১০-৫০ টাকা বেড়েছে সব পণ্যের দাম, ‘বাজারে গেলেই পকেট ফাঁকা’
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি বড় ধরনের প্রভাব ফেলেছে নিত্যপণ্যের বাজারে। দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে রাজধানীতে আসা-যাওয়ার ভাড়া বেড়েছে ট্রাকের। পরিবহন ব্যয় বেড়ে যাওয়ায় সবজি, মুরগি, ডিম, চিনি, আটা, তেল, ডালসহ প্রতিটি নিতপণ্যের দাম ১০ টাকা থেকে ৫০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। চালের দাম বস্তাপ্রতি বেড়েছে অন্তত ১০০ টাকা।
শুক্রবার (১২ আগস্ট) রাজধানীর কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট, হাতিরপুল, নয়াপল্টন, ফকিরাপুল,মগবাজার, মালিবাগ, রামপুরা, বনশ্রী, লালবাগ, শনির আখড়া এলাকায় ঘুরে বাজারের এ চিত্র দেখা গেছে।
বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচামরিচ প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা। টমেটো বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ১০০ থেকে ১২০ টাকা ছিল। লম্বা বেগুন কেজিপ্রতি ১০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকা। গোল বেগুন ৮০ থেকে বেড়ে ৯৫-১০৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চিচিঙ্গা ৫০ থেকে ৬০ টাকা, করলা ৫০ থেকে বেড়ে ৭০ টাকা, শসা ৪০ থেকে বেড়ে ৬৫-৭৫ টাকা, পটল ৪৫ টাকা থেকে বেড়ে ৬০ টাকা, মিষ্টিকুমড়া প্রতি কেজি ৪০ থেকে বেড়ে ৫০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৭০ টাকা, কচুর লতি ৬০ থেকে বেড়ে ৮০ টাকা, ধুন্দুল ৫০ থেকে বেড়ে ৬০ টাকা, পেঁপের কেজি ৩০ থেকে বেড়ে ৫০ টাকা, বরবটি ৬০ থেকে বেড়ে ৮০ টাকা কেজি, আলু ৩০ টাকা।
এছাড়া আকার ভেদে চালকুমড়া প্রতি পিস ৬০ টাকা, লাউ ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। লেবুর হালি ১৫ থেকে ২০ টাকা, কাঁচকলার হালি ৩০ থেকে ৪০ টাকা।
এছাড়াও ব্রয়লার মুরগি ১৫০ টাকা থেকে বেড়ে ১৭০-১৮০ টাকা, সোনালি মুরগির প্রতি কেজি ৩০০ থেকে বেড়ে ৩৩০ টাকা। লেয়ার মুরগির কেজি ২৮০ থেকে বেড়ে ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মুরগির ডিমের হালি ৪৫ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
চালের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ব্রি-২৮ চালের কেজি ৫৫ থেকে ৫৭ টাকা, যা আগে ছিল ৫৩ টাকা। মিনিকেট প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬৯ থেকে ৭০ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৬৭ থেকে ৬৮ টাকা। সেই হিসাবে সবধরনের চাল ৫০ কেজির বস্তায় বেড়েছে অন্তত ১০০ টাকা।
কারওয়ান বাজারের সবজি বিক্রেতা তানভীর রহমান ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে ট্রাকে করে সবজিসহ বিভিন্ন জিনিসপত্র আসে। জ্বালানি তেলের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ায় ট্রাক ভাড়া বাড়িয়েছে। বিভিন্ন পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। আমাদের কিছুই করার নেই। আমরাও চাই কমে বিক্রি করতে।’
তেজগাঁও এলাকার চাল বিক্রেতা কামরুল মিয়া ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘প্রতিদিন চালের দাম বাড়ছে এক থেকে দুই টাকা করে। যেভাবে নিত্য প্রয়োজনীয় জিসিনপত্রের দাম বেড়েছে, নিজেই ভয় পাচ্ছি।’
ফার্মগেট এলাকার ক্রেতা আকমল হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমি সাপ্তাহে একদিন বাজার করি। এক সপ্তাহের ব্যবধানে রাজধানীতে সব পণ্যের দাম বেড়েছে। এরকম চলতে থাকলে দেশের মানুষের প্রচুর ক্ষতি হয়ে যাবে। মানুষের আয় বাড়েনি। তবে ব্যয় বেড়েছে অতিরিক্ত।’
হাতিরপুল এলাকার ক্রেতা মনিরুল ইসলাম মনির ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় দেশে মানুষের অর্থ সংকটের চাপ সৃষ্টি হচ্ছে। যে দিকেই যাই সেদিকেই বেশি টাকা ব্যয়। বাজারে কোনো কিছু কিনতে গেলেই পকেট ফাঁকা হয়ে যায়। প্রতিটি পণ্যের দাম অতিরিক্ত।’
(ঢাকাটাইমস/১২ আগস্ট/পিআর/এফএ)