লোহিত সাগরে হুথিদের হামলা ঠেকাতে ১০ দেশের জোট গঠনের ঘোষণা যুক্তরাষ্ট্রের
লোহিত সাগরে বাণ্যিজিক জাহাজে ইয়েমেনের হুথি বিদ্রোহীদের হামলা মোকাবেলায় একটি বহুজাতিক বাহিনী গঠন করার ঘোষণা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। খবর আলজাজিরার।
মার্কিন প্রতিরক্ষা মন্ত্রী লয়েড অস্টিন সোমবার বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র, বাহরাইন, কানাডা, ফ্রান্স, ইতালি, সিসিলিস, নেদারল্যান্ডস, নরওয়ে, স্পেন এবং যুক্তরাজ্যসহ ১০টি দেশের জোটের মধ্যে থাকবে।
নতুন পদক্ষেপকে ‘বহুজাতিক নিরাপত্তা উদ্যোগ’ উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে লয়েড অস্টিন বলছেন, লোহিত সাগরে হুথি আক্রমণ এখন একটি আন্তর্জাতিক সমস্যা। এর সমাধানে প্রয়োজনে এটি আমাদের সম্মিলিত প্রয়াস।
এদিকে সিনিয়র হুথি কর্মকর্তা এবং মুখপাত্র মোহাম্মদ আল-বুখাইতি সোমবার আল জাজিরাকে বলেছিলেন, গোষ্ঠীটি লোহিত সাগরে মার্কিন নেতৃত্বাধীন যে কোনও জোটের মুখোমুখি হতে প্রস্তুত।
প্রসঙ্গত ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হামাসকে সর্মথন জানিয়ে ইয়েমেন উপকূলে গুরুত্বপূর্ণ শিপিং লেনের জাহাজগুলোতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ইরান-সর্মথিত হুথিরা।
সোমবারও লোহিত সাগরে দুটি পণ্যবাহী জাহাজকে লক্ষ্য করে ড্রোন হামলা চালালিয়েছে হুথি বিদ্রোহীরা।
সোমবার হুথির মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারিয়া হামলার শিকার জাহাজগুলোকে এমএসসি ক্লারা এবং নরওয়েজিয়ান মালিকানাধীন সোয়ান আটলান্টিক হিসাবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেছেন, জাহাজ দুটির ক্রুরা তাদের কলে সাড়া দিতে ব্যর্থ হওয়ার পরে আক্রমণগুলো চালানো হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার ম্যার্স্ক জিব্রাল্টা নামে একটি কন্টেইনার জাহাজে ড্রোন হামলায়, জাহাজটির ব্যপক ক্ষতি হয়। এরপরই হুতিদের হামলার ভয়ে লোহিত সাগরে জাহাজ চলাচল বন্ধের ঘোষণা দিয়েছে বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শিপিং এবং লজিস্টিক কোম্পানি ম্যার্স্ক। পরবর্তী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত ইয়েমেনের উপকূলবর্তী সমুদ্রপথ ব্যবহারের বদলে আফ্রিকা ঘুরে জাহাজ চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডেনমার্কের এ সংস্থাটি।
চলতি মাসের শুরুর দিকে ইয়েমেনের উপকূলে লোহিত সাগরে ‘স্ট্রিনডা’ নামের একটি নরওয়েজিয়ান পতাকাবাহী বাণিজ্যিক ট্যাঙ্কারে জাহাজ-বিধ্বংসী ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় হুতিরা। এ ছাড়া গত মাসে একটি ব্রিটিশ মালিকানাধীন পণ্যবাহী জাহাজও জব্দ করেছে সশস্ত্র গোষ্ঠীটি, জাহাজটির একটি ইসরায়েলি কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগ ছিল।
উল্লেখ্য, ‘অশ্রুর দরজা’ নামে পরিচিত ২০ মাইল প্রস্থের বাব আল-মান্দাব প্রণালীটি আরব উপদ্বীপে ইয়েমেন এবং আফ্রিকার উপকূলে জিবুতি এবং ইরিত্রিয়ার মধ্যে অবস্থিত।
এটি সেই পথ যা দিয়ে জাহাজগুলো দক্ষিণ থেকে সুয়েজ খালে পৌঁছাতে পারে, ফলে এটি নিজেই একটি প্রধান শিপিং লেনে পরিণত হয়েছে। এটি এড়ানোর অর্থ হল জাহাজগুলোকে অনেক দীর্ঘ পথ ঘুরতে হবে।
প্রতি বছর প্রায় ১৭ হাজার জাহাজ, যা বিশ্ব বাণিজ্যের প্রায় ১০ শতাংশ বাব আল-মান্দাব প্রণালী দিয়ে যাত্রা করে।
(ঢাকাটাইমস/১৯ডিসেম্বর/এমআর)