লোহিত সাগরে মার্কিন হামলায় হুতিদের ৩ নৌকা ধ্বংস, নিহত ১০

লোহিত সাগরে একটি পণ্যবাহী জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টাকালে যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইয়েমেনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হুতির ১০ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় হুতিদের তিনটি নৌকাও ডুবে গেছে। খবর আল জাজিরার।
ইয়েমেনের হুতি বিদ্রোহীরা বলেছে, লোহিত সাগরে মার্কিন বাহিনী তাদের তিনটি নৌযানে হামলার পর তারা কমপক্ষে ১০ জন যোদ্ধাকে হারিয়েছে।
রবিবার এক বিবৃতিতে হুতি গোষ্ঠী বলেছে, হামলার শিকার তাদের নৌকাগুলো ‘নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠা এবং সামুদ্রিক নৌচলাচল রক্ষা করার’ লক্ষ্যে কাজ করছিল।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, লোহিত সাগরের মধ্যদিয়ে ইসরায়েলি বা অন্য জাহাজগুলোর দখলকৃত ফিলিস্তিনের বন্দরগুলোতে যাওয়া ঠেকাতে নৌকাগুলো তাদের মানবিক ও নৈতিক দায়িত্ব পালন করছে।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর সেন্ট্রাল কমান্ড (সেন্টকম) জানিয়েছে, লোহিত সাগরে চারটি জাহাজে হামলার পর হুতিরা নতুন করে আরও একটি জাহাজে হামলা চালানোর জন্য প্রস্তুতি নেয়। এ সময় নৌবাহিনী হেলিকপ্টার থেকে তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এতে হুতিদের তিনটি ছোট নৌকা ডুবে যায়।
সামাজিক মাধ্যম এক্স-এ এক বিবৃতিতে সেন্টকম জানিয়েছে, রবিবার চারটি ছোট নৌকা ইয়েমেনের হুতি নিয়ন্ত্রিত অঞ্চল থেকে এসে মারেস্ক হাংঝু নামে একটি জাহাজের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করে। নৌকাগুলো জাহাজের কাছাকাছি চলে আসলে সাহায্য চান জাহাজের নাবিক। সঙ্গে সঙ্গেই মার্কিন বিমানবাহী রণতরী ইউএসএস ইসেনহোয়ার এবং ইউএসএস গ্রেভলি জাহাজটিকে সাহায্যের জন্য সাড়া দেয় এবং হেলিকপ্টার পাঠায়।
সেন্টকমের দাবি, মার্কিন নৌবাহিনীর হেলিকপ্টার সেখানে উপস্থিত হলে ওই নৌকাগুলো থেকে হেলিকপ্টার লক্ষ্য করে গুলি ছোড়া হয়। তখন আত্মরক্ষার্থে পাল্টা হামলা চালানো হয়। একপর্যায়ে ওই হেলিকপ্টার থেকে গুলি চালিয়ে তিনটি নৌকা ডুবিয়ে দেওয়া হয়। ওই সময় নৌকার ক্রুরাও নিহত হন। অপর একটি নৌকা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।
প্রসঙ্গত, ৭ অক্টোবর থেকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে হামাসকে সমর্থন জানিয়ে ইয়েমেন উপকূলে গুরুত্বপূর্ণ শিপিং লেনের জাহাজগুলোতে ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে ইরান-সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীরা। এতে লোহিত সাগরের এ রুটে চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে ম্যার্স্ক, সিএমএ সিজিএমেসহ বড় বড় শিপিং প্রতিষ্ঠানগুলো।
এরপরই হুতিদের আক্রমণ থেকে লোহিত সাগরের এ সমুদ্র পথকে নিরাপদ রাখতে যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, ইতালি, কানাডাসহ ১০টি দেশ নিয়ে সামুদ্রিক জোট গঠন করেছ যুক্তরাষ্ট্র। নতুন করে আরও ১০টি দেশসহ মোট ২০টি দেশের এ জোট হুতির আক্রমণ ঠেকাতে যুক্তরাষ্ট্রের পাশে থাকার ঘোষণা দিয়েছে। ইতোমধ্যে মার্কিন নেতৃত্বাধীন জোটের কয়েকটি যুদ্ধ জাহাজ টহল শুরু করেছে।
তবে ইরান-সমর্থিত হুতি গোষ্ঠী জানিয়েছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের হামলা বন্ধ না হলে তাদের এ আক্রমণ অব্যাহত থাকবে।
(ঢাকাটাইমস/০১জানুয়ারি/এমআর)

মন্তব্য করুন