রাজশাহীর আম যাচ্ছে ইউরোপ-মধ্যপ্রাচ্যে

রাজশাহী ব্যুরো, ঢাকা টাইমস
| আপডেট : ২০ মে ২০২৩, ১৫:০৪ | প্রকাশিত : ২০ মে ২০২৩, ১৪:১২

তীব্র দাবদাহে আবহাওয়া কিছুটা বৈরী হলেও, রাজশাহী অঞ্চলে এবার আমের ফলন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আসা করছেন বাগান মালিকরা। এবার দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকার বাণিজ্যের আশা রাজশাহীর ব্যবসায়ীদের।

নানা জাতের দেশি আম এখন বিদেশেও রপ্তানি হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, আম রপ্তানির জন্য রাজশাহীতে যেনো সরকারি উদ্যোগে একটি আধুনিক প্যাকেজিং সেন্টার করা হয়।

এখন বিদেশেও বেড়ছে দেশি আমের চাহিদা। আম যাচ্ছে ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশে দেশে। বিদেশি বাজারের চাহিদা মেনে আম রক্ষণা-বেক্ষণেও যুক্ত হচ্ছে নিত্য নতুন প্রযুক্তি। যেমন ফ্রুট ব্যাগিং পদ্ধতি। তারপরও কিছু সরকারি উদ্যোগ দরকার, বলেন আম রপ্তানিকারকরা।

আম দিয়ে যে জেলার পরিচিতি তার নাম রাজশাহী। পদ্মা তীরের জনপদ রাজশাহী অঞ্চলের মাটি ভৌগলিক ভাবেই যথেষ্ট উর্বর। সেই সঙ্গে উপযুক্ত আবহাওয়া। সব মিলে আম উৎপাদনের উর্বর ভূমি। চলতি বছর ফেব্রুয়ারির শুরুর দিকেই গাছে গাছে দেখা দেয় আমের মুকুল।

এবার তেমন কোন ঝড় বাদল ছিল না। তাই মুকুলগুলোর বেশিরভাগই ফলে পরিণত হয়েছে। তবে বিপত্তি হয়েছে এবারের তীব্র দাবদাহ নিয়ে। পানির অভাবে ঝরে পড়েছে কচি আম। বহু যত্নের পর টিকে থাকা সেই আমই এখন রঙ ধরেছে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, গেল বছরের চেয়ে এবার প্রায় এক হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আম চাষ হয়েছে। তীব্র দাবদাহের পরও মুকুল থেকে ফলে পরিণত হবার হারটাও মন্দ নয়। বাঘা-চারঘাট এলাকার বাগানগুলোতে পুরোনো গাছের তুলনায় নতুন গাছে এবার ফলন হয়েছে বেশি।

ক্রেতাদের বরাবরের অভিযোগ ওষুধ দিয়ে আম পাকানো নিয়ে। এ নিয়ে গেলো কয়েক বছর ধরেই তৎপর রাজশাহীর প্রশাসন। সময়ের আগে যাতে কোন ব্যবসায়ী আম বাজারে নিতে না পারে তাই এবারও জেলা প্রশাসন ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার প্রকাশ করেছে। ক্যালেন্ডার উপেক্ষা করে আম পাড়লেই শাস্তি।

ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার মেনেই এখন গুটি জাতের আমগুলো পাড়তে শুরু করেছেন বাগান মালিকরা। কিন্তু বৃষ্টির অভাবে এবার আমের অকারে প্রভাব পড়েছে। সার ও বালাইনাশকের দাম বেড়েছে। তাই বেড়েছে আমের উৎপাদন খরচও।

আমের সবচেয়ে বড় হাট বানেশ্বর। স্বপ্ল পরিসরে জমে উঠেছে এবারের বেচাকেনা। মান অনুযায়ী গোপালভোগ এবার মণ প্রতি ১,৪০০ টাকা থেকে ১,৮০০ টাকা। গুটি জাতের আম মন প্রতি বিক্রি হচ্ছে ৮শ থেকে ১২শ টাকা। এবারের মৌসুমে দেড় থেকে দুই হাজার কোটি টাকার আম বাণিজ্যের স্বপ্ন দেখছেন রাজশাহীর ব্যবসায়ীরা।

