হিন্দু বন্দিদের জন্য শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা
‘কারাগারে আড়াইহাজার বার কোরআন খতম হয়েছে’

বিভিন্ন অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত হয়ে কারাগারে আসা বন্দিরাও সমাজের অংশ, আর তাদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যাওয়ার জন্য প্রয়োজন সঠিক দিকনির্দেশনা ও সহায়তা— এমন মন্তব্য করেছেন ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন। একই সঙ্গে হিন্দু ধর্মাবলম্বী বন্দিদের জন্য ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা করছে সরকার।
বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ কথা বলেন।
তথ্য বলছে, ২০১৮ সালে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে ইসলামিক ফাউন্ডেশন কর্তৃক কোরআন শিক্ষায় মক্তব চালু হয়। বর্তমানে ১২টি মক্তব চালু রয়েছে। এ পর্যন্ত মোট ২ হাজার ৫০০ বার কুরআন খতম হয়েছে। চলতি বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ৮ হাজার ২২২ জন বন্দি আরবি শিক্ষা এবং ২ হাজার ৪৭০ জন কুরআন শিক্ষা গ্রহণ করেছেন।
ধর্ম বিষয়ক উপদেষ্টা ড. আ ফ ম খালিদ হোসেন বলেন, ‘কারাগারে যারা আসেন, তারা যেন পুনরায় অপরাধে না জড়ান, সেটি নিশ্চিত করতে হবে। সংশোধনের সুযোগ থাকা উচিত। জেলখানায় বন্দিদের স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনতে প্রশিক্ষণ, নৈতিক শিক্ষা ও ধর্মীয় দিকনির্দেশনার ব্যবস্থা রাখতে হবে।’
তিনি জানান, ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আওতায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের একজন শিক্ষক বর্তমানে কারাগারে বন্দিদের ধর্মীয় শিক্ষা দিচ্ছেন। আরও শিক্ষকের প্রয়োজন হলে নিযুক্ত করা হবে। পাশাপাশি হিন্দু ধর্মাবলম্বী বন্দিদের জন্যও ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা রয়েছে।
কারা অভ্যন্তরে ধর্মীয় উপাসনালয় নির্মাণ সম্ভব না হলেও ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে ধর্মচর্চার সুযোগ তৈরি করার আহ্বান জানান উপদেষ্টা। এ লক্ষ্যে জায়নামাজ, ধর্মীয় বইপত্র, কার্পেটসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ ইসলামিক ফাউন্ডেশন থেকে সরবরাহের প্রতিশ্রুতি দেন তিনি।
পরিদর্শনের সময় তিনি কারাগারের কেন্দ্রীয় মক্তব, হিফজ বিভাগ, লাইব্রেরি, শরীরচর্চা ও মননচর্চাকেন্দ্র, কম্পিউটার প্রশিক্ষণ সেন্টার, রন্ধনশালা ও অন্যান্য কার্যক্রম ঘুরে দেখেন এবং বন্দিদের সঙ্গে কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হচ্ছে বন্দিরা যেন কারাগার থেকে বের হয়ে নতুন আলোর পথে হাঁটতে পারে। ধর্মীয় অনুশীলন, নৈতিকতা ও শিক্ষার মাধ্যমে তাদের মানসিক পরিবর্তন ঘটানো সম্ভব।’
পরিদর্শনের সময় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক আঃ ছালাম খান, আইজি (প্রিজন) সৈয়দ মো. মোতাহের হোসেন, এআইজি (প্রিজন) জাহাঙ্গীর কবির ও সিনিয়র জেল সুপার সুরাইয়া আক্তার উপস্থিত ছিলেন।

মন্তব্য করুন