মাঠে নামার আগে সানজিদা বলেছিলেন, `আমরা জীবনযুদ্ধে লড়েই অভ্যস্ত’

বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা টাইমস
 | প্রকাশিত : ২০ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৬:৪৮

প্রথমবার সাফ উইমেনস চ্যাম্পিয়নশিপে শিরোপা জিতেছে বাংলাদেশ। সোমবার নেপালকে ৩-১ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছেন সানজিদা-সাবিনারা। হিমালয় জয় করেছেন সোনার মেয়েরা। এদিন মাঠে নামার আগেই ফেসবুক লাইভে ইতিহাস গড়ার বার্তা দিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় সানজিদা। বলেছিলেন, ‘আমরা জীবন যুদ্ধে লড়েই অভ্যস্ত।’

মাঠে নামার আগে ফেসবুকের ওই লাইভে সানজিদা যা যা বলেছিলেন, তা নিচে তুলে ধরা হলো-

‘দ্বিতীয় বারের মতো সাফ উইমেনস চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে বাংলাদেশ। প্রথমবার ফাইনাল খেলেছি ২০১৬ সালে। সেবার ভারতের বিপক্ষে আমরা হেরে যাই। পাঁচবার সাফের মঞ্চে এসে একবার রানার্সআপ, তিনবার সেমিফাইনাল এবং একবার গ্রুপপর্ব থেকে বিদায় নিয়েছি আমরা।’

‘আলহামদুলিল্লাহ, আমরা এবার মাঠে দারুণ ছন্দে রয়েছি, ফাইনালে প্রতিপক্ষ স্বাগতিক নেপাল। স্বাগতিক হিসেবে ফাইনাল খেলা কিংবা স্বাগতিক দলের বিপক্ষে ফাইনাল খেলা সবসময় রোমাঞ্চকর। এছাড়াও এবারের ফাইনাল ম্যাচটি কিছুটা ভিন্ন। বহুদিন পর সাফ পাবে নতুন কোনো চ্যাম্পিয়ন দেশ। আর তাই এবার রোমাঞ্চকর একটি ফাইনাল ম্যাচ হতে যাচ্ছে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।’

‘বাংলাদেশ পুরুষ জাতীয় ফুটবল দলের হাত ধরে ২০০৩ সালে দক্ষিন এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্ব পেয়েছিল বাংলাদেশ। এখনো আমরা সেই গল্প শুনি। বাংলাদেশ ফুটবলের বড় সাফল্যের মহাকাব্যে সেটি উজ্জ্বলতম অংশ হিসেবে বিবেচিত হয়। এবার আমাদের জেতার সময় এসেছে। আমাদের দলের প্রতিটি সদস্য এটি জিততে মুখিয়ে আছে।’

‘যারা আমাদের এই স্বপ্নকে আলিঙ্গন করতে উৎসুক হয়ে আছেন, সেই সকল স্বপ্নসারথিদের জন্য এটি আমরা জিততে চাই। নিরঙ্কুশ সমর্থণের প্রতিদান আমরা দিতে চাই। ছাদখোলা চ্যাম্পিয়ন বাসে ট্রফি নিয়ে না দাঁড়ালেও চলবে, সমাজের টিপ্পনীকে একপাশে রেখে যে মানুষগুলো আমাদের সবুজ ঘাস ছোঁয়াতে সাহায্য করেছে, তাদের জন্য এটি জিততে চাই। আমাদের এই সাফল্য হয়তো আরও নতুন কিছু সাবিনা, কৃষ্ণা, মারিয়া পেতে সাহায্য করবে। অনুজদের বন্ধুর এই রাস্তাটুকু কিছু হলেও সহজ করে দিয়ে যেতে চাই।’

‘পাহাড়ের কাছাকাছি স্থানে বাড়ি আমার। পাহাড়ি ভাইবোনদের লড়াকু মানসিকতা, গ্রাম বাংলার দরিদ্র ও খেটে খাওয়া মানুষদের হার না মানা জীবনের প্রতি পরত খুব কাছাকাছি থেকে দেখা আমার। ফাইনালে আমরা একজন ফুটবলারের চরিত্রে মাঠে লড়বো এমন নয়, ১১ জনের যোদ্ধাদল মাঠে থাকবে, যে দলের অনেকে এই পর্যন্ত এসেছে বাবাকে হারিয়ে, মায়ের শেষ সম্বল নিয়ে, বোনের অলংকার বিক্রি করে, অনেকে পরিবারের একমাত্র আয়ের অবলম্বন হয়ে।’

‘আমরা জীবনযুদ্ধে লড়েই অভ্যস্ত। দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের জন্য শেষ মিনিট পর্যন্ত লড়ে যাবো। জয়-পরাজয় আল্লাহর হাতে। তবে বিশ্বাস রাখুন, আমরা আমাদের চেষ্ঠায় কোনো ত্রুটি রাখব না। ইনশাআল্লাহ, দোয়া করবেন আমাদের জন্য।’

শেষমেশ সানজিদা তাদের দেওয়া কথা রেখেছেন। খেলতে নামার আগে যে মনোবল, প্রত্যয় আর জয়ের খুদা তাদের মধ্যে দেখা গিয়েছিল, তার সবটুকুর দেখা মিলেছে মাঠে। সর্বোচ্চ দিয়ে খেলেছেন সানজিদা-সাবিনারা। তার ফলও পেয়েছেন হাতে হাতে। এ জয় গোটা বাংলাদেশের। হাসছেন সাবিনারা, হাসছে বাংলাদেশ।

(ঢাকাটাইমস/২০সেপ্টেম্বর/এমএম)

সংবাদটি শেয়ার করুন

খেলাধুলা বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

খেলাধুলা এর সর্বশেষ

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :