তাড়াশে জমে উঠেছে খিরার মৌসুমি হাট, বাম্পার ফলনে কৃষকের মুখে হাসি

শায়লা পারভীন, তাড়াশ (সিরাজগঞ্জ)
| আপডেট : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:২৮ | প্রকাশিত : ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩, ১২:২৩

সিরাজগঞ্জের তাড়াশে জমে উঠেছে খিরার মৌসুমি হাট। এ অঞ্চলের খিরার চাহিদা রয়েছে সারাদেশেই। এদিকে খিরার দাম ভাল পাওয়ায় লাভের মুখ দেখছেন কৃষকরা। ফলে কৃষকের মুখে এখন হাসি।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে উপজেলায় সাড়ে ৪৩৯ হেক্টর জমিতে খিরা চাষ করা হয়েছে। যা গত বছরের লক্ষ্য মাত্রার চেয়ে ৭৫ হেক্টর বেশি। প্রতিদিন খিরাকে কেন্দ্র করে তাড়াশ উপজেলার দিঘরীয়া গ্রামে গড়ে উঠেছে খিরার মৌসুমি হাট। এ হাটে প্রতিদিন ঢাকা, বগুড়াসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকার এসে খিরা কিনে নিয়ে যায়।

জানা যায়, তাড়াশ উপজেলার কোহিত, সড়াবাড়ি, তালম সাতপাড়া, সাচানদিঘি, সান্দুরিয়া, খোসালপুর, বারুহাস, নামো সিলট, দিঘুরিয়া, দিয়ারপাড়া, খাসপাড়া, তেঁতুলিয়া, ক্ষীরপোতা, বরগ্রাম গ্রামের বিশাল সবুজে সমারোহ মাঠের পর মাঠ খিরার আবাদ হয়েছে। খিরার বিক্রি করার জন্য দিঘরীয়া এলাকায় মৌসুমী ব্যবসায়ীরা গড়ে তুলেছে আড়ৎ। প্রতিদিন ভোর থেকে বিভিন্ন গ্রামের কৃষকরা খিরা আড়তে আনতে শুরু করেন। আর আড়ৎ থেকে জেলাসহ বিভিন্ন জেলার পাইকাররা খিরা কিনতে আসেন। প্রতিদিন শত শত মেট্রিক টন খিরা বেচা-কেনা হচ্ছে। দুপুরের পর শুরু হয় ট্রাক লোড। পরে ঢাকা, রাজশাহী, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় ট্রাক যোগে চলে যায়। এবার এই আড়ৎগুলো থেকে প্রতিদিন প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ টন খিরা যাচ্ছে ঢাকায়।

মাধাইনগর ইউনিয়নের ক্ষীরপোতা গ্রামের খিরা চাষি আব্দুল মতিন বলেন, গত মৌসুমে ৬ বিঘা জমিতে খিরা চাষ করেছিলাম। আবহাওয়ার কারণে খুব একটা লাভের মুখ দেখিনি। এবার ১০ বিঘা জমিতে চাষ করেছি। ফলনও বাম্পার হয়েছে। দামটাও খুব ভাল পেয়েছি।

বারুহাস ইউনিয়নের দিঘড়িয়া গ্রামের বর্গা চাষি কৃষক ফজর আলী বলেন, গত বছর ১৫ শতাংশ জমির খিরা বিক্রি করে বেশ লাভ হয়েছিল। এবারও ২৫ শতাংশ জমি বর্গা নিয়ে খিরার চাষ করেছি। ফলন খুবই ভালো হয়েছে এবং দামও ভালো পাচ্ছি।

একই ইউনিয়নের সান্দ্রা গ্রামের কৃষক হোসেন আলী বলেন, আমি তিন বছর ধরে খিরার চাষ করে আসছি। আগে এই আবাদ কম হতো। কিন্তু অন্যান্য ফসলের চেয়ে খিরা চাষে অধিক লাভের কারণে প্রতি বছর কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে।

উপজেলার দিঘরীয়া গ্রামে কৃষক মজনু বলেন, ধান চাষের পাশাপাশি এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে খিরা চাষ করেছি। প্রতি বিঘা জমিতে প্রায় ১০০ থেকে ১২০ মণ করে খিরার ফলন হবে। বর্তমান বাজারে প্রতি বস্তা খিরা এক হাজার ১৫০ থেকে এক হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। বাজার দর এ রকম থাকলে আড়াই বিঘা জমিতে ৩৮ থেকে ৪০ হাজার টাকা লাভ হবে।

বারুহাস ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাসুদ রানা জানান, দিঘরিয়া আড়ৎ থেকে বিভিন্ন জেলার পাইকাররা ট্রাকে করে খিরা কিনতে আসেন। এলাকার খিরা সাধারণত ঢাকা, রাজশাহী, চট্রগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়। প্রতিদিন শত শত মেট্রিক টন খিরা বেচা-কেনা হচ্ছে। তাড়াশে উৎপাদিত খিরা যাচ্ছে ঢাকাসহ সারাদেশের বিভিন্ন এলাকায়। এ আড়ৎ থেকে প্রতিদিন ৪৫ থেকে ৫০ মে. টন খিরা যাচ্ছে শুধু রাজধানী ঢাকায়।

তাড়াশ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, উপজেলার ফসলী জমিতে খিরা চাষ খুব ভালো হয়। কৃষি অফিসের লোকজন সার্বক্ষণিক কৃষকদেরকে খিরা চাষে উৎসাহ ও পরার্মশ দিয়ে সহযোগীতা করে আসছেন। খিরা চাষে কৃষকরা অন্যান্য কৃষি দ্রব্যের তুলনায় ভাল লাভবান হতে পারেন।

(ঢাকাটাইমস/২ফেব্রুয়ারি/এসএ)

সংবাদটি শেয়ার করুন

বাংলাদেশ বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

শিরোনাম :