আম গবেষক ড. আলীম উদ্দীন বলেন, উৎপাদিত আমের শতকরা ৫ থেকে ১০ ভাগ পর্যন্ত নানা কারনে নষ্ট হয়ে যায়। তবে হট ওয়াটার ট্রিটমেন্ট পদ্ধতিতে ৫৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস গরম পানিতে পাঁচ মিনিট আম রেখে দিয়ে তুলে নিলে প্রকৃতিকভাবেই আমের পচনরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়।

পুরো মৌসুম জুড়ে ক্রেতা-বিক্রেতারা যাতে নির্বিঘ্নে আম কেনা-বেচা করতে পারে সেজন্য হাট বাজার, পরিবহন ও সড়কপথে বাড়তি ব্যবস্থা গ্রহনের কথা বলছে পুলিশ।

সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এখন আমের জাতও বাড়ছে। গুটি আমের পাশাপাশি অতি পরিচিত গোপালভোগ, খিরসাপাত, ল্যাংড়া, ফজলি, আশ্বিনা ছাড়াও বারি-৪, গৌড়মতি, ইলমতি ও কাটিমন জাত যুক্ত হয়েছে আমের তালিকায়। যা আকৃষ্ট করছে বিদেশি ক্রেতাদেরও।

বাংলাদেশে আমের মোট চাহিদার বেশিরভাগই পূরণ হয় বৃহত্তর রাজশাহী থেকে। চলতি মৌসুমে রাজশাহী চাঁপাই নবাবগঞ্জ ও নওগাঁ থেকে কমপক্ষে দুই হাজার ২৭৮ মেট্রিকটন রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদনের আশা করছে কৃষি বিভাগ।

এ বছর রাজশাহী জেলায় ২ লাখ ৫৮ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন আম উৎপদান লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। বড় ধরনের কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এই লক্ষমাত্রা পূরণে শতভাগ আশাবাদি কৃষি বিভাগ। বলার অপেক্ষা রাখে রাজশাহীর আমের অর্থনীতির আকার এখন অনেক বড়।

(ঢাকাটাইমস/২০মে/আরআর)

সংবাদটি শেয়ার করুন

অর্থনীতি বিভাগের সর্বাধিক পঠিত

বিশেষ প্রতিবেদন বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা
  • সর্বশেষ
  • সর্বাধিক পঠিত

অর্থনীতি এর সর্বশেষ

সোনালী ব্যাংকের শুদ্ধাচার বাস্তবায়ন সংক্রান্ত নৈতিকতা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত

সেবা প্রত্যাশী টার্গেট গ্রুপের সঙ্গে বিএইচবিএফসি’র মতবিনিময় সভা

টেকসই অনুশীলনের মাধ্যমে প্রবৃদ্ধির হটস্পট হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে দেশ: শিল্পমন্ত্রী

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগকারীদের জন‌্য নতুন প্রডাক্ট চালু করেছে জনতা ক্যাপিটাল

গ্রামীণফোন এবং টিভিএস অটো বাংলাদেশের মধ্যে সমঝোতা স্মারক

এসবিএসি ব্যাংকের ১১তম বর্ষপূর্তিতে স্মার্ট ব্যাংকিং সার্ভিস উদ্বোধন

এনআরবি ব্যাংক এবং এ এম জেড হাসপাতালের মধ্যে চুক্তি 

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ফুটবল টিমের জার্সি উন্মোচন

বে গ্রুপের চেয়ারম্যান শিল্পপতি শামসুর রহমান মারা গেছেন

দেশে রিজার্ভ কমে এক দশকের মধ্যে সর্বনিম্ন

এই বিভাগের সব খবর

শিরোনাম :