স্থানীয় বিদ্যালয়ে তার শিক্ষাজীবন শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তুষভাণ্ডার উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। ১৯৬৭ সালে উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করে কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হন এবং স্নাতক সম্পন্ন করেন।
রাজনৈতিক জীবন
নুরুজ্জামান আহমেদ পারিবারিকভাবেই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন। ছাত্রলীগে যোগদানের মাধ্যমে রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে প্রবেশ করেন তিনি। রাজনৈতিক জীবনের শুরুতে স্থানীয় উনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান হিসেবে ১৯৮৩ থেকে ১৯৯০ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। এরপর ১৯৯০ সালে কালীগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন এবং ২০০৯ সালে দ্বিতীয়বার নির্বাচিত হন।
২০১৪ সালের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নুরুজ্জামান আহমেদ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে লালমনিরহাট-২ (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) আসন থেকে প্রথমবারের মত দশম জাতীয় সংসদের সদস্য নির্বাচিত হন। ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একই আসন থেকে একাদশ জাতীয় সংসদে এমপি নির্বাচিত হন।
সংসদ সদস্য হওয়ার এক বছর পর ২০১৫ সালের ১৪ জুলাই তিনি খাদ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৬ সালের ১৯ জুন তাকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব দেয়া হয়। একই বছরের ২১ জুন থেকে ২০১৯ সালের ৬ জানুয়ারি পর্যন্ত এ দায়িত্ব পালন করেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পর তিনি একই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী হিসেবে ২০১৯ সাল থেকে দায়িত্ব পালন করছে আসছেন।
ব্যক্তিগত জীবনে নুরুজ্জামান আহমেদ হোসনে আরা বেগমের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। এই দম্পতির তিন সন্তান রয়েছে।
গত ২৯ এপ্রিল ঈদ উদযাপনের জন্য ঢাকা থেকে লালমনিরহাটের বাড়িতে যান মন্ত্রী। নিজ নির্বাচনী এলাকায় (কালীগঞ্জ-আদিতমারী) একটি অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার পর বুকে ব্যথা অনুভব করলে মন্ত্রীকে গভীর রাতে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগে ভর্তি করা হয়। তিনি করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) অধ্যাপক শাকিল গফুরের তত্ত্বাবধানে ছিলেন। পরে গত রবিবার রংপুর মেডিকেল কলেজ (রমেক) হাসপাতাল থেকে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাকে ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়।
বর্তমানে তার শারীরিক অবস্থা অনেকটাই উন্নতি হয়েছে বলে জানিয়েছেন সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অফিসার মোহাম্মদ জাকির হোসেন।
জাকির হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা আগের থেকে এখন অনেকটা ভালো। বর্তমানে তিনি ইউনাইটেড হাসপাতালের কেবিনে আছেন। এনজিওগ্রাম করানোর পরিকল্পনা আছে ডাক্তারদের। সব মিলিয়ে মন্ত্রীর শারীরিক অবস্থা আগের চেয়ে অনেকটা ভালো।’
তথ্য অফিসার বলেন, ‘এনজিওগ্রামটা কবে নাগাদ করা হবে সেটা এখনও সিওর বলা যাচ্ছে না। মন্ত্রীর ডায়াবেটিস একটু নিয়ন্ত্রণে থাকলেই এনজিওগ্রাম করা হবে। তারপর শারীরিক অবস্থা বুঝে রিলিজ নেয়া হবে।’
(ঢাকাটাইমস/১০মে/কেআর/এফএ)

মন্তব্য করুন