বেইলি রোডে ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টারে আগুনের সূত্রপাত নিয়ে যা জানা গেল 

নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা টাইমস
  প্রকাশিত : ০৫ মে ২০২৫, ২৩:০১| আপডেট : ০৫ মে ২০২৫, ২৩:০৩
অ- অ+

রাজধানীর বেইলি রোডে অবস্থিত বহুতল ভবন ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টার শপিং মলের বেজমেন্টে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের মোট ৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে গিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। প্রাথমিকভাবে কোনও হতাহতের ঘটনা না পাওয়া গেলেও নারী-শিশুসহ ১৮ জনকে উদ্ধারের কথা জানায় ফায়ার সার্ভিস। তাদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৯ জন মহিলা ও শিশু ২ জন।

ফায়ার সার্ভিস ও ভবনের নিরাপত্তাকর্মী সূত্রে জানা গেছে, ক্যাপিটাল সিরাজ সেন্টারের বেজমেন্টে গাড়ির গ্যারেজ থাকার কথা কিন্তু সেখানে ছিল সিলিন্ডার ও জেনারেটর। ধারণা করা হচ্ছে জেনারেটর থেকে আগুনের সূত্রপাত।

সোমবার সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে আগুন লাগার সংবাদ পেয়ে আগুন নির্বাপণের কাজ করে ফায়ার সার্ভিস। রাত ৭টা ৪৭ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম জানান।

আগুন নিয়ন্ত্রণ আসার পর সংবাদ সম্মেলনে ফায়ার সার্ভিসের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেইনস) লে. কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, আমরা এক ঘণ্টার মধ্যে রাত ৭টা ৪৭ মিনিটের দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনত সক্ষম হই। ভবনটিতে শপিংমল, রেস্টুরেন্ট, হোটেল, অফিস ও আবাসিক ছিল। অনেকে হুইল চেয়ারেও রেস্টুরেন্ট কিংবা উপরে গিয়েছিলেন আমরা দেখেছি। প্রায় ২০০ কাছাকাছি পরিবারের সদস্য ছিল। প্রায় একশোর কাছাকাছি মানুষকে আমরা উপর থেকে নামিয়ে নিরাপদে নিয়ে আসি।

ফায়ার সার্ভিসের পানিবাহী গাড়ির পানি শেষ হয়ে যাচ্ছিল উল্লেখ করে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, পাশেই বেইলি রোডের একটি পুকুর থাকায় পুকুরের পানি নিয়ে আমরা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনি।

অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রাথমিকভাবে বেজমেন্ট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে মনে হয়েছে। তবে তদন্তের পর আগুনের মূল কারণ জানা যাবে।

তিনি আরও জানান, বেজমেন্টে গাড়ির গ্যারেজ হওয়ার কথা কিন্তু আমরা সিলিন্ডার ও জেনারেটর দেখেছি। জেনারেটরের পয়েন্ট থেকে আগুনের সূত্রপাতটা বেশি দেখেছি। অতিরিক্ত ধোঁয়া ছিল, ধোঁয়ার কারণে শুরুতে আমাদের কাজ করতে বেগ পেতে হয়েছে। ৫-৬ তলা পর্যন্ত ধোঁয়া ছিল। ধারণা করা হচ্ছে জেনারেটর থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে।

উদ্ধারকাজে সেনাবাহিনী-পুলিশ-র‍্যাবের সহায়তা

আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিস ছাড়াও কাজ করেছে সেনাবাহিনী, পুলিশ, এনএসআই ও র‍্যাব। ভবনে তখন প্রায় ২০০ পরিবারের সদস্য অবস্থান করছিলেন। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা প্রায় ১০০ জনকে সেফ জোনে সরিয়ে আনেন। পানির সংকট দেখা দিলে পাশে থাকা একটি পুকুর থেকে পানি সংগ্রহ করে আগুন নেভানো হয়।

নিরাপত্তা ব্যবস্থা ও নিয়ম ভঙ্গের অভিযোগ

ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেছেন, ভবনের বেজমেন্টে অনুমোদনহীনভাবে রাখা হয়েছিল দাহ্য পদার্থ। তাছাড়া নকশা বহির্ভূতভাবে লিফট স্থাপনের কাজ চলছিল। ওয়েল্ডিংয়ের সময় থেকেই আগুনের সূত্রপাত হতে পারে বলে কেউ কেউ ধারণা করছেন।

চোখে পানি, বাঁচার আকুতি

সন্ধ্যার মাগরিবের নামাজ চলাকালীন সময়েই আগুনের ঘটনা ঘটে। নামাজ শেষে মুসল্লিরা ধোঁয়া দেখে আতঙ্কে ছোটাছুটি শুরু করেন। নারী-শিশুর চিৎকার, কান্না আর দৌঁড়াদৌড়িতে পুরো মার্কেট এলাকা তখন যেন মৃত্যুপুরী। ঘটনার সময় ভবনের পশ্চিম পাশের কাঁচ ভেঙে মানুষ বের হতে দেখা যায়।

(ঢাকাটাইমস/০৫মে/এলএম/এমআর)

google news ঢাকা টাইমস অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

মন্তব্য করুন

শীর্ষ খবর সর্বশেষ জনপ্রিয়
সব খবর
হিরো আলমের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগে মামলা
প্যাথলজিক্যাল নমুনা বিদেশে পাঠাতে অনুমতি লাগবে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের
শিগগিরই বাংলাদেশ সফর করতে পারেন জর্জিয়া মেলোনি: ইতালির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মাত্তেও
২৫ মার্চ কালো রাতকে হার মানিয়েছে শাপলা গণহত্যা: রাশেদ প্রধান
বিশেষ প্রতিবেদন তথ্যপ্রযুক্তি বিনোদন খেলাধুলা